সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

প্রাগিতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব

হরপ্পীয় সমাজে নারীর স্থান কেমন ছিল? হরপ্পীয় সভ্যতার অধিবাসীরা ছিল মিশ্র মানুষ। এই দেশের প্রথম জনগোষ্ঠী আফ্রিকা থেকে আগত ‘আন্দামানি শিকারী-সংগ্রাহরা। দীর্ঘদিন ওই শিকারী-সংগ্রাহকরা দক্ষিণ এশিয়াতে নিরঙ্কুশভাবে থেকেছে। এরাই আদি ভারতীয়। পরে প্রায় ১২ হাজার বছর আগে আসে প্রাচীন ইরান থেকে আরেক শিকারী-সংগ্রাহক জনগোষ্ঠী। দেশের আদি শিকারী-সংগ্রাহকদের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে এরা পরে শুরু করে কৃষি ও পশুপালন। গড়ে তোলে হরপ্পীয় সভ্যতা। ভারতবর্ষে সেই প্রথম তৈরি হয়েছে শহর, জেটি, বাঁধানো সোজা রাস্তা, বলদে টানা গাড়ি। গড়ে উঠেছে পুরোদস্তুর নগরসভ্যতা। সিন্ধু নদের তীরে প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে ইঁট-বাঁধানো শস্যাগারে মানুষ চাষবাস করে ফসল তুলে রেখেছে। মহিষ, ষাঁড়, ছাগলকে গৃহপালিত করেছে। তখন মানুষ চাষের কাজে হালের ব্যবহার হয়েছে। হাল বা লাঙল ভারতীয় আদিম কৃষিযন্ত্র।
৫০০ পূর্বাব্দে প্রতিষ্ঠিত ইয়োরুবাদের ইলে-ইফে বা ইফে শহর। ইয়োরুবা জাতির প্রাচীন রাজধানী। ১২০০ থেকে ১৪০০ সাধারণাব্দের ইফে বিখ্যাত ছিল ঢালাই তামা, পিতল, পাথর, আর টেরাকোটা মূর্তি বানাবার জন্য। শহরের বাসিন্দা জনগোষ্ঠী ইয়োরুবাদের বিশ্বাসে, তাদের উৎপত্তিস্থল ও ধর্মীয় পীঠস্থান এই ইফে। ইফে শহরে ইয়োরুবাদের মন্দির ও দেবতার সংখ্যা বলা হয় ২০১. এই খানে ২০১ মানে আসলেই ২০১ নয়, ২০০ র পরে ১ যোগ হল মানে দুইশতের বেশি তিন শতের কম। ইয়োরুবা ভাষায় ইফে শব্দের অর্থ হল বৃদ্ধি বা ছড়ানো। আর ইলে শব্দের অর্থ ঘর বা বাড়ি। দুয়ে মিলে ইলে-ইফে, বাড়তে থাকা বাড়ি। যা হয়ত ইয়োরুবাদের প্রাচীন আধিপত্যের রূপক, যা বলে তাদের শক্তি কেন্দ্র ইফে থেকে ক্রমবর্ধমান দখলীকৃত এলাকার কথা।
আমাদের ছোটবেলা (১৯৬০-৬৫) ইতিহাসে পড়ানো হত “অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশ কাহাকে বলে?” আমরা মুখস্থ করতাম,"আফ্রিকাকে অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশ বলা হয়।" পরীক্ষার খাতায় উক্তিটির ব্যাখ্যায় লিখতে হত – “এই মহাদেশ সম্পর্কে মানুষ তেমন কিছু জানিত না। লিভিংষ্টোন এবং অন্যান্যদের দুঃসাহসিক অভিযানের ফলে এই মহাদেশের কথা মানুষ প্রথম জানিতে পারে।এই মহাদেশ সম্পর্কে মানুষ তেমন কিছু জানিত না, কারণ এই অঞ্চলে ছিল ভয়ঙ্কর জন্তু-ভর্তি গভীর অরণ্য, দুর্গম পর্বত, খরস্রোতা নদী, মরুভূমি, অস্বাস্থ্যকর জলবায়ু আর আদিম হিংস্র অধিবাসীরা বসবাস করিত। ফলে সভ্য লোক সেখানে যাইতে পারিত না। তাই উহাকে অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশ বলা হয়।”
বছর কয়েক আগে যখন অধ্যাপক সোয়ান্টে পেবোর অবশ্যপাঠ্য ‘আত্মজীবনী’ পড়ার সুযোগ আসে তখন দু’টি জিনিস মনে দাগ কেটেছিল। এক, গবেষণার ফলাফলকে নিরপেক্ষ ভাবে বিশ্লেষণ করার ব্যাপারে তাঁর নির্মোহ, প্রায়-ম্যানিয়াগ্রস্ত খুঁতখুঁতুনি। দুই, ল্যাবরেটরির প্রতিটি সাফল্যে নিজের ছাত্রছাত্রীদের মেধা ও পরিশ্রমের বিস্তারিত বর্ণনা। সেই জন্যে কয়েকদিন আগে নোবেল কমিটির “সোয়ান্টে পেবো অসাধ্যসাধন করেছেন....জন্ম দিয়েছেন একটি বিজ্ঞানের একটি নতুন বিষয় – প্যালিওজিনোমিক্স... ওঁর অনন্য আবিষ্কারগুলি থেকেই আজ আমরা জানতে পারছি কেমন করে বিবর্তনের পথে হেঁটে কি ভাবে আমরা সবাই 'মানুষ' হয়ে উঠলাম” ঘোষণা শুনে যখন আরেকজন বিজ্ঞানী বললেন, “পেবোকে তো চিনি।