সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

ছবিতে ইরানি ছায়া

ছবিতে ইরানি ছায়া

জ্যোতির্ময় পাল

জুলাই ৯, ২০২৩ ৩৭৬ 2

ইতিহাসের ভূমিকা

প্রথমেই বলে রাখি, আমি কোনো চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞ নই সিনেমা জগতের সাথে বিশেষ যোগ আছে, তাও না তবে সিনেমার মাধ্যমে সমাজবাবস্থার যে রূপ ফুটে ওঠে, তা জানার জন্য দেশ বিদেশের কিছু সংখ্যক সিনেমা দেখার স্বল্প অভিজ্ঞতা হয়েছে ভারতীয় বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনো করার সময় সেখানকার ফিল্ম সোসাইটির দায়িত্বে ছিলাম প্রায় ৪ বছর। তখন এই সমস্ত সিনেমা দেখার সুযোগ হয়। ২০১৮ সালে বাংলা চলচ্চিত্রের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বেশ কিছু উৎসব অনুষ্ঠান করে সঞ্চালনা করে প্রতিষ্ঠানের বাঙালি ছাত্রছাত্রী সংগঠন “স্পন্দন” সেই সময়েই এই লেখার বীজ বোনা হয়। 

বিভিন্ন দেশের সিনেমা তাদের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করে। তবে সেই চিত্রণ প্রণালীর স্বকীয়তার কথা বলতে গেলে, ইরান অন্যতম। হালে যে সব ইরানি সিনেমা জনপ্রিয়তা পেয়েছে, তার প্রায় প্রতিটিই বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার প্রতিফলন। তবে ইরানের ইতিহাস না জেনে শুধু সিনেমা দেখলে, এই সিনেমাগুলি কেবল মাত্র “রোমান্টিক” বা “থ্রিলার” বা “ট্রাজেডি” হিসাবেই বেঁচে থাকবে। তাই পারস্যের সিনেমা নিয়ে আলোচনার আগে, সেদেশের ইতিহাস নিয়ে আলোকপাত প্রয়োজনীয়।

বিপ্লবের ইতিহাস

ইন্দিরা গান্ধী, রেজা শাহ, ফারা পলহবি, ১৯৭০

অক্টোবর, ১৯৭০। দাস্ত-এ-লুত এর উত্তপ্ত বালুরাশি গ্রাস করছে ৫০০ খৃস্টপূর্বের শহর পার্সেপোলিসকে। দিগন্ত বিস্তৃত মরুভূমি, মাঝে মাঝে তাপমান ৫০ ডিগ্রী ছাড়িয়ে যায়। কেবল মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ, আর পাসারগড়ে “আরামগাহ কুরোস এ বড়জোরগ” (آرامگاه کوروش بزرگ) বা সাইরাসের সমাধি। বহু খরচ করে এই তপ্ত মরুভূমির মধ্যে মধ্যে ঘাস থেকে গাছ লাগানো হল। সেই গাছের জন্য বিদেশ থেকে পাখি আনানো হল। মরুভূমির রূপ

বদলে যেতে লাগলো। বিস্তীর্ণ মরুদেশে মানুষ নিজের চেষ্টায় প্রথম বার তৈরি করে ফেললো সুসজ্জিত মরুদ্যান। কারণ ইরানের একনায়ক রেজা শাহ পলহবি, পার্সেপোলিসকে নতুন ভাবে সাজাতে চান। এখানে পারসিক সাম্রাজ্যের ২৫০০ বছরের বর্ষপূর্তির মহোৎসব পালন করা হবে। পৃথিবীর কোণায় কোণায় আমন্ত্রণ পত্র ছড়িয়ে পড়েছে। রাজা, রানী, প্রেসিডেন্ট

কিংবা ডেপুটি, সে কমিউনিস্ট দেশের হোক বা পুঁজিবাদী দেশের হোক, সবাই নিমন্ত্রন পাচ্ছেন। আগামী বছর, ১৯৭১ সাল, ১২-১৬ অক্টোবর ইরানের সংস্কৃতি ছড়িয়ে যাবে সারা পৃথিবীতে। পৃথিবীর সেরা দেশ হবে ইরান। এর কয়েক বছর আগে, ১৯৬৭ সালে, শাহ নিজেকে ইতিমধ্যে রাজার রাজা হিসাবে ঘোষণা করেছেন।

৬০ দশকের ছবি, তেহরানে পশ্চিমের ছোঁয়া

লক্ষ লক্ষ টাকা মরুভূমির বালির মতো উড়ে যাচ্ছে, ফ্রান্স থেকে হাজার হাজার ডলার দিয়ে খাবার আসছে, মরুভূমির মধ্যে তৈরি হয়েছে প্রায় ৬০টি বিশালাকার তাঁবু, এবং একটি সর্ববৃহৎ তাঁবু, যেখানে উৎসবের সময় ভুরিভোজ সম্পন্ন হবে। প্রতিটি থাকার তাঁবু মূল্যবান জিনিসপত্র দিয়ে সাজানো, একজন করে ব্যক্তিগত ভৃত্যকে নিয়োগ করা হয়েছে। রাজা রানীদের যেকোনো দরকারে শুধু একটা ঘন্টা নাড়ালেই ছুটে আসবে তাদের কাছে। 

এদিকে ৫০০ মাইল দূরে, তেহরান ফেটে পড়ছে বিক্ষোভে। ১৯৭০ সালের পরিসংখ্যান বলছে, ইরানের ৫০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে, বহু জায়গায় জল এবং খাদ্যের অভাব। বিগত কয়েক বছরে তেলের মুনাফা প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও সাধারণ মানুষরা লভ্যাংশ থেকে যথেচ্ছ পরিমাণে বঞ্চিত। ছাত্ররা বিপ্লবী হয়ে উঠেছে, তাদের আকছার গ্রেপ্তার লেগে আছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের বইয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে সে সব বই পাওয়া গেছে, তাদের ওপর চলেছে অত্যাচার। মানুষ স্বাধীনতা হারাচ্ছে। এই আপৎকালীন সময়ে শাহ-এর ‘ইরান মহোৎসব’ পলহবি বংশের পতনের অনুঘটক হিসাবে কাজ করেছে।

১৯৭৩-৭৪ সালে ইরানে তেলের মুনাফা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৩৩.৯ শতাংশ, আর ১৯৭৪-৭৫ সালে আরো বেড়ে দাঁড়ায় ৪১.৬ শতাংশ। সাথে সাথে শিল্পায়ন শুরু হয়, মানুষের কর্মসংস্থান হয় ব্যাপক হারে। হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়া এই অর্থনীতি ডেকে আনে মুদ্রাস্ফীতি। এর শিকার হয় লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ। ১৯৭৬ সালে ইরান সরকার কর্ম ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়, সাথে সাথে সমস্ত রকমের উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ হয়। মানুষের ধৈর্য সীমা হারাতে থাকে, ইরানের মৃতপ্রায় বাম সংগঠন আবার মূল স্রোতে ফিরতে চায়, তবে যোগ্য নেতার অভাবে তাদের সংগঠিত বিপ্লবের পরিকল্পনা দুর্বল হয়ে পড়ে। ‘৭৭ এ ইরানে শুরু হয় গণবিরোধ, আইনজীবী ও বুদ্ধিজীবীরা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে লিপ্ত হয়ে ওঠেন। ‘৭৮ এ ইরানের বিপ্লব পরিকল্পিত হয় রুহুল্লাহ (আয়াতোল্লাহ) খোমিনী-এর হাত ধরে। এর আগে ‘৬৩ সালে শাহের “সফেদ বিপ্লবের” সময় প্রতিবাদ করেছিলেন খোমিনী। তার মতে সফেদ বিপ্লব ইসলামের বিরোধী, মার্কিনি সাম্রাজ্যবাদের প্রভাব। অন্যদিকে, শাহের কাছে এই আন্দোলন ছিল ইরানের পুরোনো সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনার প্রয়াস। ইরান কখনোই মুসলিম মৌলবাদী ছিল না, সেখানে মহিলাদের পর্দা প্রথা ছিল না, লিঙ্গ বৈষম্য ছিল না।

ছাত্র বিদ্রোহ

উপরন্তু শাহ, তুর্কির উন্নতি দেখে প্রভাবিত ছিলেন, সেখানে কামাল পাসা পর্দা প্রথা তুলে দিয়েছে, এমনকি আরবি বর্ণের বদলে এসেছে ল্যাটিন। তাই, রাজার চোখে খোমিনী রাজবিরোধী। ‘৬৪ সালে খোমিনী ইরান থেকে বিতাড়িত হন। তার ১৪ বছর পর, ‘৭৮ সালে, খোমিনীর বিপ্লব আবার শুরু হয় — এখন তার পথ পরিষ্কার। দীর্ঘকালের অপশাসনের ফলস্বরূপ ইরানিরা ইতিমধ্যে প্রবল বিক্ষুব্দ্ধ। তাদের নেতা তখন খোমিনী।

৮’ই সেপ্টেম্বর, ১৯৭৮, শুক্রবার। তেহরানে সামরিক বাহিনী আন্দোলনকারীদের ওপর সশস্ত্র হামলা করে। প্রতিবাদে তৈল শোধনাগারের কর্মীরা অবরোধ, হরতালে সামিল হয়। আন্দোলনের আগুন ছড়িয়ে পড়ে সিরাজ, ইস্ফাহান, তাহরিজে। রাজা সমস্ত ভাবে জনসমর্থন হারায় এবং ১১ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে সমস্ত ক্ষমতা মানুষের হাতে চলে আসে, সরকার সমগ্রভাবে পর্যুদস্ত হয়। মাত্র ৩ দিনের মধ্যে, ১৪ই ফেব্রুয়ারি, খোমিনী নেতৃত্ব গ্রহন করেন এবং আদেশ জারি করেন, “কোন অবাধ্যতা, এবং শর্তাধীন সরকারের ওপর অন্তর্ঘাত ইসলামী বিপ্লবের বিরোধী হিসেবে গণ্য করা হবে।”

ইরানের ক্ষমতার হস্তান্তর হল, একনায়কতন্ত্রের থেকে মৌলবাদের হাতে। শ্রমিকশ্রেণীর বিপ্লবের ওপর ভর দিয়ে জেগে উঠল ইসলামিক আন্দোলন। ইরান এখন “ইসলামিক রিপাবলিক অফ ইরান”। শুরু হল পর্দা প্রথার ব্যাপক প্রচলন, সাথে সাথে লিঙ্গ বৈষম্য বাড়তে লাগল — জর্জরিত হতে লাগল শিল্প, সাহিত্য, সমাজ। সাধারণ মানুষের মতামত প্রকাশের সমস্ত ক্ষমতা বাজেয়াপ্ত করল নতুন সরকার। যেকোনো পশ্চিমি সংস্কৃতি, গান, বই, সিনেমা সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ করা হল। বামপন্থী আন্দোলনের সাথে কেউ যুক্ত থাকলে তাকে তৎক্ষণাৎ গ্রেফতার, এমনকি তাদের বন্ধুবর্গরাও নিস্তার পেত না। এলবুর্জের নিচে এভিন কারাগার আবার কলরোলে ভরে উঠল।

প্রাক বিপ্লব ছায়াছবি

দোখতার-এ লোর ছবির দৃশ্য

এবারে ছবির কোথায় আসা যাক। ইরানের ছায়াছবির ইতহাস শতাব্দী প্রাচীন। ১৯০০ সালে প্রথম তথ্যচিত্র তৈরি হয়, যা ১৯০৪ সাথে জনসমক্ষে মুক্তি পায়। ১৯৩৩ সালে দোখতার-এ লোর (دختر لور, Lor Girl) সিনেমায় প্রথম বার কোনো মহিলাকে চিত্রায়ণ করা হয়। এই সিনেমার চিত্রগ্রহণ করা হয় ভারতে, এবং পরিচালক আর্দেশির ইরানি তার গাড়ির চালকের স্ত্রী সাদিকে সামিনেজাদকে “রৌহাঙ্গিজ” ছদ্দনাম দিয়ে রাজি করান মুখ্য ভুমিকায় অভিনয় করার জন্য। গোলনার নামের এই চরিত্র চিত্রণ করতে নায়িকাকে হিজাব বিহীন অবস্থায় অবতীর্ণ হতে হয়। ছবির পুরুষ অভিনেতারা পরবর্তীকালে সাধারণ মানুষের মাঝে পরিচিতি লাভ করলেও, সাদিক সারাজীবন ধরে লাঞ্ছনার শিকার হন। এমন কি নিজের পরিবারবর্গের দ্বারা পরিত্যক্ত হয়ে ১৯৯৭ সালে, ৮১ বছর বয়েসে দারিদ্র ও একাকিত্বের সাথে লড়াই করে দেহত্যাগ করেন। এরপর থেকে ইরানি সিনেমায় মহিলাদের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। পর্দার আড়ালে উঁকি দেওয়া পর্যন্তই অভিনয় সীমিত ছিল।

তবে সিনেমাতে মহিলাদের ভূমিকা কমে গেলেও, সে সময়ে সিনেমার সংখ্যা খুব একটা কম ছিল না। ১৯৫০-৬০ দশকের মধ্যে প্রায় ৩২৪টি ছবি মুক্তি পায় ইরানে। ইরান সরকার এই সিনেমা শিল্পের অগ্রগতির জন্য যথেষ্ট তৎপর ছিলেন। তবে অনেকের মতে, এই সময়ের সিনেমাগুলি নিতান্তই ব্যাবসায়িক এবং ইরানের নিজস্ব সংস্কৃতিকে ছেড়ে রেখে পশ্চিমের ভাব ধারা প্রকাশ মূল হয়ে উঠেছিল। ১৯৬০ সালে প্রকাশিত ফিল্ম-এ ফার্সি থেকে সিনেমাতে মহিলাদের ভূমিকা ধীরে ধীরে আবার বাড়তে থাকে। শাহের আমলে ইরান বহু সংকটের সম্মুখীন হলেও লিঙ্গ বৈষম্য এবং পর্দা প্রথা বিলুপ্ত হয়েছিল, সে সময়কার সিনেমাতে সমাজের এই চিত্র স্পষ্ট। ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত ফার্সি ছবি গাভ (گاو‎, The Cow) ইরানি সিনেমার জগতে নতুন তরঙ্গ (New Wave in Iranian Film) তৈরি করে। দারায়ুস মেহরাজু পরিচালিত এই ছবি আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করে বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবের মধ্যে। এদিকে বাণিজ্যিক ছবিতে পশ্চিমের ছোঁয়া ইরানের মানুষের মধ্যে ধীরে ধীরে বিতৃষ্ণা তৈরি করতে থাকে। বিপ্লবের প্রাক কালে দাঁড়িয়ে যেখানে মানুষের ক্ষোভের পরিমান চরমে, যেকোনো পশ্চিমি প্রভাবপূর্ণ কার্যকলাপ তাদের আগ্রাসী মনোভাবকে উত্তপ্ত করছিল। আখেরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে লাগল দেশের সিনেমা ও শিল্প জগৎ। এর মধ্যেও তেহরানে প্রথম আন্তর্জাতিক চলচিত্র উৎসব হয় ১৯৭৩ সালে। মাসুদ কিমিয়াই পরিচালিত ১৯৭৪ সালে মুক্তি প্রাপ্ত ছবি গভনজহা (گاوازانا, The Deers) প্রাক-বিপ্লবকালের শেষ চর্চিত ছবি। ১৯৭৮ সালে আব্বাস খিরোস্তামির ছবি গোজারেশ (گزارش, The Report)  এই দশকের শেষ মুক্তি প্রাপ্ত ছবি।

বিপ্লোবত্তোর চলচ্চিত্র : প্রথম পর্ব

ঘটনা বহুল ৭৯ এর বিপ্লব এবং বিপ্লবোত্তর চিন্তা চেতনার বিকাশ এবং কঠোর বিবাচন নীতি, যাতে মনে হয়েছিল ইরানের সিনেমার ইতিহাস শুধু বইয়ের পাতাতেই খুঁজে পাওয়া যাবে, কিন্তু এই সর্বাত্মক পরিবর্তনের মাঝেও ইরানের সিনেমার নবজাগরণ হয়।  

বর্তমানে যে সমস্ত ইরানি সিনেমা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিপুল প্রশংসিত, দেশের মধ্যে সে সব সিনেমা কালো বাজারেই খুঁজে পাওয়া যায়। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৩ সালের মধ্যে মোট ২২০৮টি সিনেমার মধ্যে ১৯৫৬টি সিনেমা নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয়। সিনেমা ইরানে হারাম হয়ে ওঠে। এর প্রধান কারণ, সিনেমাতে মহিলাদের চরিত্রায়ন এবং রোমান্টিক দৃশ্যের চিত্রায়ন, যা কিনা নতুন ইরান সরকারের নীতি বিরুদ্ধ। অথচ, ইরানের দীর্ঘ ইতিহাস বলছে, এদেশের সুফী কবিদের লেখার প্রধান বিষয়বস্তু ছিল প্রেম নিবেদন। কিন্তু ফার্সি ভাষায় লিঙ্গের প্রকাশ স্পষ্ট না, আমাদের বাংলা ভাষার মতোই, তাই এই প্রেম নিবেদনের ইহাম (আর্ট অফ এম্বিগুইটি) বড়ই সূক্ষ্ম। হাফেজের একটি কবিতা উদাহরণ নিলে ইহামের সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা হবে। 

পর্দা প্রথার আহ্বান, পর্দার আড়াল থেকে, ৭ সেটেম্বর ১৯৭৯

جز نـقـش تو در نـظر نیامد ما را

جز کوی تو رهـگذر نیامد ما را

خواب ارچه خوش آمد همه را در عهدت

حـقا کـه بـه چشم در نیامد ما را

(The only vision I have is your (?) sight

The only thing I follow is your (?) light.

Everyone finds his/her (?) repose in sleep,

Sleep from my eyes has taken flight.)

এই “তু” ( تو , you ) পুরুষ না মহিলা, দেবতা না দানব তা স্পষ্ট না। বাংলা কবিতাতেও এই রকম ইহামের নিদর্শন অজস্র, তাই অধিকাংশ সংরক্ষণশীল সমাজ এই প্রেম নিবেদনকে ঐশ্বরিক প্রেমের সাথে তুলনা করেছেন। সমস্যার বিষয় সিনেমা বাস্তববাদী। অভিনয়ের ক্ষেত্রে বা যে কোনো চাক্ষুস শিল্পের মধ্যে এই ইহাম বজায় রাখা সম্ভব না। অথচ শিল্প এবং সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় থেকে সদ্য গড়ে ওঠা সাংস্কৃতিক এবং ইসলাম নির্দেশক মন্ত্রালয়ের কাছে মানবিক প্রেমের বহিঃপ্রকাশ নিষিদ্ধ। ৮০ দশকের গোড়ায় ইরানে সিনেমার মানদণ্ড ক্রমশ নিচে নামতে শুরু করে। যে সিনেমা মুক্তি পায়, সবেতেই মহিলা এবং প্রেম বহির্ভুত। সিনেমার মধ্যে লিঙ্গ বৈষম্য এদেশে নতুন কিছু না, তবে ৬০-এর দশকে যে বৈষম্য ছেড়ে বেরিয়ে আসার প্রচেষ্টা করা হয়েছিল ফিল্মফারসি এর মাধ্যমে, তা প্রবল ভাবে ধূলিসাৎ হয়ে পরে ৮০-এর দশকে। পর্দা প্রথার কঠোর প্রয়োগ, চরম লিঙ্গ বৈষম্য ধীরে ধীরে ইরানি ছবিকে আবেগ বিহীন করে তুলছিল। চিরাচরিত সাহিত্য বা চিত্রাঙ্কনে আবেগপ্রবণ পটভূমিকায় মহিলাদের অবদান মুখ্য ছিল, চলচ্চিত্র জগৎ সে থেকে আলাদা কিছু না। ঠিক এই সময়ে, ১৯৮৫ সালে মুক্তি পায় দাভান্ডে (دونده )। একটি শিশুর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ইরানের সমাজ ব্যবস্থাকে তুলে ধরেন পরিচালক আমির নাদেরি। গতানুগতিক আবেগ প্রকাশের প্রতীকীমূলক মহিলাদের চিত্রায়নের বদলে শিশুদের নিয়ে সিনেমা করতে শুরু করে ইরানি পরিচালকগণ। পরবর্তী সময়ে ইরানের ছবি ভরে উঠেছে শিশুদের নিয়ে, বাচ্ছা হাই আসমান (بچه‌های آسمان, The Children of Heaven‎, ১৯৯৭, মাজিদ মাজিদি ), খুদা রঙ্গ (رنگ خدا, The Color of Paradise ১৯৯৯, মাজিদ মাজিদি ), জামানি বারাই মাস্তি আসবহা (زمانی برای مستی اسب‌ها, A Time for the Drunken Horses, ২০০০, বহমান কবিদি), লাখপস্থা হাম পারভেজ মিকনন্দ (لاک‌پشت‌ها هم پرواز می‌کنند, Turtles can Fly, ২০০৪,  বহমান কবিদি) প্রভৃতি সিনেমাতে শিশুশিল্পীদের মুখ্য ভূমিকা নিতে দেখা যায়।

দাভেন্দে ছবির দৃশ্য

মোহসেন মাখমালবাফ-এর পরিচালিত মাজিদ মাজিদির অভিনয় করা প্রথম ছবি “বয়কট” মুক্তি পায় ১৯৮৫ সালে। একজন কমিউনিস্ট কর্মীর মৃত্যুকে ঘিরে ছবির ভূমিকা তৈরি হয়। মাখমালবাফ সরাসরি রাজনৈতিক কিংবা ধর্মীয় সমস্যাগুলিকে সামনে না এনে মানুষের জীবনযাত্রাকে ফুটিয়ে তুলেছেন। সম্ভবত, সরাসরি সমস্যাগুলি তুলে ধরলে দেশের বিবাচন নীতির চক্রান্তে ছবি মুক্তি পেতে বেগ পেতে হতো। দশকের মাঝামাঝি সময়ে, ধর্মীয় ফিকাহ ধীরে ধীরে শিথিল হতে থাকে। তবে এসময়ে ইরান আরো একবার কঠিন সময়ের মুখোমুখি হয়। এবার জনবিপ্লব নয়, ইরাক-ইরান যুদ্ধ। যুদ্ধের পটভূমিকা উদ্বুদ্ধ করে ইরানের পরিচালকদের।  হসেন মাখমালবাফ, বাহরাম বাইজায় প্রমুখ পরিচালকগণ যুদ্ধের পটভূমিতে সিনেমা তৈরি করতে থাকেন। অদ্ভুত ভাবেই, কোনো সিনেমাতেই যুদ্ধকে পরিষ্কার করে দেখানো হয়নি — না দেখানো হয়েছে গুলি গোলা, কামান দাগা, না সেনা বাহিনীর জাতীয়তাবোধ। যুদ্ধের মরসুমে মানুষের জীবন যাত্রা তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে। বাসু গরিব কুপাক (باشو غریبه کوچک, Bashu the Little Stranger, ১৯৮৬, বাহরাম বাইজায়), আরশি এ খূবান (آروزی خوبان, The Marriage of the blessed, ১৯৮৯, মোহসেন মাখমালবাফ) ইত্যাদি যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে তৈরি গুরুত্বপূর্ণ সিনেমা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, যুদ্ধের সিনেমা তৈরি করলেই তা চট করে দর্শকের কাছে চলে আসতো না। ছবি মুক্তির বিবাচন ব্যবস্থা শিথিল হলেও তা সম্পূর্ণ অবলুপ্ত হয়নি। বাসু গরিব কুপাক ছবিটি ১৯৮৬ সালে তৈরি হলেও ৮৯ পর্যন্ত দেশের মধ্যে নিষিদ্ধ ছিল। যুদ্ধোত্তর সময়ে এই ছবি মুক্তি পায় ইরানে। ৮৭ সালে আব্বাস খিরোস্তামি আবারো শিশুশিল্পী নিয়ে ছবি তৈরি করেন। খানে দোস্ত কোজাত (خانه دوس کجاست,Where is My Friend’s Home) ছবিতে যুদ্ধ নেই, রাজনীতি নেই, ধর্মের উৎপীড়ণ নেই, এক স্কুলপড়ুয়ার খাতাবদলের কাহিনী ছবির বিষয় বস্তু হয়ে উঠেছে।

৮৮ সালে খোমিনীর মৃত্যু ইরানের রাজনীতিতে নতুন মোড় আনে। সিনেমা এবং শিল্প জগতে নতুন বিপ্লব শুরু হয়।

দ্বিতীয় পর্ব

১৯৯০, মাখমালবাফ পরিচালিত নেওয়াতে আশিকী (نوبت عاشقي, Time for Love) ইরানের সমস্ত পর্দা প্রথাকে বিদ্রুপ করে। মাল্টিপল ন্যারেটিভে চিত্রিত ছবিতে মহিলা চরিত্র গজল (گوزل) প্রধান হয়ে ওঠে । আকিরা কুরোসাওয়ার রশোমনের মতো এই ছবির গল্প অভিসারী না হয়ে অপসারি হয়ে উঠেছে যাতে পরিচালক নিজের স্বকীয়তা ফুটিয়ে তোলেন। তিনটি ন্যারেটিভের প্রথম দুটির শেষ একই হলেও, শেষ নারেটিভেটি ভিন্ন মাত্রা নিয়েছে। ত্রিকোণ প্রেমের জালে প্রথম দুটি বর্ণনায় তিনজনেরই মৃত্যু হয়, অপরদিকে শেষ বর্ণনায় তিনজনের কারোরই মৃত্যু হয় না, তবে প্রোটাগনিস্টের ভালোবাসার ট্রাজিক

দৃশ্য ফুটে ওঠে। স্বভাবতই এক জন মহিলাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা প্রেমের ত্রিভুজ নিয়ে ছবি ইরানে ভিজ্যুয়াল আর্টের মেরুদন্ড শক্ত করে।

৯০ এর দশকে ইরানের সিনেমা নতুন যৌবন ফিরে পায়। মাখমালবাফ, মাজিদি, খিরোস্তামি একের পর এক ছবি তৈরি করতে থাকেন যা সিনেমা জগতের জন্য নতুন সৃজনশিল্প তৈরি করে, সাথে দেশের সামাজিক মূল্যবোধের বিকাশ হয়। মাজিদির ১৯৯২ সালে প্রকাশিত বড়ুক মধ্যে প্রাচ্যের শিশুশ্রমের কাহিনী তুলে ধরে। ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত জাফর পানিহীর প্রথম ছবি বাদকণাকে সফেদ (ادکنک سفيد, The white balloon)  বহু প্রশংসিত হয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবগুলিতে। মাজিদ মাজিদি শিশুশিল্পীদের নিয়ে তৈরি সিনেমাতে আরো মনোযোগ দেন, এবং ফিরবছর একটি করে শিশুদের দৃষ্টি ভঙ্গিতে সমাজ ব্যবস্থাকে তুলে ধরতে থাকেন। বাচ্ছা হাই আসমান (The Children of Heaven) ছবিতে অত্যন্ত আশাবাদী ভঙ্গিতে এক পরিবারের দারিদ্র তুলে ধরেছেন মাজিদি, অন্যদিকে রঙ্গে খুদা (Color of Paradise) ছবিতে একজন দৃষ্টিহীন শিশুর মাধ্যমে সামাজিক ব্যাবস্থার ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক। 

তৃতীয় পর্ব

১৯৯৭ তে নতুন সংস্কারবাদী সরকার গঠন হয় ইরানে, যার রাষ্ট্রপতি হন মহম্মদ খাতামি। রিফর্মিস্ট সরকারের সাথে শুরু হয় দো-এ খুরদাদ বা রিফর্মিস্ট আন্দোলন। ইরানের যুব সমাজ এই সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে, এবং খোমিনীর শাসনকালে আরোপিত বিবাচনবাদকে ভেঙে নতুন সমাজ গঠনে তৎপর হয়। দেশের ইসলামীকরণ ব্যর্থ হতে চলেছে, সিনেমা, সাহিত্য সহ অন্যান্য শিল্প ও কলার পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে, এই সময় ইরানের সিনেমা উপহার পায় একগুচ্ছ নতুন পরিচালক এবং পুরোনো পরিচালকের স্বতঃস্ফূর্ত পরিচালনা। 

২০০০ এ মুক্তিপ্রাপ্ত জাফর পানিহীর ছবি দায়র (دایره‎, The Circle)। ভ্রূণ সমীক্ষা এবং কন্যা সন্তান জন্মানোর পটভূমিকা থেকে শুরু করে সামাজিক গঠন ব্যাবস্থার গভীরে প্রবেশ করে এই ছবি। পুলিশের আইনি অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলে এই ছবি। জাফর পানিহীর এইরকম নির্ভিক পরিচালনা আবার দেখা যায় অফসাইড (آفساید‎, Offside) ছবিতে। লিঙ্গ বৈষম্য এখানে প্রধান হয়ে উঠেছে। বাস্তব পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি এই ছবিতে দেখা যায় ইরানে মহিলারা সাধারণ জনসমাগমে নিষিদ্ধ। তাই ফুটবল ওয়ার্ল্ড কাপের কোয়ালিফাইং খেলায় একজন মহিলার মাঠে প্রবেশাধিকার নিয়ে গল্প বলেছেন পরিচালক।  

এই দশকের দুজন বিখ্যাত পরিচালক ইরানে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিশেষ চর্চিত। আসগার ফারহিদি এবং বহমান কবিদি। ২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কবিদির প্রথম ছবি জামানি বারাই মাস্তি আসবহা (A Time for the Drunken Horses)। ইরাক ইরান সীমান্তে কুর্দিস্তানের অস্থিরতা, শিশুশ্রম, জালিয়াতি, আর একদল শিশুর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দৃশ্য ফুটে উঠেছে। ইরানের গ্রামের মানুষরা এখনো কত মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত, তাদের প্রতিদিনের দুর্বল চিকিৎসাব্যবস্থা, এবং পণ প্রথার করুণ কাহিনী; সবই উঠে এসেছে ছবির মধ্যে দিয়ে। লাখপস্থা হাম পারভেজ মিকনন্দ (Turtles can fly) কবিদির পরবর্তী কাজ। ইরাক ইরান যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি এই ছবি। এখানেও কতগুলি নাবালক ছবির মূল চরিত্র হয়ে উঠেছে।  যুদ্ধের আগ্রাসী পরিবেশ, সেনাবাহিনীর ব্যাভিচার সাধারণ মানুষের জীবনকে কচ্ছপের মতো উল্টে রেখেছে: এই রকম পরিকল্পনার মধ্যে বাস্তবায়িত করা হয়েছে এই ছবি।

আসগার তার পরিচালিত দ্বিতীয় ছবি মুক্তি দেন ২০০৪ সালে। সাহার-এ জিবা (شهر زیبا, A Beautiful City) ছবিতে সরাসরি ধর্মের অপ্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ধরেন। প্রাচীন পুঁথির লিপিবদ্ধ স্ব-বিরোধী শ্লোকের বিশ্লেষণ করতে অক্ষম হয়ে পড়েন মোল্লা সাহেব এবং মানুষের ওপর ছেড়ে দেন ঠিক ভুল বিচার করার দায়িত্ব। ধর্মের থেকে মানুষের জীবন এখানে গুরুত্ব পূর্ণ হয়ে পড়েছে। ২০০৭ সালে মুক্তি প্রাপ্ত ছবি দরবাড়ায়ে এলি (درباره الی, About Elly), আবার সমাজ ব্যাবস্থার চিত্র তুলে ধরে। এই ছবিতে ফারহিদি দেখিয়েছেন, একজন প্রাপ্ত বয়স্ক অবিবাহিত মহিলাকে ঘর থেকে বেরোতে হলে কত রকম মিথ্যের আশ্রয় নিতে হয়। দুর্ঘটনা বসত এরকম এক মহিলার মৃত্যু হয়, এবং মিথ্যের মধ্যে দিয়ে সমাজের অপ্রিয় সত্য গুলো বেরিয়ে আস্তে থাকে।

কথোপকথন, সাহার জিবা

২০১১ সালে ফারহিদি পরিচালনা করেন জুদাই (جدایی, A Separation) । আবার ইরানের ব্লাড মানি প্রথা নিয়ে উপহাস করেছেন পরিচালক। সাথে সাথে দেখিয়েছেন যে মৌলবাদের বীজ বোনা হয়েছিল ৭৯ এর বিপ্লবে, মানুষ, বিশেষ করে আর্থিক অবস্থা যাদের বিশেষ ভালো না, তারা এখনো ধর্মের কাছে মাথানত করে চলে। ফারহিদীর বাকি সব ছবির মতো, এই ছবিও শেষ হয় এক অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে, এক অনিশ্চয়তার ভবিষ্যতের মধ্যে দিয়ে। 

ভবিষ্যত সবকিছুরই অনিশ্চিত। তাই বিপ্লবোত্তর ছবির তৃতীয় পর্ব এখনো চলছে ইরানে। এর দিশা কোনদিকে মোড় নেবে, এখনই বলা সম্ভব না। ৮০ দশকের একরকম সমাজ থেকে, আজকের ইরানের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। মাত্র ৩০ বছরের মধ্যে একটা জাতি একটা সামগ্রিক পরিবর্তনের পথে চলছে।  কেউ কেউ পুরোনো সমাজের স্মৃতিতে বেঁচে থাকতে চেয়েছে, কেউ এগিয়ে এসেছে, কেউ এগোতে চাইলেও পারে নি। তবে চিন্তা ভাবনার পরিবর্তন হচ্ছে, হয়তো আরো বদলাবে, আরো অন্য রকম হবে। রূপান্তরের ছায়া পড়ে থাকবে ইরানি ছবিতে।

তথ্যসূচি :

  1. Mir-Hosseni, Ziba. 2011. ‘Iranian Cinema: Art, Society and the State’, Middle East Report (MERIP), Summer 2001, No. 219.
  2. Mir-Hosseni, Ziba. 2007. Negotiating the Forbidden: On Women and Sexual Love in Iranian Cinema, Comparative Studies of South Asia, Africa & the Middle East 27/3, pp 673-79.
  3. Steele, Robert. 2014. British Persian Studies and the Celebrations of the 2500th Anniversary of the Founding of the Persian Empire in 1971, Thesis submitted for Master of Philosophy, Faculty of Humanities, University of Manchester.
  4. The Iranian Revolution — Past, Present and Future, Dr. Zayar, Iran Chamber Society.
  5. De Vaulx, Jean-Baptiste. 2009. An analysis of the New Iranian Cinema through four of its key directors, Young and Innocent.
  6. Houck, Kelly Lawrence. 2015. Children in Post-Revolutionary Iranian Cinema: Visions of the Future, Thesis submitted for Master of Arts, University of Texas, Austin.
  7. Sadughi, Naghmeh. 2011. The Representation of Women in Iranian Popular Cinema after the Revolution (1979), Thesis submitted for Master of Arts in Communication and Media Studies, Eastern Mediterranean University, Gazimağusa, North Cyprus.
  8. Khalaji, Mostafa; Robertson, Bronwen; Aghdami, Maryam. 2011. Cultural Censorship in Iran: Iranian Culture in a State of Emergency, Work is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-ShareAlike 3.0 Unported License.
  9. Atakan, Deya. 2006. Representation of of Women in Post-Revolutionary Iranian Cinema, Istanbul Bilgi University, Institute of Social Sciences.
  10. Cathcart, Nicole E. The New Iranian Film: Central Themes within a Framework of Values in Third Phase Post-Revolutionary Iranian Film.
  11. Persepolis, Marjane Satrapi.
  12. Prisoner of Tehran, Maria Nemat.
  13. Decadence and Downfall: The Shah of Iran’s Ultimate Party. 2016. BBC Documentary

চিত্র সংগ্রহ: আন্তর্জালিক সংযোগব্যববস্থা

ভূপদার্থবিদ্যার গবেষক। বিজ্ঞান বাদে সমাজ, সংগীত, সিনেমা চর্চায় আগ্রহী। ভ্রমণ বিলাসী এবং বইপোকা।

মন্তব্য তালিকা - “ছবিতে ইরানি ছায়া”

  1. সামগ্ৰিক ভাবে ইরানের চলচ্চিত্রের ইতিহাস এর মধ্যে দিয়ে সমাজভাবনা ও চেতনা একটি অন্যতম প্রধান সভ্যতার অন্তর্দন্দ্ব ও তার বহিঃপ্রকাশ এর একটি উপস্থাপনা।
    ভালো লাগলো আপনার বিশ্লেষণ ও প্রকাশভঙ্গি।

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।