সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

সামাজিক ইতিহাস

প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যে গ্রীক সাহিত্যের মত সমপ্রেম বা সমকামের প্রচুর উদাহরণ পাওয়া যায় না। রামায়ণ এবং মহাভারত থেকে অল্প কিছু উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে হয়তো। সুলতানি যুগে ভারতীয় সাহিত্যে কিছু বিবর্তন দেখা যায় এবং বেশ কিছু সাহিত্যে সমপ্রেম বা সমকামের উদাহরণও দেখতে পাওয়া যায়। সুলতানি যুগের শুরু হয় ১১৯২ সালে মহম্মদ ঘোরির দিল্লীজয়ের পর থেকে। মহম্মদ ঘোরির মৃত্যুর পর পাঁচটি রাজবংশ দিল্লীতে রাজত্ব করে- মামলুক বা ‘দাস’বংশ (১২০৬-১২৯০), খলজি (১২৯০-১৩২০), তুঘলক (১৩২০-১৪১৪), সৈয়দ (১৪১৪-১৪৫১) ও লোদি (১৪৫১-১৫২৬)। আমাদের আলোচনার শুরু রাজরাজড়াদের দিয়ে নয়, ভারতবর্ষের অন্যতম সেরা কবিদের একজন- আমীর খুসরোকে নিয়ে।
বাংলাদেশে বসবাসকারী আদিবাসী জনগোষ্টীর মধ্যে ‘চাকমা’ বা ‘চাঙমা’ সমাজ নানাকারণে বিশিষ্টতার দাবিদার। সাহিত্য-শিল্পকলা-শিক্ষা-সংস্কৃতিতে অগ্রগামী এই জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের আদিবাসী নৃগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠও বটে। বাংলাদেশে প্রধানত পাহাড়ি চাদর আবৃত পার্বত্য চট্রগ্রামেই তাদের মূল আবাস। এছাড়াও ভারতের ত্রিপুরা, মিজোরামের দক্ষিণাংশে, অরুণাচল, মিকির হিলসেও চাকমারা বাস করে। মিজোরামে ‘চাকমা অটোনোমাস ডিষ্ট্রিক কাউন্সিল’ নামে একটি এলাকাও আছে। মায়ানমারের আরাকানে, বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফে ‘দৈংতাক’ নামে চাকমাদের আর একটা শাখা বসবাস করে, যারা সেখানে বাংলাদেশী চাকমাদের মতো নিজেদের ‘চাঙমা’ বলে।
"তুমি যে হাসপাতালে সেটা শুনে খুব প্রীত হলাম। আমৃত্যু যেন যন্ত্রণা ভোগ কর সেই কামনা করি, নির্বোধ!" চিঠিটার নীচে স্বাক্ষর করেছিলেন 'একজন ইংলিশম্যান' । ১৯১৩ সালের জুনে এমিলি উইল্ডিং ডেভিডসন যখন হাসপাতালের মৃত্যু শয্যায়, তখন তাঁর কাছে এই চিঠি আসে। এমিলি ডেভিডসন, ইংল্যান্ডে নারীদের ভোটাধিকারের আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী। কয়েকদিন আগে তিনি এপসমের রাজকীয়, সম্ভ্রান্ত ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় ভোটাধিকার চেয়ে বিক্ষোভ করতে গিয়েছিলেন। ঘোড়ার লাথিতে আহত হন। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। সেই জ্ঞান আর ফেরেনি। ৮ই জুন মারা যান তিনি। মৃত্যুশয্যায় শুয়েও গালাগালি ভরা যে ধরণের চিঠি তিনি পেয়েছিলেন, তা থেকে স্পষ্ট, কীরকম ঘৃণা, বিদ্বেষ এবং হুমকির সম্মুখীন হতেন ভোটাধিকারের আন্দোলনের নারীরা।
১৯৯৫ সালের ডিসেম্বরের এক শীতল ও সিক্ত সন্ধ্যায় ইংল্যান্ডের সোয়াস-এ, বিশিষ্ট লেখক গুলাম মুর্শিদ মন্তব্য করেছিলেন, রবীন্দ্রনাথ মুসলিম সমাজ সম্পর্কে তেমন কিছু লেখেননি। প্রয়াত অধ্যাপক ধ্রুব গুপ্ত অবশ্য এই মন্তব্যের প্রত্যুত্তরে জানিয়েছিলেন, মুসলিম সমাজের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সম্পর্ক কেবলমাত্র পরিমাণগত দিক থেকে বিচার করা ঠিক নয়। বরং এই বিষয়ে বিশ্বকবির আলোচনাগুলির গুণগত মূল্যায়ন করতে পারলে তা আরও অর্থবহ হবে। রবীন্দ্রনাথের মুসলিম সমাজের উপর আলোচনায় যে অন্তর্দৃষ্টির গভীরতা লক্ষ্য করা যায়, তা এমনকি ইসলাম সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের পর্যন্ত বিস্মিত করে। প্রকৃতপক্ষে এই কারণেই আমি উত্সাহিত হয়েছি এই রকম কম আলোচিত ভূখণ্ডে ঐতিহাসিক গবেষণা এগিয়ে নিয়ে যেতে।