সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

বিবিধ

এদের মধ্যে সত্যিই কি কোন আবশ্যিক সম্পর্ক আছে ? থাকলেও তা কি সুদূরপরাহত ? না কি নিছকই সমাপতন? একটু খতিয়ে দেখা যাক। “ইনফ্লুয়েঞ্জা” কথাটা প্রথম ব্যবহার হয়েছিল ইটালিতে; শব্দটার উৎপত্তি মধ্যযুগের ল্যাটিন ভাষার ইনফ্লুয়েন্সিয়া (influentia) কথাটা থেকে। অর্থ, ইনফ্লুয়েন্স বা প্রভাব। নক্ষত্রের। ইটালিতে, ~১৫৮০ সালে, যখন নাকি নক্ষত্রলোকের বিশেষ সহাবস্থানে জন্য মানুষ এই রোগের কবলে পড়েছিল। পরবর্তীতে, ১৭৪৩ সালে, রোম থেকে গোটা ইউরোপে যখন জ্বর আর শ্বাসকষ্টের অতিমারি দেখা দেয় এবং বহু লোক মারা যেতে থাকে, ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা” কথাটা তখন আবার ঘুরে-ফিরে আসে। সংক্ষেপে আমরা তাদের বলি “ফ্লু”।
‘না, না, না, ট্যাক্স না দিলে কোনও মতেই ছাড়া যাবে এগুলোকে’ ব’লে উঠেন হেডেন। হেডেন (পুরো নাম: Edward long Hedden ১৮২৮-১৮৯৩) তখন ন্যু ইয়র্ক জাহাজঘাটার ‘কন্ট্রোলার অব দ্য পোর্ট অব ন্যু ইয়র্ক' পদে কর্মরত ছিলেন। বন্দর দিয়ে আমদানিকৃত পণ্যর উপর ট্যাক্স সংগ্রহ করাই ছিল তাঁর কাজ। ‘আরে ট্যাক্স তো আনাজের উপর ধার্য করেছেন সরকার। ফলের উপর আবার কিসের ট্যাক্স?’ প্রশ্ন করেন আনাজ ও ফল ব্যবসায়ী জন নিক্স। ঝানু ব্যবসায়ী নিক্স যে কিছু খবর রাখেন না তা নয়। ন্যু ইয়র্ক শহরের জনসংখ্যা ক্রমবর্ধমান তখন। স্বাভাবিক ভাবেই জনসংখ্যার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে আনাজ ও ফলের চাহিদা। কিন্তু আনাজ বা ফলের সেই চাহিদার তুলনায় আনাজের জোগান কোথায়? শহরে আনাজ বা ফলের ঘাটতি দেখেই না ১৮৩৯ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন ‘জন নিক্স অ্যান্ড কো. ফ্রুট কমিশন’। বারমুডা, কিউবা, ফ্লোরিডা প্রভৃতি অঞ্চল থেকে জাহাজে করে আনাজ আর ফল আমদানি করে বেশ দু’পয়সা কামিয়েও ফেলেছেন ইতিমধ্যেই। ন্যু ইয়র্ক শহরে নিক্স অ্যান্ড কো.-এর ভালোই পসার তখন। শুধু নিক্সই নন, নিক্সের মতো আরও কয়েকজন ব্যবসায়ী সস্তায় আনাজ আমদানি করে ভালোই পসার জমিয়েছেন শহরে। আর এটা যে কেবল ন্যু ইয়র্ক শহরের চিত্র তা নয়। দেশের বিভিন্ন শহরে আনাজ আমদানির ব্যবসা করে লক্ষ্মী লাভ করেছেন বেশ কিছু ব্যবসায়ী। এই ব্যবসাদারদের দাপটে আবার প্রতিযোগিতায় এঁটে উঠতে পারছেন না দেশি চাষিরা। লাভ তো পরের কথা, দেশের মাটিতে আনাজ উৎপাদন করতে যা ব্যয় করতে হচ্ছে তাঁদের, সেই টাকাটাই ফেরত পাচ্ছেন না তাঁরা। দেশের মাটিতে আনাজ চাষ আর লাভজনক নয় দেখে আনাজ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন কিছু চাষি। কেউ কেউ পড়েছেন বিরাট লোকসানের মুখে। দেশি আনাজ বনাম বিদেশি আনাজের দ্বন্দ্ব তখন জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হতে শুরু করেছে। বিষয়টা নিয়ে সরগরম হতে শুরু করেছে রাজনীতির আঙিনা। সরকারও পড়েছেন চিন্তায়। দেশি চাষিদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হলে তার প্রভাব পড়বে ভোট ব্যাঙ্কে। আর ঝুঁকি নেননি সরকার। দেশি চাষিদের স্বার্থ রক্ষায় আনলেন নতুন আইন। ৩ মার্চ ১৮৮৩, ইউএস-এর প্রেসিডেন্ট (১৮৮১-১৮৮৫) চেস্টার আর্থার (পুরো নাম : Chester Alan Arthur ১৮২৯-১৮৮৬) সই করলেন নতুন আইন ‘ট্যারিফ অ্যাক্ট অব ১৮৮৩’তে। সেই আইন মোতাবেক, সমস্ত আমদানিকৃত আনাজের উপর বসল ১০% কর। তবে ছাড় দেওয়া হলো ফলের ক্ষেত্রে। ফল আমদানিতে নতুন কোনও ট্যাক্স চাপানো হলো না।