সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

লেখক: শিবানন্দ পাল

শিবানন্দ পাল
লেখক বিভিন্ন বিষয়ে নানা পত্র-পত্রিকা এবং ওয়েব ম্যাগাজিনে লিখে থাকেন। লেখকের ৩০টি পুস্তক কলকাতার বিখ্যাত প্রকাশন সংস্থাগুলি প্রকাশ করেছে। যুগ্মভাবে লেখকের আরও কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়েছে।
৩০ জুন কাছে এলেই হুল দিবসের কথা মনে আসে। ‘হুল’ শব্দের অর্থ বিদ্রোহ। এই কথাটা আমরা প্রথম জানতে পারি বিদ্রোহের সমসময়কার ইতিহাসকার দিগম্বর চক্রবর্তীর লেখায়। তিনিই সাঁওতাল বিদ্রোহ সম্পর্কে প্রথম ভারতীয় ইতিহাসকার। দিগম্বর চক্রবর্তী (১৮৪৯-১৯১৩) লিখেছেন, 'হিস্ট্রি অব দি সান্থাল হুল'। রচনাকাল ১৮৯৫-৯৬। এই ব‌ইটি প্রথম মুদ্রিত ও প্রকাশিত হয় ১৯৮৮ সালে। দিগম্বর চক্রবর্তী ছিলেন পাকুড় কোর্টের আইনজীবী। বিদ্রোহের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা তাঁর না থাকলেও যাদের ওই অভিজ্ঞতা ছিল তাদের মুখে তিনি ঘটনা শুনেছিলেন। যেমন সিধু কানুর বাবা চুনু মুর্মুর মুখে তিনি শুনেছেন। যে পাকুড়ের সুদখোর মহাজন দীনদয়াল রায়কে শ্মশান কালীতলায় বলি দিয়েছিল সেই জগন্নাথ সর্দারের মুখ থেকে শুনেছেন। শুনেছেন দীনদয়ালের বলির ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শিনী ভগিনী বিমলা দেবীর মুখে। প্রচলিত অর্থে দিগম্বর চক্রবর্তী ঐতিহাসিক ছিলেন না। কিন্তু তাঁর বর্ণনা ইতিহাসের উপাদান। তিনি তাঁর গ্রন্থে 'হুল' শব্দের ব্যবহার‌ও করেছেন ঐতিহাসিক ভাবে। বিদ্রোহীদের প্রতি তাঁর ছিল সহানুভূতির স্পর্শ। 'হুল' শব্দের এমন মর্যাদাপূর্ণ ব্যবহার এবং স্বীকৃতি তাঁর আগে কেউ করেননি।