সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

ইতিহাস কথা

দক্ষিণ ভারতের এক ছোট্ট পাহাড়ঘেরা গ্রাম। সূর্যাস্তের পর চতুর্দিক নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। পথ ঘাট জনমানব শূন্য। আঁধাররাতে ছোট ছোট পাহাড়গুলোকে দেখে মনে হচ্ছে, যেন চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। গ্রামের প্রান্তে এক ছোট বাংলো। সেই বাংলো থেকে টিমটিম আলো দেখা যাচ্ছে। রাত যত গভীর হতে লাগলো চতুর্পাশ আরও নিঝুম হয়ে গেলো। তখনো বাংলো থেকে মোমবাতির আলো আসছে। দরজা জানলা সব বন্ধ। হালকা হালকা শীত পড়েছে। চাদর মুড়ি দিয়ে এক যুবক দ্রুত পদে বাংলার দরজায় পৌঁছে কড়া নাড়তে লাগলেন। বেশ কিছুক্ষণ কড়া নাড়ার পর বাংলার দরজা উন্মুক্ত হোল। যিনি দরজা খুললেন, তিনি যুবতী এবং বিদেশিনী। যুবক উদ্বিগ্ন হয়ে তার অবস্থা ব্যক্ত করলেন। যুবতী কিন্তু যুবকের ভাষা ও পরিস্থিতি দুটোই বুঝতে পারলেন। যুবক জানালেন, তার স্ত্রী প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। এই মুহূর্তে না গেলে তার স্ত্রীর প্রাণ সংশয় হতে পারে। যুবতী দেখলেন গ্রামের ব্রাহ্মণ যুবক। বড়ই বিপদে পড়েছেন। কিন্তু তিনি নিরুপায়।
ছুটতে ছুটতে দারিয়ানাসু তার থেকে দরজার দূরত্ব আরেকবার মনে মনে মেপে নেয়, আর মুখে ফুটে ওঠে মৃদু হাসি। নিশ্চিন্ত হবার হাসি, পেছনে ছোটা ঘোড়সওয়ারদের বোকা বানানোর হাসি। আরও পিছনে হৈহৈ করতে থাকা লোকগুলোকে এখন দেখা যাচ্ছে না, টিলার আড়ালে হারিয়ে গেছে। ঘোড়সওয়ারদেরও আগেই সে বোকা বানিয়ে দিতে পারত। হরিণের মতো ছুটতে পারে সে, কিন্তু পিঠের বোঝাটা ফেলে দিতে চায়নি। অবশ্য তাতে কিছু ক্ষতি হয়নি, আর দশবার শ্বাস নিতে-না-নিতেই সে পৌঁছে যাবে গোল দরজার পাশের ফাঁকটায়। ব্যাস, তারপর একটা ছোট্ট লাফ, তারপর দু’পলকে দরজার ফাঁকটুকু বুজে যাবে। হাঃ হাঃ হাঃ, ঘোড়সওয়ারগুলো বুঝতেই পারবে না কোথায় ভ্যানিস হল তাদের শিকার, ছাউনিতে গিয়ে আষাঢ়ে গল্প ফাঁদবে অন্যদের কাছে, বলবে ভুতুড়ে মানুষের কথা, যাদের দেখা যায় কিন্তু ধরতে গেলেই হাওয়া হয়ে যায়।