সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

দিকপাল দেবতাদের কথা

দিকপাল দেবতাদের কথা

সৌভিক ভট্টাচার্য

অক্টোবর ১১, ২০২৫ ১৬৭ 5

প্রাক কথা

আলমপুরের নবব্রহ্মা মন্দিরগুচ্ছ ৭ম থেকে ৯ম শতাব্দীর মধ্যে নির্মিত নয়টি প্রাচীন বাদামি চালুক্য মন্দির৷ এই মন্দিরগুলি অন্ধ্রপ্রদেশের সীমান্তে তুঙ্গভদ্রা নদী এবং কৃষ্ণা নদীর মিলনস্থলের কাছে তেলঙ্গানার আলমপুরে অবস্থিত। তাদের অনুপম স্থাপত্যশৈলীর জন্য মন্দিরগুলি বিশিষ্ট বটে, তবে আরেকটি কারণে তারা ভারতীয় শিল্প-স্থাপত্যের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ। ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ এক দেবতা-গোষ্ঠী, নিত্যপূজায় যাদের উদ্দেশ্যে গন্ধপুষ্প নিবেদন অবশ্য-কর্তব্য বলে বিবেচিত হয়, সেই দিকপাল-দেবতাদের তাদের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী মন্দিরের নির্দিষ্ট অংশে রূপায়ণের প্রাচীনতম সংরক্ষিত উদাহরণগুলো এই মন্দিরগুলিতেই দেখা যায়।

বৈদিক সাহিত্য ও দিকপাল দেবতা

বৈদিক সাহিত্যেও দিকসমূহের অধিপতি হিসেবে দিকপাল বা লোকপাল দেবতাদের উল্লেখ পাওয়া যায়, তবে তখনও তাদের সংখ্যা, নাম এবং দিকসমূহ নির্দিষ্ট হয়নি। সাধারণপূর্ব দ্বিতীয় বা তৃতীয় শতকের গোভিল গৃহ্যসূত্রে গৃহনির্মাণ উপলক্ষে দশ দিকের অধিপতিদের উদ্দেশ্যে বলিদানের নির্দেশ পাওয়া যায়। তারা হলেন যথাক্রমে ইন্দ্র (পূর্ব), বায়ু (দক্ষিণ-পূর্ব), যম (দক্ষিণ), পিতৃগণ (দক্ষিণ-পশ্চিম), বরুণ (পশ্চিম), মহারাজ (উত্তর-পশ্চিম), সোম (উত্তর), মহেন্দ্র (উত্তর-পূর্ব), ব্রহ্মা (ঊর্ধ্ব) এবং বাসুকি (অধোদিক)।

আবার অথর্ববেদে শুধুমাত্র ছয়টি দিকের অধিপতিদের উল্লেখ পাওয়া যায়—চারটি প্রধান দিক এবং ঊর্ধ্ব ও অধোদিক। ইন্দ্র, বরুণ, সোম, অগ্নি, বৃহস্পতি এবং বিষ্ণু সেখানে যথাক্রমে পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ, ঊর্ধ্ব এবং অধোদিক—দিকসমূহের অধিপতি হিসেবে পরিগণিত হচ্ছেন। কৃষ্ণযজুর্বেদেও ছয়জন দিকপাল বা লোকপালের উল্লেখ পাওয়া যায়, শুধু বিষ্ণুর জায়গায় আসেন যম।

ইন্দ্র

তবে গোভিল গৃহ্যসূত্রে মহারাজ নামের দিকপালের উল্লেখ কৌতূহলজনক কারণ তৎকালীন বৌদ্ধ ধর্মশাস্ত্রেও চারদিকের অধিপতি হিসেবে চার মহারাজার কথা বর্ণিত হয়েছে যাঁরা হলেন যথাক্রমে গন্ধর্বরাজ ধার্তরাষ্ট্র (পূর্ব), কুম্ভাণ্ডরাজ বিরূঢ়ক (দক্ষিণ), নাগরাজ বিরূপাক্ষ (পশ্চিম) এবং যক্ষরাজ বৈশ্রবন বা কুবের (উত্তর)। লক্ষ্য করা যায় এই চার মহারাজাই হলেন তৎকালীন পূজিত চার প্রাচীন দেবসম্প্রদায়ের প্রধান দেবতাগণ।

অগ্নি

যম

রামায়ণ এবং মহাভারতে দিকপালরা

এরপর রামায়ণ এবং মহাভারতে প্রধানত চার দিকের অধিপতি হিসেবে দিকপালদের কথা এসেছে, যেখানে ইন্দ্র, যম, বরুণ, কুবের, অগ্নি এবং সোম এই দিকসমূহের অধিপতি হিসেবে বর্ণিত হয়েছেন৷ তবে সেখানেও বিভিন্ন রকম ক্রমানুসারে তাদের কল্পনা করা হয়েছে৷ যেমন মহাভারতে পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ এই চারদিকের অধিপতি যথাক্রমে অগ্নি, বরুণ, সোম এবং যম, আবার রামায়ণে সেখানে ইন্দ্র, বরুণ, কুবের এবং যম অর্থাৎ পরবর্তী যুগের প্রধান দিকপালদের চারজন তখনই নির্দিষ্ট হয়ে গেছেন।

মনুসংহিতা ও দিকপাল

মনুসংহিতা সাধারণ পূর্ব ২০০ অব্দ থেকে সাধারণাব্দ ২০০ অব্দের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে রচিত হয়েছিল। এখানে পাচ্ছি অষ্টদিকপালের কথা, অর্থাৎ সেই সময়ে আটজন দিকপালের সংখ্যা নির্দিষ্ট হয়ে গেছিল, তবে এই তালিকা থেকে চন্দ্র ও সূর্য পরবর্তীতে বাদ পড়েন এবং নৈঋতি ও ঈশান তাদের জায়গা দখল করেন।

সোমাগ্ন্যর্কানিলেন্দ্রাণাং বিত্তাপ্পত্যোর্যমস্য চ।

অষ্টানাং লোকপালানাং বপুর্ধারয়তে নৃপঃ॥

– মনুসংহিতা পঞ্চম অধ্যায় ৯৬ সংখ্যক শ্লোক

চন্দ্র, অগ্নি, সূর্য, বায়ু, ইন্দ্র, কুবের, বরুণ ও যম—এই আট লোকপালের দেহ রাজা ধারণ করেন।

নৈঋতি

পুরাণ শাস্ত্র

পুরাণ এবং শিল্পশাস্ত্রে শেষপর্যন্ত এই দিকপালদের বাহন ও আয়ুধ সমেত নির্দিষ্ট দিকসমূহের অধিপতি হিসেবে সুসংহত তালিকা প্রস্তুত হল, যেমন চারটি প্রধান দিক এবং চারটি গৌণ দিকের অধিপতি হিসেবে যথাক্রমে পূর্ব দিকে ইন্দ্র, পশ্চিমে বরুণ, উত্তরে কুবের ও দক্ষিণে যম এবং উত্তর-পূর্বে ঈশান, দক্ষিণ-পূর্বে অগ্নি, দক্ষিণ-পশ্চিমে নৈঋতি এবং উত্তর-পশ্চিমে বায়ুর অবস্থিতি নির্দিষ্ট হল। এর সঙ্গে ঊর্ধ্বে ব্রহ্মা ও নিচে অনন্ত বা কোনো তালিকায় বিষ্ণুর উল্লেখ থাকলেও প্রতিমা শিল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে সাধারণত অষ্টদিকপাল নামে আটজনকেই নির্দিষ্ট দিকে রূপায়িত করা হয়ে থাকে।

বরুণ

এদের প্রতিমা সাধারণত দ্বিভুজ রূপে উৎকীর্ণ হয়ে থাকে, তবে স্বতন্ত্র মূর্তি কখনো কখনো চতুর্ভুজ রূপেও দেখা যায়। সচরাচর তাদের এইভাবে দেখা যায়—

  • ইন্দ্র বজ্র ও অঙ্কুশ হাতে, বাহন ঐরাবতের সঙ্গে;
  • অগ্নি হাতে কুণ্ডিকা ও পিছনে অগ্নিশিখা সমেত, বাহন হিসেবে মেষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়;
  • বরুণ মকরের উপর দণ্ডায়মান, হাতে পাশ ও বরদামুদ্রা সহযোগে;
  • দণ্ড হাতে মহিষারূঢ় যম;
  • খড়গ ও খেতকধারী নৈঋতি নরবাহন সহযোগে;
  • দণ্ড ও পতাকাবাহী বায়ু মৃগবাহন সহযোগে;
  • কুবের হাতে টাকার থলি নিয়ে মেষের উপর বসা; এবং
  • সবশেষে বৃষবাহন ঈশান শূল ও কপাল বা সর্প হাতে দণ্ডায়মান।

আয়ুধ এবং রূপের ভিন্নতার উদাহরণও প্রচুর পাওয়া যায়, তবে মূলত এই বৈশিষ্ট্যগুলি দেখে এদের সনাক্ত করা যায়।

বিচ্ছিন্নভাবে দিকপালদের প্রতিমা শিল্পে রূপায়ণের ইতিহাস প্রাচীন। বৌদ্ধ স্তুপে কুবের, ইন্দ্র এবং ব্রহ্মা উৎকীর্ণ হয়েছেন বহু স্থানে, তবে সেখানে ব্রহ্মা ও ইন্দ্রের পরিচয় দিকপাল হিসাবে নয়।

পঞ্চম থেকে অষ্টম সাধারণাব্দ

কুষাণ আমলে (৩০ সাধারণাব্দ থেকে প্রায় ৩৭৫ সাধারণাব্দ পর্যন্ত) অগ্নি, কুবের, বায়ু বা ইন্দ্রের মূর্তি পাওয়া গেছে বেশ কিছু, তবে সেখানেও তারা স্বতন্ত্র দেবতা হিসাবে পূজিত, লোকপাল হিসাবে তাদের রূপায়ণ তখনও স্পষ্ট নয়।

প্রধানত গুপ্ত যুগের পর থেকেই পুরাণ ও শিল্পশাস্ত্রে তাঁদের সুসংহত প্রতিমালক্ষণ পাওয়া গেল—তখন থেকে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে তাদের গোষ্ঠীবদ্ধভাবে রূপায়ণের নিদর্শন পাওয়া যেতে লাগলো। অন্যতম প্রাচীন উদাহরণ পাওয়া যায় পশ্চিম ভারতের এলিফ্যান্টা এবং ইলোরার বিভিন্ন গুহায় বিখ্যাত শৈব ভাস্কর্যগুলোর পার্শ্বচর দেবতারূপে বা কৈলাস মন্দিরের বাইরের প্রাকারে উৎকীর্ণ দিকপাল দেবতাদের নানা রূপায়ণের মধ্যে।

এর পরপর ষষ্ঠ শতকের শুরুর দিকে দক্ষিণ ভারতের বাদামির বিভিন্ন গুহার সিলিংয়ে দিকপালদের উৎকীর্ণ করা শুরু হল এবং পরবর্তী দুই শতকের মধ্যে পূর্ব ভারতে উড়িষ্যার পরশুরামেশ্বর মন্দিরে, বিহারের মুণ্ডেশ্বরী মন্দিরে এবং অধুনা বাংলাদেশের পাহাড়পুর স্থাপত্যে দিকপালদের অনবদ্য কিছু ভাস্কর্যের দেখা পাওয়া গেল।

বায়ু।

কুবের

অষ্টম শতক থেকে সুসংহত দিকপাল—আলমপুরের মন্দিরগুচ্ছ

ভারতবর্ষের বিভিন্ন মন্দিরের বহির্গাত্রের দেবকোষ্ঠে নির্দিষ্ট দিকে সুসংহত ও গোষ্ঠীবদ্ধভাবে দিকপাল দেবতাদের রূপায়িত করা শুরু হয় আনুমানিক অষ্টম শতক থেকে।

তেলেঙ্গানা রাজ্যের আলমপুরে অবস্থিত নবব্রহ্মা মন্দিরগুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত স্বর্গব্রহ্মা মন্দির তাদের মধ্যে অন্যতম, এখানে মন্দিরের বহির্ভাগে দিকপাল দেবতাদের প্রাচীনতম বিদ্যমান মূর্তি সংরক্ষিত আছে। মন্দিরের বাইরের চারদিক এবং চারকোণে অবস্থিত আটটি গবাক্ষ সমেত চূড়া শোভিত মন্দিরের ক্ষুদ্র অনুকৃতি রূপের কুলুঙ্গির মধ্যে অবস্থান করছেন আটজন দিকপাল দেবতা। এছাড়া আরেকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল আটজন দিকপালের সঙ্গে এখানে অধিষ্ঠিত রয়েছেন দুই প্রাচীন বৈদিক দেবতা সূর্য এবং সোম বা চন্দ্র।

ঈশান

পূর্বমুখী মন্দির—তাই প্রবেশপথের বাম-দিকের কুলুঙ্গিতে অবস্থান করছেন পূর্ব দিকের দেবতা দেবরাজ ইন্দ্র, তাঁর বাহন ঐরাবত সহযোগে; ডান হাতে ধরা রয়েছে ক্ষুদ্রাকৃতির বজ্র এবং বাম হাতে অক্ষমালা। কটিবন্ধ শোভিত ইন্দ্রদেবের মাথায় রয়েছে রাজকীয় মুকুট এবং মাথার পিছনে রয়েছে বৃহৎ, সজ্জিত জ্যোতিচক্র। তারপর যথাক্রমে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে পিছনে অগ্নিশিখা সমেত অবস্থান করছেন অগ্নিদেব, বাঁ হাতে কমণ্ডলু এবং ডান হাতে অক্ষমালা নিয়ে; দক্ষিণ দিকে রয়েছেন মহিষারূঢ় যমরাজ, ডানহাতে দণ্ড এবং মাথায় মুকুট সমেত।

মন্দিরের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছেন হাতে তলোয়ার নিয়ে প্রেতরূপী নরবাহনা নৈঋতি; তার বিস্রস্ত কেশরাশি যেন হাওয়ায় উড়ছে। পশ্চিমে রয়েছেন জটামুকুট পরিহিত বরুণদেব, তার ডানহাতে রয়েছে পাশ এবং বাঁহাতে ধরা একটি শঙ্খ।

চন্দ্র

উত্তর-পশ্চিমে এক সরু পীঠিকার উপর অবস্থান করছেন বায়ু। তার এক হাতে হাওয়ায় ফুলে ওঠা বস্ত্র প্রান্তটি ধরা (বায্যায়াপূরিত বস্ত্র—বিষ্ণুধর্মোত্তরপুরাণ) এবং অপর হাতে ধরা বাতাসে আন্দোলিত পতাকা। সব মিলিয়ে ভাস্কর্যটি যেন পবনদেবের প্রবল গতিবেগে ধাবমান অবস্থানটি পরিস্ফুট করছে।

উত্তর দিকে যথারীতি ধনপতি কুবের বসে আছেন টাকার বস্তাজাতীয় কিছুর উপর যার একটা প্রান্ত তার হাতে ধরা, এবং আর এক হাতে ধরা গদা। কুবেরের পাশেই সমপদ-সমভঙ্গে অধিষ্ঠিত সোম বা চন্দ্রদেব, বাম হাতে কমণ্ডলু এবং ডানহাতে অক্ষমালা নিয়ে; তার মুখমণ্ডলে এক প্রশান্ত, অতীন্দ্রিয় অভিব্যক্তি লক্ষণীয়। মাথার পিছনে বৃহদাকার প্রভামণ্ডল, যার নিম্নাংশে খোদিত অর্ধচন্দ্র, এমনভাবে স্থাপিত যে অর্ধচন্দ্রটি সরাসরি চন্দ্রের মস্তকের পেছাতে অবস্থান করছে। রত্নখচিত উপবীত এবং গলায় মুক্তামালা চন্দ্রদেবের মুক্ত-শুভ্র জ্যোতির প্রতি ইঙ্গিত করে। বাম হাতে কাঁধ-সংলগ্ন যে পাত্রটি তিনি ধারণ করেছেন, তা তার ভঙ্গিমার পূর্ণ সাম্য রচনা করেছে।

উত্তর-পূর্বে রয়েছেন স্বয়ং জটাধারী চতুর্ভুজ ঈশ্বানদেব; ভাস্কর্যটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে ত্রিশূল ছাড়া আর কোনো আয়ুধ বোঝা যাচ্ছে না। তার পাশে রয়েছেন বৃহৎ প্রভামণ্ডল সমেত সমপদ-সমভঙ্গে অধিষ্ঠিত সূর্যদেব। তার বুক থেকে পা অবধি আবৃত উদীচ্যবেশ, দু’হাতে ধরা সনাল উৎপল, মাথায় মুকুট, কানে কুণ্ডল, গলায় একটি ব্রেস্টপ্লেট-জাতীয় লকেট সমেত সুসজ্জিত হার এবং বিয়ঙ্গ বা অব্যঙ্গ নামক কটিবন্ধ পরিহিত, পায়ে বুটজাতীয় জুতো, শিল্পশাস্ত্রে বর্ণিত সূর্যদেবের উদীচ্য প্রভাবিত রূপের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

স্বর্গব্রহ্মা মন্দিরে দিকপাল দেবতাগণের গোষ্ঠীর এই সুসংহত রূপ, যাদের সঙ্গে গঠনগতভাবে, কিন্তু অপরিহার্যভাবে ধারণাগতভাবে নয়, সূর্য ও চন্দ্রদেবকে যুক্ত করা হয়েছে, যারা সচরাচর দিকপালদের মধ্যে পরিগণিত হন না৷ সেই সমস্ত স্বতন্ত্র রূপে কল্পিত দেবতাদের এই দিকপালদের সঙ্গে রূপায়িত করায় এক বিস্ময়কর সামঞ্জস্যপূর্ণ শ্রেণীকে উপস্থাপন করা সম্ভবপর হয়েছে। তবে শুধু স্বর্গব্রহ্মা মন্দির নয়, আলমপুরের নবব্রহ্মা মন্দিরগুচ্ছের বাকি মন্দিরগুলোতেও একইরকম রূপায়ণ দেখা যায়, তবে তা স্বর্গব্রহ্মা মন্দিরটির মতো এরকম পূর্ণাঙ্গভাবে সংরক্ষিত হয়নি৷

তাই এই মন্দিরটি ভারতীয় স্থাপত্য ইতিহাসে এক অনন্য স্থান অধিকার করে আছে বলে আমার মনে হয়েছে।

সঙ্গের ছবিগুলোয় স্বর্গব্রহ্মা মন্দিরে দিকপালদের দেখা যাবে। দিকপাল দেবতাদের মূর্তিতত্ত্ব এবং ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলের স্থাপত্যে তাদের রূপায়ণ নিয়ে আরও বিশদভাবে জানার জন্য তথ্যসূত্রে উল্লেখিত বইগুলো পড়তে প্রস্তাব করব।

তথ্যসূত্র

  • Corinna Wessels-Mevissen, The Gods of the Directions in Ancient India: Origin and Early Development in Art and Literature. (Reimer, 2001).
  • J N Banerjee, The Development of Hindu Iconography. (University of Calcutta, 1941).
  • কল্যাণ কুমার দাশগুপ্ত, প্রতিমাশিল্পে হিন্দু দেবদেবী (পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি, ২০০১)
সৌভিক ভট্টাচার্য পেশায় প্রযুক্তিবিদ। আগ্রহের বিষয় ফিল্ম,সাহিত্য, সঙ্গীত, খেলা ও ইতিহাস। অধুনা প্রিয়তম চর্চার বিষয় প্রাচীন ভারতবর্ষের স্থাপত্য,ভাস্কর্য ও মূর্তিতত্ব।

মন্তব্য তালিকা - “দিকপাল দেবতাদের কথা”

  1. খুব সুন্দর লেখা। দিকপালদের মূর্তির সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ভুবনেশ্বরের লিঙ্গরাজ মন্দিরে। পুরীর মন্দিরে দিকপালদের মূর্তি কিছু ভাঙা আর কিছু আবার ঢাকা পড়ে আছে। ভাল বোঝা যায় না।

    এই মন্দির গুলো আমি দেখিনি। তবে দেখতে যাবার ইচ্ছা রইল।
    সঙ্গের ছবিগুলো উপরি পাওনা।
    ধন্যবাদ সুন্দর লেখাটির জন্য।

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।