সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

ইতিহাস তথ্য ও তর্কর উপস্থাপনায়, প্রকাশিত হয়েছে ‘বঙ্গ ইতিহাস প্রবাহ’

সাম্প্রতিক লেখা

দার্জিলিং বা গ্যাংটকের চিনামাটির পাত্রের দোকানে গেলে ছবির এই পাত্রটি পেতে খুব একটা অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তবে এর নাম যদি জানতে চান তাহলে আপনাকে বলা হবে ‘মঙ্ক কটোরা’ বা ‘চায়না কাপ’। কিন্তু এগুলি আমাদের দেওয়া নাম, আসল চিনা নামটি হল গাইওয়ান। নাম শুনে যদি ভাবেন এর সঙ্গে তাইওয়ানের কোনও সম্পর্ক আছে, তবে তা একান্ত ভুল, কেবলই আনুপ্রাসিক সম্পর্ক। এটা চীনের মিং রাজবংশের আমলের চা সংক্রান্ত পাত্রের একটি এমন আবিষ্কার যা কিনা আজও ক্রেতার আকর্ষণের বিষয়বস্তু হয়ে আছে। এ কিন্তু কেবল চা খাওয়ার পাত্র নয়, এখানে সামান্য কয়েকটা পাতা ফেলে তাতে গরম জল ঢেলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা, তারপর তর্জনীকে ঢাকনার উপরে ও বৃদ্ধাঙ্গুলি আর মধ্যমাকে কাপের দুই প্রান্তে ধরে হালকা করে কেবল কাত করলেই চা পাতা থেকে শুষে নেওয়া খয়েরি বা সবুজ আভার গরম জল চুইয়ে পড়বে নীচের ছোটো বাটিতে আর তারপরেই… আহা!!
ইদানীং ফেসবুকে ঘুরতে ঘুরতে নানা তরজা চোখে পড়ে। তার মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় তরজার বিষয় হল বিরিয়ানি সত্যিই মোগলরা ভারতবর্ষে নিয়ে এসেছিল কি না! বিরিয়ানি নিয়ে বাঙালির আহ্লাদের অন্ত নেই। ক’বছর আগে পর্যন্ত কলকাতার বিরিয়ানিতে ইতিহাসের চর্চা বলতে ওয়াজিদ আলি শাহ পর্যন্তই ছিল। বরং কোন দোকানের বিরিয়ানি ভালো, সে ব্যাপারে বাঙালির উৎসাহ ছিল বেশি — সিরাজ, আমিনিয়া, আলিয়া, রয়্যাল, আরসালান ইত্যাদি। আইটি সূত্রে বাঙালি হায়দরাবাদে ঘনঘন যাওয়ায় প্যারাডাইসের হায়দরাবাদি বিরিয়ানিও আলোচনায় ঢুকে পড়ে। তবে পছন্দ যাই হোক না কেন, তাজমহল কিংবা ফতেপুর সিক্রির মতো বিরিয়ানিও যে মোগলাই অবদান, এ ব্যাপারে বাঙালি ছিল নিশ্চিন্ত। কিন্তু গোল বাধল বছর কয়েক আগে। দেশ জুড়ে মোগলদের বিরুদ্ধে প্রবল ‘আন্দোলন’ (বকলমে কুৎসা) শুরু হওয়ায় বিরিয়ানিকেও পরিচয়পত্র জোগাড়ে নামতে হল। তবে ভাগ্য ভালো, বিরিয়ানি মোগলাই খাবারের তালিকায় আছে বলে তাকে দেশছাড়া করার হুমকি দেওয়া হয়নি। বরং তাকে খাঁটি ভারতীয় খাবার বলে প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস শুরু হল।