সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

লেখক: জ্যোতির্ময় পাল

জ্যোতির্ময় পাল
ভূপদার্থবিদ্যার গবেষক। বিজ্ঞান বাদে সমাজ, সংগীত, সিনেমা চর্চায় আগ্রহী। ভ্রমণ বিলাসী এবং বইপোকা।
পৃথিবীতে কী রকম করে প্রাণ সৃষ্টি হল, সেই প্রাণ কীভাবে দীর্ঘ প্রতিকূল অবস্থাতেও বেঁচে থাকল এবং সর্বোপরি, আজকের দিনের দ্বিপদী মানুষ কীভাবে তৈরি হল! সে এক দীর্ঘ ইতিহাস। এই ইতিহাস অবশ্য ঐতিহাসিকদের চর্চার বিষয় নয়, বরং এর অধিকাংশ অংশ চর্চা করেন ভূতত্ত্ববিদরা, পুরাজীববিজ্ঞানীরা (প্যালেওন্টোলজিস্ট)। এটি প্যালেওন্টোলজিস্ট-দের বিশেষ পছন্দের জায়গা। পুরাজীববিজ্ঞানীরা পাথরের মধ্যে থাকা প্রাচীন প্রাণীদের দেহাবশেষ—যাকে বলা হয় ফসিল বা জীবাশ্ম—সম্পর্কে গবেষণা করে প্রাণের বিবর্তনের এই ধারাবাহিক সময়পঞ্জি তুলে ধরেন। এবং এই বিষয়ের সূত্রপাত যিনি করেন, তার নাম মনে হয় আট থেকে আশি সকলেই কোনো-না-কোনোভাবে শুনেছেন—চার্লস ডারউইন।
২ রা জুলাই, ১৮৪৩ সাল। সকাল বেলা রিচমন্ডের 'মর্নিং হেরাল্ড'-এর একটা প্রতিবেদন দেখে ভ্রু কুঁচকে উঠল ব্রিটিশ অফিসার ক্যাপ্টেন গ্রোভার-এর। প্রতিবেদনটা ব্রিটিশ সেনাবাহিনীকে উদ্দেশ্য করে লেখা একটা চিঠি, লিখেছেন রেভারেন্ড যোসেফ ওল্ফ। দুই ব্রিটিশ সামরিক অফিসার, ক্যাপ্টেন আর্থার কনোলি এবং চার্লস স্টড্ডারট, বিগত ৫ বছর ধরে নিরুদ্দেশ। এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যোসেফ ওল্ফ। এই দুই অফিসার মধ্য এশিয়ার বুখারা থেকে নিখোঁজ। যেহেতু যোসেফ ওল্ফ নিজে কিছুদিন বুখারায় তাঁর মিশনের কাজে ছিলেন এবং এই অঞ্চলে থাকার অভিজ্ঞতা আছে, তাই তাকে যদি সামান্য অর্থ সাহায্য করা হয় বা কেউ যদি তাঁর সঙ্গে এই নতুন অভিযানে যেতে ইচ্ছুক হন তাহলে তিনি বিশেষ উপকৃত হবেন। তিনি বিশেষ ভাবে চিন্তিত কারণ তাঁর কাছে খবর আছে যে, এই দুই ব্রিটিশ অফিসারকে বুখারার কারাগারে দীর্ঘদিন বন্দি করে রেখে অবশেষে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কনোলি এবং স্টড্ডারট দুজনেই ভক্ত খ্রীষ্টান, তাদের খোঁজ নেওয়া যোসেফের দায়িত্ব।