সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

বাংলার ইতিহাস

"মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা। তোমার কোলে, তোমার বোলে, কতই শান্তি ভালবাসা।" রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার পাওয়া উপলক্ষে ১৯১৩ সালে বাঙালি এবং বাংলা ভাষার প্রতি গভীর প্রেম ও শ্রদ্ধা নিবেদন করে এই গানটি রচনা করেছিলেন অতুল প্রসাদ সেন। তিনি হয়তো কখনো কল্পনাও করেননি তার রচনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি দেশ প্রথমে ভাষা আন্দোলন ও তারপর মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে যাবে। ভাষাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ভাবে স্বাধীনতা আন্দোলনে যুক্ত হওয়া ও পরে স্বাধীনতা পাওয়ার দৃষ্টান্ত মানব সভ্যতার ইতিহাসে কমই আছে। বাঙালিরা এর অন্যতম পথিকৃৎ। হবে নাই বা কেন? মাতৃভাষার চেয়ে সুমধুর আর কি হতে পারে? তবে যাইহোক, বাংলা ভাষার আজকের যে রূপ আমরা দেখতে পাই তার বহুলাংশই আধুনিক কালে সৃষ্টি। বিদেশি সাহেব ও দেশীয় পণ্ডিতের কখনো সচেতন, কখনো অতিসচেতন, আবার কখনো অসচেতন কার্যক্রমের মধ্য দিয়েই আজকের বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে।
১৯৮৪ সালে সত্যজিৎ রায়কে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় যখন সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রীতে ভূষিত করে, সে সভায় তিনি বলেন “এখন এই উপমহাদেশে এমন একটা সময় এসেছে যেখানে চলচ্চিত্র পাঠ একাডেমিক স্তরে কেবলমাত্র চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য নয়, চলচ্চিত্রবিদ্যার জন্য, যেমনভাবে আমরা সাহিত্য নিয়ে পড়ি, তেমনভাবে সিনেমা নিয়ে যেন পড়তে পারে। এই রকম ভাবনা থেকেই ইউ.জি.সি., যারা আমাদের পড়াশোনার বিষয়গুলি পরিচালনা করে তারা নবম পরিকল্পনায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ফিল্ম স্টাডিজ’ শুরু করেন। এই পঠনের সূচনায় যে তিনজন প্রধান অধ্যাপক ছিলেন, তাদের মধ্যে আমি একজন। যাদবপুরে এরকম দুটো বিষয় শুরু হয়েছিল, যার একটি হল ‘কম্পারেটিভ লিটারেচার’ বা ‘তুলনামূলক সাহিত্য’ - বুদ্ধদেব বসুর নেতৃত্বে এবং দ্বিতীয়টি হল ‘ফিল্ম স্টাডিজ’ বা ‘চলচ্চিত্রবিদ্যা’।