সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

সাংস্কৃতিক ইতিহাস

বর্তমান উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশের বেশ কয়েকটি জেলা জুড়ে বুন্দেলখণ্ডের ভৌগোলিক এলাকার ব্যাপ্তি। বুন্দেলখণ্ডের পাহাড় আর উপত্যকা ঘেরা ভূখণ্ডে দুই নিম্নবর্গীয় বীর আল্হা আর উদলের যশোগাথা সম্ভবত অন্ত-মধ্যযুগের সূচনাকাল থেকেই লোকসংস্কৃতির অঙ্গীভূত। সেই সময় থেকে আজ পর্যন্ত এই লোকগাথার ২৩টি সমরাঙ্গনে ৫২টি যুদ্ধের আবেগদীপ্ত বর্ণনা এই অঞ্চলের মূলত কৃষিজীবী সমাজের কিশোর আর তরুণদের যুদ্ধে অংশ নিয়ে বীরত্ব প্রদর্শনে উদ্বুদ্ধ করে চলেছে। প্রতি বছর শ্রাবণ মাসে আকাশ যখন মেঘে ঢেকে যায়, ঢোলক, চিমটা আর মঞ্জিরার বাদ্যের সঙ্গে বুন্দেলখণ্ডের গ্রামে গ্রামে আল্হাখণ্ডের যুদ্ধগাথার হুংকারে মুখরিত হয়ে ওঠে মাটি আর পাহাড়। বীররসাত্মক আল্হাখণ্ডের বাহান্নটি যুদ্ধগাথার মধ্যে বুন্দেলখণ্ডের তরুণ হৃদয় সবচেয়ে বেশি আলোড়িত হয় যখন শুরু হয় আল্হার নিজের বিবাহের জন্য ন্যায়নাগড়ের লড়াইয়ের বাখান।
রাশিয়ায় ষোড়শ, এমনকি সপ্তদশ শতকেও বই বলতে হাতে লেখা বইয়ের কথাই ভাবা হতো। ষোড়শ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে রাশিয়ার গুটিকয়েক মানুষ অনেক দ্বিধা দ্বন্দ্বের মধ্যে দিয়ে হাতে লেখা বই থেকে ছাপানো বই গ্রহণ করেছিলেন। দিনটা ১৫৬৪ সালের ১৯ এপ্রিল, মস্কো প্রেস হাউজ থেকে প্রথম বই প্রকাশ পায়, তাই এই দিনটিকেই রাশিয়ার মুদ্রণ যুগের সূচনার দিন বলে ধরে নেওয়া হয় (আর কিছুদিন পরেই রাশিয়ায় ছাপার ৪৬০ বছর পালন করা হবে)। প্রথম ছাপা এই বইটি ছিল ধর্ম বিষয়ক। এটি ছাপিয়েছিলেন সে যুগের বিখ্যাত দুই বন্ধু, ইভান ফ্যুদরফ ও পিটর মিসতিলভেস্‌, এদেরকে রাশিয়ার মুদ্রণ জগতের প্রতীক বলে মনে করা হয় এবং তাঁদের তুলনা করা যেতে পারে একমাত্র ফ্রান্সিস্ স্কারিনা’র সঙ্গে; যাকে পূর্ব ইউরোপের ছাপাখানার জনক বলা হয়। বলতে গেলে সেই সময় হাতে লেখা বইয়ের ব্যবসা এতটাই জমজমাট ও জনপ্রিয় ছিল যে, ছাপা বইয়ের প্রতি আগ্রহ তৈরি হওয়াটা খুব কঠিন ছিল।
আমার জন্ম বেলারুশে, ডাক্তারদের একটি পরিবারে। আমার বাবা-মা আমাদের রেখে যেতেন একজন আয়ার যত্নে, যিনি বেলারুশের গ্রাম থেকে শহরে এসেছিলেন। আয়া বেলারুশের রূপকথার গল্প বলতেন, তাকে বিরক্ত করলে চিৎকার করতেন ‘পেরুন তোকে ধরে নিয়ে যাবে’! পেরুনকে (প্রাক-খ্রিস্টিয় পাগান স্লাভদের মূল দেবতা) তিনি স্বর্গে বসবাসকারী এবং ঝড়, বজ্রপাত আর বজ্রপাতের নিয়ন্ত্রক বলতেন। বিজ্ঞান পেরুন সম্পর্কে আমার ছেলেবেলার আয়ার চেয়ে সামান্য বেশি জানে। এমনকি আমরা যে কয়েকটি তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছি তা পৌরাণিক কাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, বরং তাঁর সঙ্গে যুক্ত পৌত্তলিক দেবতাদের সম্পর্কিত; যেমন বলি, মূর্তি, শপথ, নাম সংকীর্তন ইত্যাদি। (‘পেরুনের পুনরুত্থান, পূর্ব স্লাভিক পৌত্তলিকতার পুনর্গঠনের জন্য’ বইটির১ ভূমিকা, ২০০৪)