কবীন্দ্রাচার্য ও তাঁর পুথিশালা
উপোদ্ঘাত
আজকাল আন্তর্জালের দৌলতে গ্রন্থাগার বললেই ডিজিটাল গ্রন্থাগারের কথা মনে হয়। কিছুদিন আগে পর্যন্তও গ্রন্থাগার বলতে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের বহুসংখ্যক গবেষক বা ছাত্রের পাঠের সুবিধাযুক্ত বিপুল মুদ্রিত পুস্তকের সংগ্রহশালার কথা চোখের সামনে ভেসে উঠত। কারও হয়তো কলকাতার জাতীয় গ্রন্থাগারের কথা মনে হতো, কারও বা ব্রিটিশ লাইব্রেরির কথা। ভারতীয় উপমহাদেশে ছাপা বইয়ের সূত্রপাত বেশি দিনের নয়। এর পূর্ববর্তী দীর্ঘ কালপর্বে এই উপমহাদেশের গ্রন্থভাণ্ডারগুলি ছিল হাতে লেখা পাণ্ডুলিপির পুথিশালা। ভারতীয় উপমহাদেশে গ্রন্থাগারগুলি মূলত শাসকদের বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায় স্থাপিত হয়েছিল, তবে অন্ত-মধ্যযুগে কিছু উল্লেখনীয় ব্যক্তিগত পুথিশালাও গড়ে উঠেছিল।
আধুনিক ভারতীয় লেখকরা সচরাচর প্রাচীন বা আদি-মধ্যযুগের ভারতের গ্রন্থাগার প্রসঙ্গে তক্ষশিলা বা নালন্দা মহাবিহারের গ্রন্থাগারের কথা উল্লেখ করেন। অন্ত-মধ্যযুগের ভারতের ক্ষেত্রে সাধারণত তুর্ক-আফগান সুলতান, মোগল বাদশাহ বা মারাঠা শাসকদের রাজকীয় গ্রন্থাগারের কথা উল্লিখিত হয়। দক্ষিণ ভারতের মন্দির ও পশ্চিম ভারতের জৈন মঠগুলিতে সংরক্ষিত পুথির ভাণ্ডারগুলির সম্পর্কেও বেশ কিছু কথা লেখা হয়েছে। কিন্তু, উত্তর ভারতের অধিকাংশ ব্যক্তিগত পুথিশালার স্মৃতি প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এমনই এক পুথিশালা ও সেই পুথিশালার নির্মাতার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশে এই নিবন্ধের উপস্থাপনা।
কবীন্দ্রাচার্য – জীবনকথা
কবীন্দ্রাচার্য সরস্বতী ছিলেন সপ্তদশ শতকের মোগল বাদশাহ শাহজাহান (রাজত্বকাল ১৬২৮–১৬৫৮ সাধারণাব্দ) ও আওরঙ্গজেবের (রাজত্বকাল ১৬৫৮–১৭০৭ সাধারণাব্দ) আমলের বারাণসীর এক সমৃদ্ধ বিদ্বান সন্ন্যাসী। তিনি দশনামী সম্প্রদায়ের সরস্বতী শাখার দণ্ডী সন্ন্যাসী ছিলেন।১ আধুনিক বিদ্বান পরশুরাম গোড়ের অনুমান তাঁর জীবৎকাল ১৬০০-১৬৭৫ সাধারণাব্দ।২ তাঁর জীবন সম্পর্কে জানার জন্য দুটি প্রধান উত্স – কৃষ্ণ উপাধ্যায় সংকলিত কবীন্দ্রাচার্যের সমসাময়িক কাশী ও প্রয়াগের ৬৯ জন বিদ্বানের তাঁর উদ্দেশে রচিত সংস্কৃত ও মারাঠি রচনার পদ্যাবলি (কবিতা সংকলন) সমন্বিত সংবর্ধনা গ্রন্থ ‘কবীন্দ্রচন্দ্রোদয়’ এবং কবীন্দ্রাচার্যের রচিত সংস্কৃত কাব্যগ্রন্থ ‘কবীন্দ্রকল্পদ্রুম’। কবীন্দ্রাচার্যের ব্রজভাষায় রচিত কাব্য ‘কবীন্দ্রকল্পলতা’ এবং ৩০ জন সমসাময়িক বিদ্বানের ব্রজভাষায় তাঁর উদ্দেশে রচিত কবিতা সমন্বিত সংবর্ধনা গ্রন্থ ‘কবীন্দ্রচন্দ্রিকা’ থেকেও তাঁর জীবন সম্পর্কে কিছু তথ্য জানা যায়। ফরাসি চিকিত্সক ও পর্যটক ফ্রাঁসোয়া বার্নিয়ার-এর ভ্রমণবৃত্তান্তেও কবীন্দ্রাচার্যের উল্লেখ রয়েছে।
কবীন্দ্রাচার্যের জন্ম গোদাবরী নদীর তীরে পুণ্যভূমি (বা পণ্যভূমি, সম্ভবত নাশিক) শহরে ঋগ্বেদের আশ্বলায়ন শাখার অনুসারী এক মহারাষ্ট্রীয় ব্রাহ্মণ পরিবারে। তিনি স্বল্প বয়সে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন।৩ হরপ্রসাদ শাস্ত্রী অনুমান করেছেন, শাহজাহানের আহমদনগর রাজ্য জয়ের পর তিনি সেখান থেকে বারাণসী চলে আসেন।৪ কবীন্দ্রাচার্যের প্রকৃত নাম জানা নেই, তাঁকে কবীন্দ্র উপাধি সম্ভবত শাহজাহান দিয়েছিলেন। আধুনিক বিদ্বানদের অনুমান, তাঁর প্রকৃত নাম কৃষ্ণ বা কৃষ্ণ কথাটি তাঁর প্রকৃত নামের অংশ ছিল। সমসাময়িক সংস্কৃত ও ব্রজভাষার বিদ্বানদের তাঁর উদ্দেশে রচিত প্রশস্তি থেকে বোঝা যায় কবীন্দ্রাচার্য বারাণসীর তত্কালীন বিদ্বানদের মধ্যে সর্বাধিক প্রভাবশালী বলে পরিগণিত হতেন।
সপ্তদশ শতকের উত্তর ভারতের সংস্কৃত বিদ্বানদের মধ্যে কবীন্দ্রাচার্যের প্রসিদ্ধির মুখ্য কারণ তাঁর অনুরোধে মোগল বাদশাহ শাহজাহানের কাশী ও প্রয়াগে তীর্থকর রদ। ফার্সি দরবারি ইতিবৃত্তগুলিতে কোনও উল্লেখ না থাকায় কাশী ও প্রয়াগে তীর্থকর ঠিক কবে চালু হয়েছিল তা জানা যায়নি।৫ ‘কবীন্দ্রচন্দ্রোদয়’ গ্রন্থের সংস্কৃত শ্লোকগুলি থেকে আধুনিক বিদ্বান হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ও গঙ্গানাথ ঝা অনুমান করেছিলেন কবীন্দ্রাচার্য কাশী ও প্রয়াগের তীর্থকর রদ করানোর অনুরোধ নিয়ে তাঁর অনুগামীদের নিয়ে আগ্রার মোগল দরবারের ‘দিওয়ান-ই-আম’-এ উপস্থিত হয়েছিলেন। সেখানে কবীন্দ্রাচার্যের পাণ্ডিত্যপূর্ণ ভাষণে শাহজাহান ও শাহজাদা দারা শিকোহ ব্যথিত হন এবং তীর্থকর প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। শাহজাহান তাঁকে ‘সর্ববিদ্যানিধান’ উপাধি প্রদান করেন।৬ পরবর্তীকালে আধুনিক বিদ্বান রাঘবন ‘কবীন্দ্রচন্দ্রোদয়’ গ্রন্থের ঐ একই শ্লোকগুলির ভিত্তিতে অনুমান করেছেন, কবীন্দ্রাচার্য মোগল দরবারে গিয়ে প্রতিদিন হিন্দু শাস্ত্রগ্রন্থ ব্যাখ্যা করতেন। শাহজাহান, দারা শিকোহ ও মোগল দরবারে আগত অভিজাতবর্গ তাঁর এই শাস্ত্রব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হন। শাহজাহান প্রথমে তীর্থকর রদ করার বিষয়টা এড়িয়ে গিয়ে কবীন্দ্রাচার্যকে উপঢৌকন দিয়ে বিদায় দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কবীন্দ্রাচার্যের অনুরোধ মেনে নিয়ে তীর্থকর প্রত্যাহার করেন।৭ ফার্সি দরবারি ইতিবৃত্তগুলিতে কাশী ও প্রয়াগ থেকে তীর্থকর প্রত্যাহারের এই ঘটনাটিরও কোনও উল্লেখ নেই এবং সম্ভবত এই অনুল্লেখ ইচ্ছাকৃত। ‘কবীন্দ্রচন্দ্রোদয়’ গ্রন্থের প্রশস্তিসূচক শ্লোকগুলিতে এই ঘটনাটির সম্পর্কে উল্লেখ থাকলেও৮ ঘটনাটি ঠিক কবে ঘটেছিল তার কোনও উল্লেখ নেই।
ফার্সি দরবারি ইতিবৃত্ত গ্রন্থগুলিতে কবীন্দ্রাচার্যকে কবীন্দ্র বা কবীন্দ্র সন্ন্যাসী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই গ্রন্থগুলিতে মোগল দরবারে কবীন্দ্রাচার্যের ব্রজভাষায় রচিত কাব্য ও সঙ্গীতের প্রশংসা লাভের উল্লেখ রয়েছে। মুহম্মদ সালেহ্ কাম্বোহ্ তাঁর ‘আমল-ই-সালেহ’ গ্রন্থে জানিয়েছেন, শাহজাহান কবীন্দ্র সন্ন্যাসীর তাসনিফাত-ই-হিন্দি (অর্থাৎ ব্রজভাষায় লেখা রচনাবলী) ও ধ্রুপদ সঙ্গীতে সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে সম্মানসূচক অঙ্গবস্ত্র প্রদান করেন ও বাত্সরিক ২ হাজার রূপয়া পারিতোষিকের ব্যবস্থা করেন।৯ মুহম্মদ ওয়ারিস তাঁর ১৬৫৬ সাধারণাব্দে সমাপ্ত ‘পাদশাহনামা’ গ্রন্থে শাহজাহানের রাজত্বকালের ২৪তম বর্ষে (১৬৫০-১৬৫১ সাধারণাব্দ), তাঁর (চান্দ্র পঞ্জিকা অনুযায়ী) ৬১তম জন্মদিনে তাঁর তুলাপুরুষদানের বিবরণ প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছেন, শাহজাহান তাঁর দরবারি কবীন্দ্র সন্ন্যাসীর ধ্রুপদ সঙ্গীত ও হিন্দি (অর্থাৎ ব্রজভাষায়) কাব্য রচনায় পারদর্শিতায় সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে একটি অশ্ব, সম্মানসূচক অঙ্গবস্ত্র ও ২ হাজার রূপয়া পারিতোষিক প্রদান করেন।১০ মুহম্মদ ওয়ারিস তাঁর ‘পাদশাহনামা’ গ্রন্থের অন্যত্র লিখেছেন, কবীন্দ্র ১০৬২ হিজরি সনের জ্বিলকদ মাসের ২ তারিখে (১৬৫২ সাধারণাব্দের ৪ অক্টোবর) লাহোরে শাহজাহানের সঙ্গে দেখা করলে তাঁকে ১৫০০ রূপয়া প্রদান করা হয়েছিল।১১ শাহজাহানের শাসনকালে মোগল দরবার থেকে প্রাপ্ত অর্থ যে কবীন্দ্রাচার্যকে যথেষ্ট আর্থিক স্বচ্ছলতা এনে দিয়েছিল, তার প্রমাণ ‘কবীন্দ্রচন্দ্রোদয়’ গ্রন্থে উল্লিখিত মহাদেব ভট্ট পট্টবর্ধনের তাঁকে অর্থ প্রদানের অনুরোধ।১২
কবীন্দ্রাচার্যের সাহিত্য ও সঙ্গীতচর্চা
কবীন্দ্রাচার্য সংস্কৃত ও ব্রজভাষায় রচনার জন্য প্রসিদ্ধি লাভ করেছিলেন। তাঁর সংস্কৃত গ্রন্থসমূহের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উল্লেখনীয় ‘জগদ্বিজয়চ্ছন্দঃ’ কাব্য শিবের বন্দনা করে রচিত। সংস্কৃত ভাষায় রচিত সাহিত্য বা অভিলেখে নাম বা উপাধি হিসাবে ‘জগদ্বিজয়’ কথাটি এর পূর্বে দেখা যায়নি। এই কথাটি সম্ভবত ফার্সি ভাষার সংস্কৃত রূপ এবং এর মধ্যে মোগল বাদশাহ জাহাঙ্গিরের নামের ইঙ্গিত বিদ্যমান।১৩ কবীন্দ্রাচার্য রচিত অন্যান্য সংস্কৃত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘পদচন্দ্রিকা’ নামের দণ্ডীর দশকুমারচরিত কাব্যের ৮টি উচ্ছাসের ব্যাখ্যামূলক গ্রন্থ (পূর্বপীঠিকা ও উত্তরপীঠিকার ব্যাখ্যা নেই), ‘যোগভাস্কর’ নামের একটি গ্রন্থ, শতপথব্রাহ্মণের একটি ভাষ্য এবং ‘মীমাংসাসর্বস্ব’। শেষ তিনটি গ্রন্থের সম্পর্কে অবশ্য এখনও পর্যন্ত বিশেষ কিছু জানা যায়নি।
কবীন্দ্রাচার্য সংস্কৃত ‘যোগবাসিষ্ঠসার’ (বা ‘লঘুযোগবাসিষ্ঠসার’) গ্রন্থের ১০টি প্রকরণের ‘ভাষা যোগবাসিষ্ঠসার’ (বা ‘জ্ঞানসার’) নামে ব্রজভাষায় দোহা ছন্দে একটি কাব্যানুবাদ রচনা করেছিলেন। এই গ্রন্থের শেষে একটি দোহায় গ্রন্থরচনার তারিখ ১৭১৪ বিক্রম সংবতের (১৬৫৮ সাধারণাব্দ) ফাল্গুন মাসের শুক্লা একাদশী বলে উল্লেখ করে হয়েছে। আধুনিক বিদ্বানদের অনুমান কবীন্দ্রাচার্য এই গ্রন্থটি দারা শিকোহর ব্যবহারের জন্য রচনা করেছিলেন।১৪ ১৭৬৬ সাধারণাব্দে লখনউ শহরের অধিবাসী সীতারাম কায়স্থ সকসেনা ‘রাফি-উল-খিলাফ’ (বিরোধ উন্মূলয়িতা) নামে এই গ্রন্থের ফার্সি অনুবাদ সমেত একটি ব্যাখ্যামূলক গ্রন্থ রচনা করেছিলেন।১৫ কবীন্দ্রাচার্যের বাদশাহ শাহজাহান এবং দারা শিকোহ ও তাঁর পত্নী নাদিরা বানু বেগমকে প্রশংসা করে ব্রজভাষায় লেখা কবিতা ও সঙ্গীত ‘কবীন্দ্রকল্পলতা’ কাব্যগ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। এই গ্রন্থের শুরুতে মঙ্গলাচরণ সংস্কৃত ভাষায় লেখা, তারপর ব্রজভাষায় চৌপাই, সবৈয়া, কবিত্ব, ভুজঙ্গপ্রয়াত ও দোহা ছন্দে রচিত কবিতাগুলি সংকলিত, গ্রন্থের কয়েকটি শীর্ষক ও পুষ্পিকা সংস্কৃতে রচিত।১৬ সংস্কৃত বিদ্বান হয়েও ব্রজভাষায় কাব্য রচনার প্রতি তাঁর সঙ্কোচের কথা কবীন্দ্রাচার্য এই গ্রন্থের প্রথমেই ব্যক্ত করেছেন (“ভাষা করত আবতি হ্যায় লাজ”)। এই গ্রন্থে তাঁর রচিত বেশ কয়েকটি ধুরপদ (ধ্রুপদ) সঙ্গীত দেখতে পাওয়া যায়। এই ধুরপদগুলিতে শাহজাহান নায়ক হিসাবে বর্ণিত। ‘কবীন্দ্রকল্পলতা’ গ্রন্থে শাহজাহান প্রতিষ্ঠিত নতুন শহর শাহজাহানাবাদের (দিল্লি) প্রশংসা করে রচিত কবিতাও স্থান পেয়েছে।১৭ এই গ্রন্থের অর্ধেকের বেশি অংশ শাহজাহানের উদ্দেশে রচিত।১৮ কবীন্দ্রাচার্যের দার্শনিক ভাবনা ‘কবীন্দ্রকল্পলতা’ গ্রন্থে সংকলিত তত্ত্বজ্ঞান বিষয়ক কবিতায় পরিস্ফুট।
কবীন্দ্রাচার্যের নিজের মারাঠি ভাষায় কোনও রচনার কথা জানা যায়নি। কিন্তু, কবীন্দ্রাচার্যের গ্রন্থাগারের পুস্তকসূচি ও ‘কবীন্দ্রচন্দ্রোদয়’ গ্রন্থে সংকলিত মহাদেব ভট্ট পট্টবর্ধনের তাঁর উদ্দেশে রচিত মারাঠি কবিতা থেকে বোঝা যায় কবীন্দ্রাচার্য সংস্কৃত ও ব্রজভাষা ছাড়া নিজের মাতৃভাষা মারাঠিতেও যথেষ্ট দড়ো ছিলেন।
কবীন্দ্রাচার্যের পুথিশালা
কবীন্দ্রাচার্য সপ্তদশ শতকের মাঝামাঝি কাশীতে বরুণা নদীর তীরে বেদান্তী বাগ (বা বেদান্তী কা বাগ) এলাকায় অবস্থিত তাঁর বাসগৃহে সংস্কৃত গ্রন্থের পাণ্ডুলিপির একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রহভাণ্ডার নির্মাণ করেছিলেন।১৯ আধুনিক বিদ্বান অড্রে ট্রুশকে অনুমান করেছেন, কবীন্দ্রাচার্য শাহজাহানের কাছ থেকে প্রাপ্ত বিপুল অর্থ তাঁর গ্রন্থাগার গড়ে তুলতে ব্যয় করেছিলেন।২০ আধুনিক বিদ্বান হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ও গঙ্গানাথ ঝা অনুমান করেছেন, কৃষ্ণ ভট্ট (অর্থাৎ ‘কবীন্দ্রচন্দ্রোদয়’ গ্রন্থের সংকলক কৃষ্ণ উপাধ্যায়) তাঁর ভাণ্ডারী (অর্থাৎ গ্রন্থাগারিক) ছিলেন।২১ কবীন্দ্রাচার্যের বাসগৃহ ও গ্রন্থাগারের বর্তমান অবস্থান চিহ্নিত করার জন্য কোনও প্রয়াস করা হয়েছে কিনা জানা নেই। কবীন্দ্রাচার্যের মৃত্যুর পর তাঁর সংগৃহীত পাণ্ডুলিপিগুলি বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে, উনিশ শতকে তাঁর সংগ্রহের বেশ কিছু গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি কাশীর সরকারি সংস্কৃত গ্রন্থাগার ও বিভিন্ন দেশীয় রাজ্যগুলির রাজকীয় গ্রন্থাগারে স্থান লাভ করে। কবীন্দ্রাচার্যের গ্রন্থাগারে সংগৃহীত প্রতিটি গ্রন্থের প্রতিলিপি যে অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে লিপিবদ্ধ ও প্রায় ত্রুটিহীন ছিল তা পরবর্তীকালে বিভিন্ন দেশীয় রাজ্যের গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত পাণ্ডুলিপিগুলি দেখলে বোঝা যায়। তাঁর গ্রন্থাগারের পাণ্ডুলিপিগুলির মধ্যে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী অনুলিপিকরের প্রস্তুত করা প্রতিলিপির সন্ধান পাওয়া যায়। তাঁর গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত সালিমের (অর্থাৎ মোগল বাদশাহ জাহাঙ্গির) ভাণ্ডারের সিলমোহরযুক্ত বামন রচিত ‘কাব্যালঙ্কারসূত্রবৃত্তি’ গ্রন্থের একটি প্রতিলিপি (বর্তমানে সম্পূর্ণানন্দ সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসরে অবস্থিত সরস্বতী ভবন পুস্তকালয়ে সংরক্ষিত) আল্লাবখশ নামের অনুলিপিকর প্রস্তুত করেছিলেন বলে জানা যায়।২২
কবীন্দ্রাচার্যের গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত পাণ্ডুলিপিগুলির প্রথম পৃষ্ঠায় বলিষ্ঠ অক্ষরে দেবনাগরী লিপিতে লেখা থাকত ‘শ্রী সর্ববিদ্যানিধান কবীন্দ্রাচার্য সরস্বতীনাং পুস্তকম’। বিশ শতকের গোড়ায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী জানিয়েছেন, তখনও কাশীতে কবীন্দ্রাচার্যের স্বাক্ষরিত পাণ্ডুলিপি পাওয়া যেত এবং কবীন্দ্রাচার্যের স্বাক্ষরিত পাণ্ডুলিপিগুলি শুদ্ধ ও ত্রুটিহীন বলে কাশীর পণ্ডিতরা অন্য পুথির তুলনায় এই পুথিগুলিই সংগ্রহ করতে পছন্দ করতেন।২৩
ফ্রাঁসোয়া বার্নিয়ার-এর ভারত ভ্রমণ বিষয়ক গ্রন্থে তাঁর ১৬৬৭ সালের ৪ অক্টোবর তারিখে লেখা একটি পত্র সংকলিত হয়েছে। এই পত্রে তিনি বারাণসীতে কবীন্দ্রাচার্যের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করেছেন, যদিও তিনি কবীন্দ্রাচার্যের নাম উল্লেখ করেননি। বার্নিয়ার বারাণসী ও দিল্লিতে তাঁর সঙ্গে শ্বেত রেশমের ধুতি ও রক্তিম রেশমের উত্তরীয় পরিহিত সুগঠিত চেহারার কবীন্দ্রাচার্যের সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা লিখেছেন।২৪ আওরঙ্গজেব ১৬৫৮ সাধারণাব্দে দিল্লিতে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর কবীন্দ্রাচার্যের ২ হাজার রূপয়া পারিতোষিক বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কবীন্দ্রাচার্য এই পারিতোষিক আবার চালু করার জন্য আওরঙ্গজেবের কাছে সুপারিশ করার অনুরোধ নিয়ে ভারতে বার্নিয়ারের আগা (আশ্রয়দাতা) দানিশমন্দ খানের সঙ্গে দিল্লিতে দেখা করতে আসতেন। দানিশমন্দ খান আওরঙ্গজেবের দরবারে বিভিন্ন সময়ে নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলেন। বার্নিয়ার তাঁর লেখা পত্রে কবীন্দ্রাচার্যের আমন্ত্রণে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে বারাণসীর ৬ জন বিদ্বানের সঙ্গে মিলিত হয়ে ধর্মীয় উপাসনারীতি সম্পর্কে আলোচনা করেছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন। বার্নিয়ার তাঁর পত্রে বারাণসীতে দেখা সংস্কৃতে রচিত দর্শন, চিকিত্সাশাস্ত্র ও অন্য অনেক বিষয়ের গ্রন্থে পরিপূর্ণ একটি বৃহৎ কক্ষেরও উল্লেখ করেছেন।২৫ আধুনিক বিদ্বান পরশুরাম গোড়ে অনুমান করেছেন বার্নিয়ার উল্লিখিত ‘বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার’ ও ‘বৃহৎ কক্ষ’ আসলে একই গ্রন্থাগার এবং এই গ্রন্থাগারটি ফরাসি পর্যটক জাঁ বাপ্তিস্ত তাভার্নিয়ে-এর ভারত ভ্রমণ বিষয়ক গ্রন্থে উল্লিখিত মির্জা রাজা জয়সিংহের বারাণসীতে স্থাপিত সংস্কৃত চতুষ্পাঠির সঙ্গে যুক্ত একটি পুথিশালা। কবীন্দ্রাচার্য সন্ন্যাসী ছিলেন, তাই তাঁর কোনও নিজস্ব আবাসগৃহ বা নিজস্ব পুথিশালা ছিল না।২৬ কিন্তু, তাঁর এই অনুমান সম্ভবত ঠিক নয়। ‘ধর্মপ্রবৃত্তি’ গ্রন্থের একটি পাণ্ডুলিপির শেষে একটি সংস্কৃত শ্লোকে স্পষ্ট লেখা আছে, ১৭১৩ বিক্রমসংবতের (১৬৫৭ সাধারণাব্দ) অর্জুন (চৈত্র) মাসের শুক্ল পক্ষের পঞ্চমী তিথিতে, মঙ্গলবার শ্রীকণ্ঠ কবীন্দ্র গৃহে ঐ প্রতিলিপি তৈরি করেছেন।২৭
বিশ শতকের গোড়ায় বারাণসীর একটি মঠ থেকে মারাঠি ভাষায় লেখা কবীন্দ্রাচার্যের গ্রন্থাগারে সংগৃহীত গ্রন্থসমূহের একটি সূচির পাণ্ডুলিপি খুঁজে পাওয়া যায়। এই পাণ্ডুলিপিটি ১৯২১ সালে বরোদা থেকে প্রকাশিত হয়। ‘কবীন্দ্রাচার্য সূচীপত্র’ নামে প্রকাশিত এই সূচিতে ২১৯২টি গ্রন্থের পাণ্ডুলিপির নামের উল্লেখ রয়েছে। এই সূচি থেকে বোঝা যায়, বেদসংহিতা, ব্রাহ্মণ, কল্পসূত্র, ব্যাকরণ, ন্যায় ও নব্যন্যায়, বেদান্ত, গীতাভাষ্য, সাংখ্য, যোগ, মীমাংসা, ধর্মশাস্ত্র, স্মৃতিনিবন্ধ, জ্যোতিষ, বৈদ্যশাস্ত্র (আয়ুর্বেদ), রসায়ন, সূপশাস্ত্র (রন্ধনবিদ্যা), তন্ত্রশাস্ত্র, রামায়ণ ও মহাভারত, পুরাণ ও উপপুরাণ, ভাগবতপুরাণের ভাষ্য, মাহাত্ম্য, পাঞ্চরাত্র আগম, শৈব আগম, কোশগ্রন্থ (অভিধান), কাব্য, অলঙ্কার, চম্পূ, নাটক, ভাণ, সঙ্গীত, ছন্দ, নাস্তিক (জৈন) গ্রন্থ, নীতি, কথা (ইতিবৃত্ত ও কাহিনি), কৌতুক এবং পরীক্ষা (গুণাগুণ নির্ণয়) বিষয়ক সংস্কৃত গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি কবীন্দ্রাচার্যের গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত ছিল।
কবীন্দ্রাচার্য স্বাক্ষরিত সঙ্গীত বিষয়ক কয়েকটি পাণ্ডুলিপির ‘কবীন্দ্রাচার্য সূচীপত্র’ তালিকায় কোনও উল্লেখ নেই। আবার এই তালিকায় উল্লিখিত ভাস্কররায় রচিত ‘ললিতাসহস্রনামভাষ্য’ (১৭২৯ সাধারণাব্দ), নাগেশভট্ট রচিত ‘লঘুশব্দেন্দুশেখর’ (অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধ), ব্রহ্মানন্দ রচিত ‘হঠপ্রদীপজ্যোৎস্না’ (উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ) প্রমুখ গ্রন্থ কবীন্দ্রাচার্যের প্রয়াণের পরবর্তীকালের রচনা। এই সব তথ্যের নিরিখে অধিকাংশ আধুনিক বিদ্বানদের অনুমান ‘কবীন্দ্রাচার্য সূচীপত্র’ তালিকাটি কবীন্দ্রাচার্যের জীবনাবসানের দীর্ঘকাল পরে সংকলিত।২৮
শেষকথন
কবীন্দ্রাচার্যের গ্রন্থাগার সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্য থেকে অনুমান করা যায় অন্ত-মধ্যযুগের উত্তর ও পূর্ব ভারতে শাসক ও অভিজাতবর্গের গ্রন্থশালাগুলির পাশাপাশি সমৃদ্ধ বিদ্বানদের নিজস্ব গ্রন্থাগারগুলিও ছিল জ্ঞানচর্চার অন্যতম উত্স। আধুনিক বিদ্বান বিমল কুমার দত্ত অনুমান করেছেন মোগল আমলে বারাণসী, মিথিলা ও নদীয়ার গ্রন্থাগারগুলিতে ধর্ম, দর্শন, চিকিত্সাবিদ্যা, বিজ্ঞান ও ইতিহাস সংক্রান্ত গ্রন্থের বিপুল সংখ্যক পাণ্ডুলিপি সংরক্ষিত ছিল।২৯ অন্ত-মধ্যযুগের কবীন্দ্রাচার্যের নিজস্ব গ্রন্থাগারের বিষয়ভিত্তিক গ্রন্থসূচি রচনার পরিকল্পনার সঙ্গে আধুনিক গ্রন্থাগার বিজ্ঞানের ভাবনার মিল লক্ষণীয়। এই পুথিশালায় সংরক্ষিত পাণ্ডুলিপিগুলির বিশ্লেষণ করে তত্কালীন নিজস্ব পুথিশালায় পুথির রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রতিলিপি তৈরি করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানা সম্ভব।
টীকা
১. যদুনাথ সরকার জানিয়েছেন দশনামী সম্প্রদায়ের সরস্বতী শাখার সন্ন্যাসীরা কেবল দণ্ডীই হতেন; দেখুন: Jadunath Sarkar, ‘A History of Dasnami Naga Sanyasis’, p. 57 ।
২. P.K. Gode, “Bernier and Kavīndrācārya Sarasvatī at the Mughal Court” in ‘Studies in Indian Literary History, Vol. II’; Bombay: Singhi Jain Śāstra Śikshāpīth, Bhāratīya Vidyā Bhavan, 1954, p. 376.
৩. “পহিলে গোদা তীর নিবাসী।/ পাছে আই বসে হ্যাঁয় কাসী॥/ সব বিষয়নি তে ভএ উদাস।/ বাল দসা মেঁ লয়ো সন্যাস॥/ উনি সব বিদ্যা পঢ়ী পঢ়াঈ।/ বিদ্যা নিধি সু কবীন্দ্র গুসাঈ॥/ ঋগ্বেদী অসুলায়ন সাষা।/ তিন কীনী হ্যায় কবিতা ভাষা॥” – কবীন্দ্রকল্পলতা ৫-৮; দেখুন: লক্ষ্মীকুমারী চুণ্ডাবত সম্পাদিত, ‘শ্রীমদ কবীন্দ্রাচার্য সরস্বতী সর্ববিদ্যানিধান বিরচিত কবীন্দ্রকল্পলতা’; জয়পুর: সঞ্চালক, রাজস্থান পুরাতত্ত্বান্বেষণ মন্দির, ১৯৫৮, পৃ. ১।
৪. Haraprasad Shastri, “Dakshini Pandits at Benares” in ‘The Indian Antiquary, A Journal of Oriental Research, Vol. XLI – 1912’; Delhi: Swati Publications, 1985, p. 11.
৫. Har Dutt Sharma, “A forgotten event of Shah Jehan’s Reign – Kavindrcandrodaya” in ‘Mahamahopadhyaya Kuppuswami Sastri Commemoration Volume’; Madras: G.S. Press, 1936, p. 54.
৬. Haraprasad Shastri, “Dakshini Pandits at Benares”, p. 11; R. Ananta Krishna Sastrty edited, ‘Kavindracharya List’; Baroda: Central library, 1921, pp. iv-v.
৭. V. Raghavan, “Kavīndrācārya Sarasvatī” in Bimala Churn Law edited, ‘D.R. Bhandarkar Volume’; Calcutta: Indian Research Institute, 1940, pp. 161-162.
৮. কবীন্দ্রচন্দ্রোদয় গ্রন্থে কৃষ্ণ উপাধ্যায়ের প্রশস্তি শ্লোক ৭, ক্ষমানন্দ বাজপেয়ীর প্রশস্তি শ্লোক ৫৮, পূর্ণানন্দ ব্রহ্মচারীর প্রশস্তি শ্লোক ১১৩-১১৮ ও হীরারাম কবির প্রশস্তি শ্লোক ১৬৯-১৭১; দেখুন: Har Dutt Sharma and M.M. Patkar edited, ‘Kavīndracandrodaya’; Poona: Oriental Book Agency, 1939, pp. 1, 8, 16, 23-24.
৯. Allison Busch, “Hidden in Plain View: Brajbhasha Poets at the Mughal Court” in Modern Asian Studies, Volume 44, Issue 02, March 2010’; p 291.
১০. Tara Chand, “Rāfi’-ul-Khilāf of Sita Ram Kayastha Saksena, of Lucknow (Kavīndrācārya’s Jñānasāra and its Persian Translation” in ‘Journal of the Ganganatha Jha Research Institute, Vol. II, Part I, November, 1944’; Allahabad: Ganganatha Jha Research Institute, 1944, pp. 8-9.
১১. K.R. Qanungo, “Some Side-lights on the Character and Court-life of Shah Jahan” in S. Krishnaswamy Aiyangar edited ‘Journal of Indian History, Vol. VIII, Part I, April 1929’; Madras: Diocesan Press, pp. 50-51.
১২. Har Dutt Sharma and M.M. Patkar edited, ‘Kavīndracandrodaya’, p. v.
১৩. C. Kunhan Raja edited, ‘Jagadvijayacchandas of Kavindracharya’; Bikaner: Anup Sanskrit Library, 1945, pp. xxvii-xlv.
১৪. V.G. Rahurkar, “The Bhasa-Yogavasisthasara of Kavindracarya Sarasvati” in R. Ramanujachari edited, ‘Proceedings and Transactions of the All India Oriental Conference, Eighteenth Session, Annamalainagar, December 1955’; Annamalainagar: The Reception Committee, 18th Session of the All India Oriental Conference, 1958, pp. 471-482.
১৫. Tara Chand, “Rāfi’-ul-Khilāf of Sita Ram Kayastha Saksena, of Lucknow (Kavīndrācārya’s Jñānasāra and its Persian Translation”, p. 7.
১৬. V. Raghavan, “The Kavīndrākalpalatika of Kavīndrācārya Sarasvatī” in ‘Indica: The Indian Historical Research Institute Silver Jubilee Commemoration Volume’; Bombay: St. Xavier’s College, 1953. pp. 335-341.
১৭. Allison Busch, ‘Poetry of Kings: The Classical Hindi Literature of Mughal India’; New York: Oxford University Press, 2011, pp. 148-153.
১৮. Allison Busch, “Hidden in Plain View: Brajbhasha Poets at the Mughal Court”, p 289.
১৯. বলদেব উপাধ্যায়, ‘কাশী কী পাণ্ডিত্য পরম্পরা’; বারাণসী: বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশন, ১৯৮৩, পৃ. ৭৭-৮৫।
২০. Audrey Truschke, “Contested History: Brahmanical Memories of Relations with the Mughals” in ‘Journal of the Economic and Social History of the Orient, Vol. 58, No. 4’; Leiden: Brill, 2015, p. 421.
২১. Haraprasad Shastri, “Dakshini Pandits at Benares”, pp. 11-12; R. Ananta Krishna Sastrty edited, ‘Kavindracharya List’, p. iv.
২২. Ibid, pp. iv, xiii.
২৩. Haraprasad Shastri, “Dakshini Pandits at Benares”, p. 11.
২৪. Archibald Constable translated, ‘Travels in the Mogul Empire A.D. 1656-1668 by François Bernier’; Westminster: Archibald Constable and Company, 1891, p. 341.
২৫. Ibid, pp. 341-342, 335.
২৬. P.K. Gode, “Some evidence about the location of the MSS Library of Kavindracharya Sarasvati in Benares” in C. Kunhan Raja edited, ‘Jagadvijayacchandas of Kavindracharya’ Bikaner: Anup Sanskrit Library, 1945, pp. xlvii-lvii.
২৭. R. Ananta Krishna Sastrty edited, ‘Kavindracharya List’, p. ix.
২৮. P.K. Gode, “The Kavīndrācārya-Sûcī – is it Dependable Means for the Reconstruction of Literary Chronology” in S.M. Katre and P.K. Gode edited, ‘New Indian Antiquary, Vol. VI, 1943-44’; Bombay: Karnatak Publishing House, pp. 41-42; R. Ananta Krishna Sastrty edited, ‘Kavindracharya List’, pp. xii-xiii.
২৯. Bimal Kumar Datta, ‘Libraries and Librarianship of Ancient and Medieval India’; Delhi: Atma Ram & Sons, 1970, p. 86.
Amar kache notun gayan Bandar, akbar porle hebe na . lekha ta nile appoty nei to.
অশেষ ধন্যবাদ। লেখাটি অবশ্যই পড়া ও পড়ানোর জন্য নিতে পারেন।
অসাধারণ এবং নতুন তথ্য। এ ব্যাপারে আরও জানতে আগ্রহী করে তোলে। কিছুদিন আগে আমি টিপু সুলতানের ব্যক্তিগত গ্রন্থাগার বিষয়ে একটু পড়াশোনা করছিলাম। এ ধরনের যতগুলো ব্যক্তিগত গ্রন্থাগার সম্পর্কে জানা গেছে সেই সবগুলো সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে মধ্যযুগের শেষ থেকে আধুনিক যুগের প্রারম্ভ অবধি সময়ের বিদ্যাচর্চার একটা ছবি যদি তৈরি করা যায় তাহলে সেটা একটা বড় কাজ হবে।