সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

লেখক: মধুশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়

মধুশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনীয়ারিং বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক, তাঁর গ্রন্থ 'প্রাগিতিহাস-ভারতবর্ষে পরিযান ও জাতিগোষ্ঠী গঠন' মুজাফ্ফর আহমদ স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছে। দ্বিতীয় গ্রন্থ 'ধর্ম সংস্কৃতি ও রাজনীতি-ছিন্ন চিন্তার ককটেল'। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে তৃতীয় গ্রন্থ, 'প্রাগিতিহাসের আগে-প্রাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস'।
আরও দুই সহকর্মীর সঙ্গে একত্রিতভাবে সম্পাদনা করেছেন, ইতিহাস তথ্য ও তর্কর উদ্যোগে প্রকাশিত গ্রন্থ 'বঙ্গ ইতিহাস প্রবাহ'।
১৬ই মার্চ, ১৯৬৮-এর সকাল বেলায় আমেরিকান ডিভিশনের ১১তম পদাতিক ব্রিগেডের একটা ইউনিট চার্লি কোম্পানির সৈন্যরা দক্ষিণ ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলে মাই লাই গ্রামে পৌঁছেছিল। তাদের ৪৮তম ভিয়েতকং ব্যাটালিয়নকে এলাকা থেকে নির্মূল করার জন্য ‘অনুসন্ধান এবং ধ্বংস’ মিশনে পাঠানো হয়েছিল। তারা মাই লাইতে কোনো প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়নি, তবে সেখানে তখনও প্রায় ৭০০ বাসিন্দা ছিল। অবশ্য সেখানে যুদ্ধ করার উপযোগী ও বয়সী কোনো পুরুষ ছিল না। সেই সকালে গ্রামবাসীরা জলখাবার খেতে বসেছে। তা সত্ত্বেও, পরবর্তী তিন ঘণ্টায় সৈন্যরা ৫০৪ জন ভিয়েতনামী নাগরিককে হত্যা করে। ড্রেনের খাদে সারিবদ্ধ করে রেখে অনেককে গুলিবিদ্ধ করা হয়। মৃত বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে ৩ বছর বা তার কম বয়সী ৫০ জন, ৪ থেকে ৭ বছরের মধ্যে ৬৯ জন এবং ৭০ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ২৭ জন ছিলেন।
যখন মানুষ আফ্রিকায় চামড়া পরছে, শিশুকে কবর দিচ্ছে, পাথরের ওপরে ক্রশহ্যাচ আঁকছে, তখন ইউরোপে ‘নিয়েণ্ডারথাল’রা কেমন আছে? তারা কেমন জীবন কাটাচ্ছে? আধুনিক মানুষ, ‘নিয়ান্ডারথাল’ ও ‘ডেনিসোভান’ উদ্ভূত হয়েছে একই পূর্বপুরুষ থেকে। ‘হোমো ইরেক্টাস’-এর যে মূল শাখাটি আফ্রিকাতে ছিল তাদের উত্তরসূরি হল ‘হোমো হাইডেলবার্গেনসিস’। ‘হোমো হাইডেলবার্গেনসিস’-রা পৃথিবীতে ছিল ৮ থেকে ৩ লক্ষ বছর আগে পর্যন্ত। থাকত পূর্ব ও দক্ষিণ আফ্রিকা, ইউরোপ, চীন, জাপানে। ওরা আগুনের প্রারম্ভিক ব্যবহার জানত, হাতে থাকত কাঠের বল্লম। ‘হোমো হাইডেলবার্গেনসিস’ থেকে উদ্ভূত তিন জ্ঞাতি ভাই আধুনিক মানুষ, ‘নিয়ান্ডারথাল’ ও ‘ডেনিসোভান’।