সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

জালিয়ান‌ওয়ালাবাগ: পদত্যাগে দেরী কেন?

জালিয়ান‌ওয়ালাবাগ: পদত্যাগে দেরী কেন?

শিবানন্দ পাল

আগস্ট ২২, ২০২০ ১০৯১ 15

জালিয়ান‌ওয়ালাবাগ হত্যা কাণ্ড সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশি জানি। রবীন্দ্রনাথ নাইটহুড ত্যাগ করেছিলেন জানা। পুরনো ব‌ই নিয়ে কাজ করতে করতে স্টেটসম্যান পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটি নজরে এলো। ১৯১৯ সালের ৩ জুন স্টেটসম্যান পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথের চিঠিটি প্রকাশিত হয়। স্টেটসম্যান তখন ছিল ইংরেজ মালিকানাধীন কাগজ। জালিয়ান‌ওয়ালাবাগে হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল। আর রবীন্দ্রনাথ নাইটহুড ত্যাগ করেছিলেন মে মাসের ৩১ তারিখে চিঠি দিয়ে। 

কেন এত দেরী?

বিভিন্ন ব‌ই এবং পত্র পত্রিকায় খোঁজখবর করতে গিয়ে জানতে পারলাম জালিয়ান‌ওয়ালাবাগের ঘটনা সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ চেপে রাখতে চেয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের পরদিন ১৪ই এপ্রিল, ১৯১৯ পাঞ্জাবে সামরিক শাসন জারি করা হয়, গুজরানওয়ালায় বিমান থেকে বোমা বর্ষণ করা হয়। বিদ্রোহীদের ওপর অত্যাচার চলতে থাকে। প্রকাশ্যে চাবুক মারা, হামাগুড়ি দিয়ে রাস্তা পার করানো, রৌদ্রে দাঁড় করিয়ে রাখা, ইউরোপীয় দেখলেই সেলাম ঠুকতে বাধ্য করানো ইত্যাদি সব চলছিল। সংবাদ সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকায় অমৃতসর শহর দেশের বাকি অংশ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। 

সংবাদপত্রে দিল্লিতে পুলিশি অত্যাচারের খবর পড়লেও পাঞ্জাবে সংবাদপত্রের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপিত হওয়ায় রবীন্দ্রনাথ কোন খবর পাচ্ছিলেন না। অবশ্য তাঁর সন্দেহ হয়েছিল সেখানে ভয়ানক কিছু নিশ্চয় ঘটেছে! রবীন্দ্রনাথ তখন শান্তিনিকেতনে ছিলেন।

১৮ই এপ্রিল বিভিন্ন স্থানে উত্তেজিত জনতার অগ্নিসংযোগ তাঁর অহিংস আদর্শের পরিপন্থী বলে গান্ধীজি রাওলাট সত্যাগ্রহ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন। বলেন এটা তাঁর হিমালয়-প্রমাণ ভুল হয়েছিল। স্বাভাবিকভাবে আন্দোলনকারীরা বিমর্ষ হয়ে পড়ে। 

অথচ জালিয়ান‌ওয়ালাবাগে নৃশংস ঘটনার পর সমগ্র ভারতবর্ষ চুপ, রবীন্দ্রনাথ ভাবতে পারছিলেন না। সমস্ত ঘটনা কবিকে ব্যথিত করে তুলেছিল। কবি সে-সময় আবার গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। সারাদিন শুয়ে থাকেন, তাঁর লেখা বন্ধ হয়েছিল; মন ছিল ভারাক্রান্ত। 

প্রশান্তচন্দ্র মহালনবিশ ডাক্তার নীলরতন সরকারকে কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতনে ডেকে নিয়ে এসে কবির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। পাঞ্জাবের ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রেক্ষিতে দেশের একজন মানুষও প্রতিবাদে সামিল হবে না এটা কবি মেনে নিতে পারছিলেন না।

রবীন্দ্রনাথ অ্যান্ড্রুজ সাহেবকে ডেকে পরামর্শ করেন। স্থির হয়, অ্যান্ড্রুজ গান্ধীজির কাছে যাবেন একটি প্রস্তাব নিয়ে। প্রস্তাবটি হল রবীন্দ্রনাথ দিল্লি যাবেন। সেখান থেকে গান্ধীজি এবং রবীন্দ্রনাথ দুজনে একসাথে পাঞ্জাবে ঢোকার চেষ্টা করবেন। পুলিশ গ্রেফতার করলে করবে। এটাই হবে নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদ। 

অ্যান্ড্রুজ সাহেব অসুস্থ শরীর নিয়ে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। রবীন্দ্রনাথ সুশীল রুদ্রের চিঠিতে দিল্লির আরও কিছু খবর পেয়ে ২৪ এপ্রিল অ্যান্ড্রুজ সাহেবকে একটি চিঠি লিখলেন। এতেও সন্তুষ্ট না হয়ে উদ্বিগ্ন কবি ব্রিটিশ সরকারের বিচার ও সততা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে এক‌ই দিনে দ্বিতীয় আর একটি চিঠি লিখলেন অ্যান্ড্রুজ সাহেবকেই। পরের দিন ব্রিটিশের সত্য গোপন আচরণকে ধিক্কার দিয়ে আবার একটি চিঠি লিখলেন অ্যান্ড্রুজ সাহেবকে। অ্যান্ড্রুজ সাহেব তখন শান্তিনিকেতনের বাইরে দিল্লির পথে।

উদ্বিগ্ন কবি তাতেও থাকতে না পেরে ২৬শে এপ্রিল মডার্ন রিভিউ পত্রিকার সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়কে একটি চিঠিতে লিখলেন — “এন্ডুজ দিল্লিতে। সেখান থেকে দুই একটা চিঠি যা লিখেচেন তাতে মনটাকে উত্তপ্ত করেছে। আমার মনের তাপমানযন্ত্র আমার কলম। সুতরাং তার ভাষাটা চড়ে উঠেচে। বর্তমান চিঠিখানি আজ লিখে মনে করলুম আপনার সম্পাদকী দরবারে তার নকল পাঠাই। এটা বর্ত্তমান দুর্য্যোগের দিনে প্রকাশযোগ্য হবে কিনা জানিনে। আপনি যা ভাল মনে করবেন।” (মূল বানান আপরিবর্তিত) চিঠিটি যে খুব দ্রুত লেখা হয়েছিল এবং কবি চিত্ত যে ভীষণ উদ্বিগ্ন ছিল, চিঠির ভাষায় তা বেশ বোঝা যায়।

মডার্ন রিভিউ পত্রিকার সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় ‘Sir Rabindranath Tagore’s letter to a friend’ শিরোনামে সেই চিঠি ‘Notes’ [The Modern Review May] – সংখ্যায় সেটি প্রকাশ করে দেন। এখানে তার অংশবিশেষ উল্লেখ হল- “I believe our outcry against the wrongs inflicted upon us by our governing power is becoming more vehement than is good for us. We must not claim sympathy or kind treatment with too great an insistence and intensity.”

অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথের ২৬ এপ্রিলের চিঠি ‘মডার্ন রিভিউ’ প্রকাশ করে মে সংখ্যায়। সংখ্যাটি বাস্তবে মে মাসের কোন দিনে প্রকাশিত হয় জানার উপায় নেই। ওদিকে অ্যান্ড্রুজ সাহেব দিল্লিতে গান্ধীজিকে না পেয়ে পাঞ্জাবে ঢুকতে গিয়েছিলেন, কিন্তু পুলিশ তাঁকে রাস্তায় আটকায়। 

পুলিশ অ্যান্ড্রুজ সাহেবকে পরদিন বিকেলে দিল্লির ট্রেনে তুলে দেয়। তখন তিনি গান্ধীজির সঙ্গে দেখা করতে বোম্বাই চলে যান। ১৬ মে গান্ধীজির সঙ্গেই বোম্বাই থেকে তিনি আমেদাবাদে ফেরেন। গান্ধীজিকে কবির প্রস্তাব বিশদভাবে জানালেন। গান্ধীজি স্পষ্ট উত্তর দেন, “I do not … embarrass the government now.”

হয়তো এখবর কোনও সূত্রে পেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ।  ২২ মে তিনি উদ্বিগ্ন চিত্তে শান্তিনিকেতন থেকে কলকাতায় ফিরে আসেন। ২৯ মে অ্যান্ড্রুজ সাহেব‌ও কলকাতায় ফেরেন। দুজনে মিলে পরামর্শ হয়। কবি শুনলেন, রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় উত্তেজিত দেশবাসীর আচরণে গান্ধীজি নাকি খুবই বিরক্ত, জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড নিয়ে তিনি মোটেও মাথা ঘামাতে রাজি নন। 

সম্ভবত ৩০ মে রবীন্দ্রনাথ কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা চিত্তরঞ্জন দাশের কাছে নিজে উপস্থিত হলেন। তাঁকে বললেন প্রতিবাদ সভা আহ্বান করতে। বললেন তিনি নিজেই সেই সভায় সভাপতি হতে রাজি। চিত্তরঞ্জন দাশ জানতে চাইলেন আর কে কে বক্তৃতা দেবেন? রবীন্দ্রনাথ সেটা তাঁকেই ঠিক করতে বললেন। কিন্তু চিত্তরঞ্জন বললেন, আপনি একা যখন বক্তৃতা দেবেন, ‘আপনিই সভাপতি, তখন সবচেয়ে ভালো হয় শুধু আপনার নামে সভা-ডাকা।’

রবীন্দ্রনাথ চুপচাপ জোড়াসাঁকো ফিরে আসেন। দেড়মাস অতিক্রম হয়ে গেছে … শুধু সময় নষ্ট … কেউ মুখ খুলতে চায় না … দেশোদ্ধারের দায় যেন একমাত্র তাঁর‌ই ঘাড়ে। তারপর ভাবলেন একাই যখন চলতে হবে ঘটা করে সভা ডেকে লোক জড়ো করার দরকার কী! নিজের কথা নিজের মতো করে বলাই ভালো। “নাইটহুড” সম্মানটা ওরা আমাকে দিয়েছিল, এটা ফিরিয়ে দেওয়ার উপলক্ষ্য করে আমার কথাটা স্পষ্ট বলে দেব‌। 

সারা রাত জেগে লিখলেন সেই ঐতিহাসিক চিঠি। পরদিন সাত সকালে অ্যান্ড্রুজ সাহেব হাজির হলেন জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে। চিঠির ফাইনাল কপি লেখা শেষ হলে কবি পড়তে দিলেন অ্যান্ড্রুজকে। অ্যান্ড্রুজ চিঠিখানি পড়ে চিঠির ভাষা আর একটু মোলায়েম করে দেবার অনুরোধ করলেন কবিকে। রবীন্দ্রনাথ তাঁর দিকে এমনভাবে তাকিয়েছিলেন, অ্যান্ড্রুজ সাহেব রবীন্দ্রনাথের চোখে সেইরকম দৃষ্টি আর কোনোদিন দেখেননি। অ্যান্ড্রুজ লিখেছেন “Such a look as I had never seen in the eyes of Gurudev before or after.” [১]

৩১ মে ১৯১৯ বড়লাট চেমসফোর্ডকে লেখা সেই অবিস্মরণীয় চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন – “হতভাগ্য পাঞ্জাবীদিগকে যে রাজদণ্ডে দণ্ডিত করা হইয়াছে, তাহার অপরিমিত কঠোরতা ও সেই দণ্ডপ্রয়োগবিধির বিশেষত্ব, আমাদের মতে কয়েকটি আধুনিক ও পূর্বতন দৃষ্টান্ত বাদে সকল সভ্য শাসনতন্ত্রের ইতিহাসে তুলনাহীন। … অন্ততঃ আমি নিজের সম্বন্ধে এই কথা বলিতে পারি যে, আমার যে সকল স্বদেশবাসী তাহাদের অকিঞ্চিৎকরতার লাঞ্ছনায় মনুষ্যের অযোগ্য সম্মান সহ্য করিবার অধিকারী বলিয়া গণ্য হয়, নিজের সমস্ত বিশেষ সম্মান-চিহ্ন বর্জন করিয়া আমি তাহাদেরই পার্শ্বে নামিয়া দাঁড়াইতে ইচ্ছা করি। রাজাধিরাজ ভারতেশ্বর আমাকে ‘নাইট’ উপাধি দিয়া সম্মানিত করিয়াছেন, সেই উপাধি পূর্বতন যে রাজপ্রতিনিধির হস্ত হইতে গ্রহণ করিয়াছিলাম তাঁহার উদার-চিত্ততার প্রতি চিরদিন আমার পরম শ্রদ্ধা আছে। উপরে বিবৃত কারণবশতঃ বড় দুঃখেই আমি যথোচিত বিনয়ের সহিত শ্রীলশ্রীযুক্তের নিকট অদ্য এই উপরোধ উপস্থাপিত করিতে বাধ্য হইয়াছি যে, সেই ‘নাইট’ পদবী হইতে আমাকে নিস্কৃতিদান করিবার ব্যবস্থা করা হয়।” (রবীন্দ্রনাথ কৃত বাংলা অনুবাদ)

৩ জুন, ১৯১৯ কলকাতার ইংরেজি ‘স্টেটসম্যান’ পত্রিকায় ‘Honour Unwanted’ শিরোনামে প্রকাশিত হয় রবীন্দ্রনাথের নাইটহুড সম্মান ত্যাগের পত্রটি।[২] অন্যান্য ইংরেজি কাগজগুলো একই খবর ছেপেছিল। ভাইসরয়কে লেখা ওই পত্রের অনুবাদ দৈনিক বসুমতী সহ অন্যান্য বাংলা সংবাদপত্র ২ জুন প্রকাশ করেছিল। পত্রের বঙ্গানুবাদ এবং রবীন্দ্রনাথের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তৎকালীন পত্রপত্রিকায় কিছু টীকা টিপ্পনিও বেশ কিছুদিন ধরে সংবাদ পত্রের পাতায় চলেছিল। রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের কন্যা সীতাদেবী লিখেছেন, রবীন্দ্রনাথ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। বলেছিলেন, “আমাকে এমন অপমান কেউ কখনও করে নি”। 

রবীন্দ্রনাথ জানতেন নাইটহুড ত্যাগের চিঠি রাজদ্রোহ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। তার জন্য তিনি গ্রেপ্তার‌ও হতে পারেন। তিনি গান্ধীজির সঙ্গে পাঞ্জাবে যেতে চেয়েছিলেন। সেখানেও গ্রেপ্তার হ‌ওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তিনি পেশাদার রাজনীতিবিদ ছিলেন না। তবু নিজের সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। 

কেউ কেউ তারপরেও ভেবেছিলেন রাজার দেওয়া উপাধি ফেরত দেওয়ার মতো শিরদাঁড়া বোধহয় কবির নেই। দু একজন প্রকাশ্যে প্রশংসা করলেও বাকিরা প্রতিক্রিয়া জানাতে ভয় পেয়েছিলেন। তবে ব্যক্তিগত চিঠিতে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন অনেকেই। সাম্রাজ্যবাদী শাসকের মুখে সেদিন চুনকালি লেগেছিল, সেজন্য সরকার পক্ষে কোনো উচ্চবাচ্য করার সাহস দেখা যায়নি। কিন্তু গান্ধীজি বলেছিলেন- “The Punjab horrors have produce a burning letter from the poet. I personally think it is premature. But he cannot be blamed for it.” 

টীকা

১ অমল হোম, পুরুষোত্তম রবীন্দ্রনাথ, এম্‌ সি সরকার অ্যাণ্ড সন্স লিমিটেড, কলকাতা, ১৩৬২ (বং) পৃঃ ৭৯

২ ‘স্টেটসম্যান’ পত্রিকায় ‘Honour Unwanted’ শিরোনামে প্রকাশিত রবীন্দ্রনাথের নাইটহুড সম্মান ত্যাগের পত্রটি-

“SIR, Rabindranath Tagore informs us that he has sent the following letter to the Viceroy:

Your Excellency, The enormity of the measures taken by the Government in the Punjab for quelling some local disturbances has with a rude shock revealed to our minds the helplessness of our position as British subjects in India. The disproportionate severity of the punishments inflicted upon the unfortunate people and the methods of carrying them out, we are convinced are without parallel in the history of civilised governments, barring some conspicuous exceptions, recent and remote. Considering that such treatment has been meted out to a population, disarmed and resourceless, by a power which has the most terribly efficient organisation for destruction of human lives, we must strongly assert that it can claim no political expediency, far less moral justification.

The accounts of insults and sufferings undergone by our brothers in the Punjab have trickled through the gagged silence, reaching through every corner in India, and the universal agony of indignation roused in the hearts of our people has been ignored by our rulers-possibly congratulating themselves for importing what they imagine as salutary Lessons. This callousness has been praised by most of the Anglo-Indian papers, which have in some cases gone to the brutal length of making fun of our sufferings, without receiving the least check from the same authority, relentlessly careful in somethering every cry of pain and expression of judgement from the organs representing the sufferers.

Knowing that our appeals have been in vain and that the passion of vengeance is blinding the noble vision of statesmanship in our Government, which could so easily afford to be magananimous as befitting its physical strength and moral tradition, the very least that I can du for my country is to take all consequences upon myself in giving voice to the protest of the millions of my countrymen surprised into a dumb anguish of terror. The time has come when badges of honour make our shame glaring in their incongruous context of humiliation, and I for my part wish to stand, shorn of all special distinctions, by the side of those of my countrymen who, for their so called insignificance are liable to suffer a degradation not fit for human beings. And these are the reasons which have painfully compelled me to ask Your Excellency, with due deference and regret, to relieve me of my title of Knighthood, which I had the honour to accept from His Majesty the King at the hands of our predecessor, for whose nobleness of heart I still entertain great admiration.”

তথ্য ঋণ― 

১। অমল হোম, পুরুষোত্তম রবীন্দ্রনাথ, এম্‌ সি সরকার অ্যাণ্ড সন্স লিমিটেড, কলকাতা, ১৩৬২ (বং)

২। প্রশান্ত কুমার পাল, রবিজীবনী, ৭ম খণ্ড,  আনন্দ পাবলিশার্স, ১৯৯৭

৩। The STATESMAN An Anthology Compiled by Nilanjan Majumdar, The Statesman, 1975. 

৪। সোমেন্দ্রনাথ বসু, রবিপ্রদক্ষিণ পথে, টেগর রিসার্চ সেন্টার, ২০১৪

লেখক সরকার পোষিত সাধারণ গ্রন্থাগারের প্রাক্তন গ্রন্থাগারিক

মন্তব্য তালিকা - “জালিয়ান‌ওয়ালাবাগ: পদত্যাগে দেরী কেন?”

  1. শিবানন্দ পালের রবীন্দ্রনাথের নাইটহুড ত‍্যাগ বিষয়ক রচনায় প্রশান্ত কুমার পালের “রবিজীবনী’র বাইরে কোন নতুন তথ‍্য পেলাম বলে মনে করতে পারছি না। স্টেটসম‍্যন পত্রিকায় প্রকাশিত রবীন্দ্রনাথের চিঠির তারিখটি কি নতুন তথ‍্য ? অজ্ঞানতা মার্জনা করবেন‌ ।
    লেখাটি অবশ‍্যই ভালো লেগেছে।

    1. রবীন্দ্রনাথের প্রতিক্রিয়া দিতে দেরী হল কেন? সেটার ওপরই কেবল জোর দেওয়া হয়েছে। আর সেই সময়টা তুলে ধরার চেষ্টা। হয়তো আপনাকে খুশি করতে পারলাম না। ধন্যবাদ।

    2. বিষয়টি আপনার জানা। অনেকেই রবিজীবনীতে পড়েছেন তবু ঘটনা সকলের জন্য উপস্থাপন করার চেষ্টা নতুন করে। ধন্যবাদ।

  2. এটা অা‌গেও প‌ড়ে‌ছি। ধন্যবাদ। গা‌ন্ধির জন্যই ব্রি‌টিশরা দীর্ঘ সময় অত্যাচ‌ার ক‌রেও কোন শা‌স্তি না হ‌য়ে রাজার মত ফি‌রে গে‌ছে। এই দালালটার প্রধান কাজ ছিল মুলত ব্রি‌টিশ‌দের‌কে জন‌রোষ থে‌কে রক্ষ‌া করা।

  3. আমি একটা জিনিষ বুঝি – কবি শিল্পী সাহিত্যিক শিক্ষাবিদদের আপোষহীন কলমকে সরকার যথেষ্ট ভয় পায় – চিরকাল।

  4. নেপাল মজুমদারের “রববীন্দ্রনাথ ও আন্তর্জাতিকতাবাদ…”বইটিতে সবিস্তারে বলা আছে চিত্তরঞ্জন দাশ প্রমুখ তৎকালীন কংগ্রেস নেতাদের এই প্রেক্ষিতে কবিকে অপদস্থ করার কাহিনী , এবং লাহোর কংগেস অধিবেশনে লালা রাজপত রাও -এর বিষয়টি উথ্থাপনের প্রয়াসে গান্ধীজী সমেত নেতৃবৃন্দের মৌন অসমর্থনের চক্রান্তকারী ভূমিকা , ইত্যাদি ! বইটি ৫ খন্ড = রাজনৈতিক বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন চিন্তাভাবনা খুঁজে পাবেন পাঠক

  5. আগেও পড়েছিলাম। লেখাটা ভালো।
    গান্ধির জীবনী পড়ে চতুর মনে হয়েছে। সাধারণ মানুষের অমূল্য সমর্থন নিয়ে গান্ধিজি জমিদারের মতো আচরণ করেছেন বলে মনে হয়েছে।

  6. প্রশ্নটা বোধহয় রবি ঠাকুরের নাইটহুড ছাড়তে দেরী কেন হল, সেটা নয়। প্রশ্ন হল, গান্ধীজী কী করছিলেন? অন্য দেশনেতারা কী করছিলেন? মদন মোহন মালব্যদের গ্রুপ কী করছিল? ১৯১৯ সালে কংগ্রেসের পূর্ণ যৌবন, তাতে একটা নেতা মিলল না যিনি নিরীহ মানুষদের আটকে গুলি চালানোর বিরুদ্ধে কথা বলবেন?
    সুভাষ, নেহেরু– এদের না হয় তখন বলার বয়স হয়নি।

  7. অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লেখা। ঘটনাটি চর্চিত কিন্তু এই লেখায় জোর পড়েছে জালিওয়ানালা বাগের ঘটনা ও নাইটহুড ত্যাগের মাঝে সময়ের ব্যাবধান বিষয়ে, এই দৃষ্টিকোণটি জরুরি ছিল। এই ঘটনা পড়ার পরে আমাদের সময়ের রাজনীতিজ্ঞ এবং তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের দিকে তাকালে বেশিরভাগকেই বামনাকৃতি বলে মনে হয়, তাঁদের সৃষ্টির তেমন কোনও দাম থাকে না আমার কাছে। তখনকার সময়েও কবির পাশে কেউ এসে দাঁড়াতে পারলেন না, এটা ভেবেই আশ্চর্য লাগছে। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের ভূমিকাও এক্ষেত্রে নিরাশাব্যঞ্জক। এক মাসের বেশি সময় ধরে নানা জায়গায় গিয়ে কোনও সাহায্য না পেয়ে রবীন্দ্রনাথ মরিয়া হয়ে এমন একটা সিদ্ধান্ত নিলেন, যা বৃটিশ সরকারকে সঠিক জায়গায় আঘাত করেছিল। লেখাটির জন্য লেখকে অজস্র ধন্যবাদ জানাই। এমন লেখা আরও চাই।

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।