সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

লেখক: শান্তনু ভৌমিক

লেখক মুম্বাইতে স্বনিযুক্ত। কারিগরিবিদ্যায় স্নাতক এবং ফিনান্স-এ এম.বি.এ। পেশার বাইরে শখ হলো নতুন জায়গা ঘুরে দেখা, ইতিহাস চর্চা করা এবং মাঝে-মধ্যে ঘরোয়া বাঙ্গালী রান্না করা। ফুটবলপ্রেমী এবং কট্টর মোহনবাগান সমর্থক।
‘হর্ষের হর্ষ উবে গেল’। লিখেছিলেন রবিকীর্তি। বাদামি চালুক্য বংশের প্রবল পরাক্রমশালী শাসক দ্বিতীয় পুলকেশীর সভাকবি রবিকীর্তি। কর্ণাটকের আইহোলের মেগুতি পাহাড়ের ওপর এক জৈন মন্দির আছে। সেই মন্দিরের দেওয়ালে খোদাই করা এক লেখতে, যে লেখর পোশাকি নাম 'আইহোলে লেখ'। হর্ষ কে? তাঁর হর্ষ উবে গিয়েছিল কেন? এমন হেঁয়ালি কেন রচনা করেছিলেন রবিকীর্তি? এইসব প্রশ্ন নিশ্চই আসছে আপনাদের মনে। দোষের কিছু নেই। আমারও এসেছিল। পরে বইপত্র ঘেঁটে বুঝেছিলাম যে হেঁয়ালি রচনা করেননি রবিকীর্তি। রসিকতা করেছিলেন। বিদ্রুপ করেছিলেন থানেশ্বরের (প্রাচীন নাম স্থানিশ্বর) পুষ্যভূতি বংশের চতুর্থ প্রজন্মের রাজা প্রবলপ্রতাপান্বিত হর্ষবর্ধনকে। বাপরে বাপ! কী সাহস! হর্ষবর্ধনকে নিয়ে রসিকতা! কেন এহেন রসিকতা করেছিলেন রবিকীর্তি হর্ষবর্ধনকে নিয়ে? সাহস পেয়েছিলেন কী করে? হুম, তাহলে তো একটু কষ্ট করে জানতে হবে আইহোলে লেখর প্রেক্ষাপট।
"উস তরফ মত যাইয়ে, উধার সব বন্ধ হ্যায়"। গন্তব্যস্থলে যখন পৌঁছলাম তখন বিকেল ৫'টা বাজতে আর মিনিট দশ-পনেরো বাকি ছিল। আর যা দেখার জন্য আসা, তার ঝাঁপ পড়ে যাওয়ার কথা বিকেল ৫'টায়। অতএব, হাতে সময় ছিল না বললেই চলে। পার্কিং লটে গাড়ি পার্ক করতে করতেই দেখে নিয়েছিলাম যে পুরো জায়গাটা পাঁচিল দিয়ে ঘেরা আর আকৃতিতে তা হল ইংরেজি বর্ণমালার 'এল' অক্ষরের মত। গাড়ি থেকে নেমে খেয়াল করলাম যে যে সেই 'এল'এর একটা বাহুতে লোকজন না থাকলেও, আর এক বাহুতে বেশ কয়েকজন ঘোরাঘুরি করছে। কপাল ঠুকে সেদিকেই দিলাম হাঁটা যদি শেষ ৫-১০ মিনিটে কিছু দেখা যায় এই আশা নিয়ে। তখনই পিছন থেকে ভেসে এল অযাচিত উপদেশবাণী - "উস তরফ মত যাইয়ে, উধার সব বন্ধ হ্যায়"।