সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

লেখক: অতীন দাস

পড়াশুনোর মধ্যে পড়াটা বেশি, শোনাটা কম, নিজেকে স্বশিক্ষিত বলেন। প্রথাগত শিক্ষা বিজ্ঞান শাখায় হলেও সমাজ সম্পর্কিত নানা বিষয়ে বহুদিন থেকে পড়ছেন। পেশাগত ভাবে শিক্ষকতা গ্রহণ করেছেন ত্রিশ বছর আগে।
আমার জন্ম বেলারুশে, ডাক্তারদের একটি পরিবারে। আমার বাবা-মা আমাদের রেখে যেতেন একজন আয়ার যত্নে, যিনি বেলারুশের গ্রাম থেকে শহরে এসেছিলেন। আয়া বেলারুশের রূপকথার গল্প বলতেন, তাকে বিরক্ত করলে চিৎকার করতেন ‘পেরুন তোকে ধরে নিয়ে যাবে’! পেরুনকে (প্রাক-খ্রিস্টিয় পাগান স্লাভদের মূল দেবতা) তিনি স্বর্গে বসবাসকারী এবং ঝড়, বজ্রপাত আর বজ্রপাতের নিয়ন্ত্রক বলতেন। বিজ্ঞান পেরুন সম্পর্কে আমার ছেলেবেলার আয়ার চেয়ে সামান্য বেশি জানে। এমনকি আমরা যে কয়েকটি তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছি তা পৌরাণিক কাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, বরং তাঁর সঙ্গে যুক্ত পৌত্তলিক দেবতাদের সম্পর্কিত; যেমন বলি, মূর্তি, শপথ, নাম সংকীর্তন ইত্যাদি। (‘পেরুনের পুনরুত্থান, পূর্ব স্লাভিক পৌত্তলিকতার পুনর্গঠনের জন্য’ বইটির১ ভূমিকা, ২০০৪)
বিংশ শতাব্দীর শুরুতে আমেরিকায় খ্রিস্টধর্মে মৌলবাদের ধারণা প্রথম উঠে আসে; পরবর্তীকালে অন্যান্য সংস্কৃতিতে তা ছড়িয়ে পড়ে। আধুনিকতার কিছু দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিক্রিয়া সঞ্জাত হল মৌলবাদ। আধুনিকতা (মডার্নিসম)এর বিপরীত শব্দ হল মৌলবাদ (ফান্ডামেন্টালিসম)। নিজেদের অবস্থান বোঝাতে কথাটি প্রথম ব্যবহার করে আমেরিকান কিছু খ্রিস্টান গ্রুপ। এই অবস্থানটি ছিল, তাদের মতে, আধুনিক বিজ্ঞান ও ধর্মতত্ত্বসমূহের থেকে বিযুক্ত; অধার্মিক প্রবণতাগুলির বিপরীতে। তাদের মতে খ্রিস্টীয় মতবাদের সবচেয়ে বড় শত্রু ছিল ডারউইনের বিবর্তনবাদ এবং আধুনিক ঐতিহাসিক ভাষাবিদ্যা ও ধর্মতত্ত্বের বাইবেলের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি।১ (ব্রক্কি এবং আহমেদ, ২০২৩)