সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

লেখক: জয়ন্ত ভট্টাচার্য

জয়ন্ত ভট্টাচার্য
লেখক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তিবিদ্যার স্নাতক এবং বিগত তিন দশক ধরে বিমান প্রযুক্তিবিদ্যার সঙ্গে যুক্ত। ইতিহাস, বিশেষতঃ সামাজিক ইতিহাস ও মুদ্রাতত্ত্ব নিয়ে অত্যন্ত আগ্রহী পাঠক। ইতিহাস নিয়ে লেখালেখির সূত্রপাত সাম্প্রতিক।
আজকাল আন্তর্জালের দৌলতে গ্রন্থাগার বললেই ডিজিটাল গ্রন্থাগারের কথা মনে হয়। কিছুদিন আগে পর্যন্তও গ্রন্থাগার বলতে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের বহুসংখ্যক গবেষক বা ছাত্রের পাঠের সুবিধাযুক্ত বিপুল মুদ্রিত পুস্তকের সংগ্রহশালার কথা চোখের সামনে ভেসে উঠত। কারও হয়তো কলকাতার জাতীয় গ্রন্থাগারের কথা মনে হতো, কারও বা ব্রিটিশ লাইব্রেরির কথা। ভারতীয় উপমহাদেশে ছাপা বইয়ের সূত্রপাত বেশি দিনের নয়। এর পূর্ববর্তী দীর্ঘ কালপর্বে এই উপমহাদেশের গ্রন্থভাণ্ডারগুলি ছিল হাতে লেখা পাণ্ডুলিপির পুথিশালা। ভারতীয় উপমহাদেশে গ্রন্থাগারগুলি মূলত শাসকদের বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায় স্থাপিত হয়েছিল, তবে অন্ত-মধ্যযুগে কিছু উল্লেখনীয় ব্যক্তিগত পুথিশালাও গড়ে উঠেছিল।
বর্তমান উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশের বেশ কয়েকটি জেলা জুড়ে বুন্দেলখণ্ডের ভৌগোলিক এলাকার ব্যাপ্তি। বুন্দেলখণ্ডের পাহাড় আর উপত্যকা ঘেরা ভূখণ্ডে দুই নিম্নবর্গীয় বীর আল্হা আর উদলের যশোগাথা সম্ভবত অন্ত-মধ্যযুগের সূচনাকাল থেকেই লোকসংস্কৃতির অঙ্গীভূত। সেই সময় থেকে আজ পর্যন্ত এই লোকগাথার ২৩টি সমরাঙ্গনে ৫২টি যুদ্ধের আবেগদীপ্ত বর্ণনা এই অঞ্চলের মূলত কৃষিজীবী সমাজের কিশোর আর তরুণদের যুদ্ধে অংশ নিয়ে বীরত্ব প্রদর্শনে উদ্বুদ্ধ করে চলেছে। প্রতি বছর শ্রাবণ মাসে আকাশ যখন মেঘে ঢেকে যায়, ঢোলক, চিমটা আর মঞ্জিরার বাদ্যের সঙ্গে বুন্দেলখণ্ডের গ্রামে গ্রামে আল্হাখণ্ডের যুদ্ধগাথার হুংকারে মুখরিত হয়ে ওঠে মাটি আর পাহাড়। বীররসাত্মক আল্হাখণ্ডের বাহান্নটি যুদ্ধগাথার মধ্যে বুন্দেলখণ্ডের তরুণ হৃদয় সবচেয়ে বেশি আলোড়িত হয় যখন শুরু হয় আল্হার নিজের বিবাহের জন্য ন্যায়নাগড়ের লড়াইয়ের বাখান।
বর্তমান পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের অধিকাংশ, পাঞ্জাব প্রদেশের কিছু অংশ এবং পূর্ব আফগানিস্তানের একটি অংশ বহু প্রাচীনকাল থেকে গান্ধার নামে পরিচিত ছিল, ঋগ্বেদেও (১.১২৬.৭) গান্ধারের উল্লেখ আছে। ষষ্ঠ শতক সাধারণপূর্বাব্দের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে চতুর্থ শতক সাধারণপূর্বাব্দের শেষার্ধে আলেকজান্ডারের অভিযান পর্যন্ত গান্ধার (প্রাচীন পারসিক ভাষায় গন্দার) অঞ্চল আকিমিনীয় সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে ছিল। চতুর্থ শতক সাধারণপূর্বাব্দের শেষে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য এই এলাকাকে তাঁর সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। প্রথম সহস্রাব্দ সাধারণপূর্বাব্দের মাঝামাঝি থেকে প্রাচীন গান্ধারের দুটি মুখ্য নগর ছিল পুষ্কলাবতী (বর্তমান চারসদ্দা) ও তক্ষশিলা।