সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

সম্পাদকীয়

এপ্রিল ২, ২০২১

নির্বাচন ও নির্বাচনোত্তর বাংলায় ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে ইতিহাস আড্ডা’-র ভূমিকা

বঙ্গ জীবন এই মুহূর্তে নির্বাচনকেন্দ্রিক। খবরের কাগজে নির্বাচন ছাড়া আর কোন কথা নেই। তবে একদিন এই নির্বাচনও শেষ হবে। যেমন করে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে এসেছে ও গেছে একের পরে এক নির্বাচন। থেকে যাবে আমার ভারতবর্ষ। তার মানুষ। সেই মানুষের ইতিহাসচর্চা থেমে যাবে না। সেই মানুষ কেমনভাবে দেখবেন ইতিহাসকে? আর এখানেই ‘ইতিহাস আড্ডা’ তার সামান্য ক্ষমতা নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। কারণ সামাজিক নীতি নির্ধারণে ইতিহাসের ভূমিকা থাকে। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়েই বিভিন্ন দল তাদের নীতি নির্ধারণ করেন।

তবে ইতিহাস তো শুধু ঘটনার বিবরণ নয়, সেই ঘটনাকে কীভাবে বিশ্লেষণ করা হবে সেটাও অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

একসময় ইতিহাস ছিল জো হুকুম বান্দা, ক্ষমতার কথায় সে উঠত বসত। দেশ জয় করত রাজা, রাজকবি তারই বন্দনাকে ইতিহাস বলে লিখে ইনাম কুড়াত। এখনও তা একেবারে নেই এমন নয়। তবে মানুষ নিজের ইতিহাস নিজে লেখার চেষ্টা চালাচ্ছে, কোথাও কম কোথাও বেশি সফল হচ্ছে।

আজকের ইতিহাস রচনার দায়, সে যেন এক পক্ষের লাউড স্পিকার না হয়ে ওঠে। ইতিহাস লেখায় তাই সমকালীন রাষ্ট্রশক্তির ভূমিকাকে যেমন গুরুত্ব দিতে হবে, তেমনই আবার বিজিত ও প্রান্তিক শক্তি, সাধারণ মানুষের কথাও তুলে ধরতে হবে। দেখা দরকার ঘটনার ক্রমবিন্যাস যেন যতটা সম্ভব তথ্যনিষ্ঠ হয়, বিশ্লেষণ যেন বৈজ্ঞানিক যুক্তিপ্রদ হয়, সিদ্ধান্ত গ্রহণে যেন ক্ষমতাসীনের পক্ষপাত প্রকাশ না পায়। ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে এই নৈর্ব্যক্তিক, তথ্যসমৃদ্ধ প্রক্রিয়া অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। আজকে যে ইতিহাস লেখা হচ্ছে সেখানেও শক্তিধরের সন্তোষ উদ্রেকের বাসনার প্রয়াসের বিরুদ্ধে আমরা থাকব। শক্তি কম, ক্ষুদ্র আমরা, তবু প্রয়াসে যেন কোন ঘাটতি না থাকে।

“কত রাজা আসে যায়, ইতিহাসে ঈর্ষা আর দ্বেষ

আকাশ বিষাক্ত করে

জল কালো করে, বাতাস ধোঁয়ায় কুয়াশায়

ক্রমে অন্ধকার হয়।”

রাজা আসবে, রাজা যাবে। ইতিহাস থাকবে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেবার জন্য।

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।