সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

বাংলার ইতিহাস

প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে উঠে আসে গঙ্গাঋদ্ধি সভ্যতার কথা। সেই সভ্যতার কেন্দ্র গঙ্গারাজ্যের সঠিক অবস্থান আজও নির্ণীত হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার চন্দ্রকেতুগড় এবং বাংলাদেশের নরসিংদী জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী উয়ারী-বটেশ্বর প্রত্নস্থান দুটি এক্ষেত্রে খুব উল্লেখযোগ্য নিদর্শন। গ্রিক দিগ্বিজয়ী আলেকজান্ডার পঞ্চনদ অঞ্চলের বিপাশা নদীর তীর পর্যন্ত অগ্রসর হয়ে গঙ্গাঋদ্ধি জাতি বা রাজ্যের শক্তিশালী সামরিক শক্তির কথা শুনে আর না এগিয়ে ফিরে যান। হয়তো আজকের উয়ারী-বটেশ্বরেই ছিল সেই গঙ্গাঋদ্ধি জাতি বা রাজ্যের রাজধানী। উয়ারী-বটেশ্বরের দ্বিস্তরবিশিষ্ট প্রতিরক্ষা প্রাচীর, সমৃদ্ধ ও বিস্তৃত প্রাচীন বসতি, আড়াই হাজার বছর সময়কাল ও পূর্ব ভারতে এর ভৌগোলিক অবস্থান একে গঙ্গারিডি বা গঙ্গাঋদ্ধি বলে শনাক্ত করতে ভূমিকা রাখে।
১৯০৭ সালে নেপালের রাজদরবারের পুঁথিশালা থেকে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আবিষ্কার করলেন চর্যাপদ সমূহের একটি সংকলন। আবিষ্কারের দশ বছরের মাথায় তাঁর সম্পাদনায় ১৯১৬ সালে সেগুলি প্রকাশিত হল বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ থেকে। তারপর থেকে এর ভাষা ও বিষয়বস্তু নিয়ে, চর্যার পদকর্তাদের নিয়ে অনেক গবেষণা হল। আলাপ আলোচনা ও বিতর্কের দীর্ঘ ইতিহাস পেরিয়ে প্রাচীনতম বাংলা ভাষার প্রায় একমাত্র এই নিদর্শনের নানাদিক আমাদের কাছে এখন অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আবিষ্কারক হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, বৌদ্ধধর্মের বিশেষজ্ঞ আচার্য বিধুশেখর শাস্ত্রী, চর্যাপদের তিব্বতী টীকার আবিষ্কর্তা প্রবোদ চন্দ্র বাগচী ছাড়াও যে সমস্ত ভাষাতাত্ত্বিকের গবেষণা এই কাজে সবচেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্য তাঁরা হলে ভাষাচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, মহম্মদ শহীদুল্লাহ, আচার্য সুকুমার সেন, অধ্যাপক পরেশচন্দ্র মজুমদার, অধ্যাপক রামেশ্বর শ, অধ্যাপক নির্মল দাশ প্রমুখ।