সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

দক্ষিণ এশিয়ায় ধানের আবির্ভাব

দক্ষিণ এশিয়ায় ধানের আবির্ভাব

সুমিত রায়

আগস্ট ১১, ২০২০ ১৫৭৪ 5

একসময় মনে করা হত একটি উৎস থেকেই ধান বর্তমানের সব ডোমেস্টিকেটেড বা পূর্ণচাষযোগ্য ধানের বিবর্তন ঘটেছে। কিন্তু সেই ধারণা আজ পরিত্যক্ত। বর্তমানে প্রাপ্ত ধানগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতি থেকে বিবর্তিত হয়ে আজকের ধানে পরিণত হয়েছে। এই আলোচনায় যাবার আগে ধান অর্থাৎ Oryza sativa-এর দু’টো প্রধান সাবস্পিসিজ Oryza sativa subsp. japonica আর Oryza sativa subsp. Indica-এর সম্পর্কে জানতে হবে। এই দু’টির ডোমেস্টিকেশন পিরিয়ড আলাদা। প্রথমটি অর্থাৎ জ্যাপোনিকা ডোমেস্টিকেটেড বা পূর্ণচাষযোগ্য হয়েছিল চীনে, আর Civáň et al., 2015; Londo et al., 2006 গবেষণা অনুসারে দ্বিতীয়টি, অর্থাৎ ইন্ডিকার উদ্ভব হয়েছিল ভারতবর্ষে অথবা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া – দুই অঞ্চলের কোনও একটিতে। তবে Castillo et al., 2015 এর প্রাচীন ডিএনএ ও গ্রেইন মরফোমেট্রিক্স নিয়ে গবেষণাটি বলছে ভারতবর্ষেই ইন্ডিকা ধানের উদ্ভব হবার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। কেননা এই গবেষণাটিতে দেখানো হয়, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ইন্ডিকা ধানের অস্তিত্ব ছিল আজ থেকে ১৫০০ বছর পূর্বেরও পরবর্তীতে। (এখানে ডোমেস্টিকেটেড এর পরিভাষা হিসেবে লিখেছি পূর্ণচাষযোগ্য বা পূর্ণাঙ্গ চাষযোগ্য, যেখানে কাল্টিভেবল দ্বারা কেবল চাষযোগ্য বোঝায়। এর কারণ কোন কিছু কাল্টিভেবল বা চাষযোগ্য হলেই তাকে ডোমেস্টিকেটেড ধরা হয়না। কাল্টিভেবল হবার পরও তা বুনো থেকে যেতে পারে। একেবারে পূর্ণাঙ্গ কৃষির বিকাশের সাথে সম্পর্ক রয়েছে পূর্ণচাষযোগ্যতার। কাল্টিভেবল বা চাষযোগ্য শস্যে কিছু ডোমেস্টিকেশন মিউটেশন এলেই তাকে পূর্ণাঙ্গ চাষযোগ্য বা ডোমেস্টিকেটেড বলা যায়, যার ফলে পুর্ণাঙ্গভাবে কৃষির বিকাশ ঘটে। এই মিউটেশনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মিউটেশন হল নন-শ্যাটারিং জিনের মিউটেশন। এটা নিয়ে এই লেখাতেই আলোচনা করব।)

Civáň et al., 2015; Yang et al., 2012 গবেষণায় দেখা যায়, ইন্ডিকা ও জ্যাপোনিকা ধানের মধ্যকার ডাইভারজেন্স বা বিচ্যুতি অনেক পূর্বের ও গভীর। Kawakami et al., 2007 গবেষণাটি বলেছিল, ইন্ডিকা ধান হল বুনো ধান Oryza nivaraএর উত্তরসুরী, আর জ্যাপোনিকা ধান হল বুনো ধান Oryza rufipogonএর উত্তরসুরী। কিন্তু এই দুই ধান আলাদা আলাদা কুলের হলেও তাদের মধ্যে মিশ্রণ ঘটেছে, হাইব্রিডাইজেশন বা সংকরায়ন ঘটেছে। এই মিশ্রণ হয়েছে এদের ডোমেস্টিকেশন বা পূর্ণচাষযোগ্য হবার সময়ও, আবার ডোমেস্টিকেশন হয়ে যাবার পরেও, কেননা গবেষণায় দেখা গেছে ইন্ডিকা ও জ্যাপোনিকা দুই ধানের মধ্যেই একই রকম ডোমেস্টিকেশন মিউটেশন ও পোস্ট-ডোমেস্টিকেশন মিউটেশন পাওয়া গেছে। Kovach et al., 2007; Sang and Ge, 2007 গবেষণা বলল, এই অনুরূপ মিউটেশনগুলো নির্দেশ করছে, ডোমেস্টিকেটেড সাবস্পিসিজ ইন্ডিকা ধানের উদ্ভবের জন্য জ্যাপোনিকা ধানের সাথে প্রাচীন সংকরায়ন বা এনশিয়েন্ট হাইব্রিডাইজেশনের প্রয়োজন ছিল। এইসব তথ্যের ভিত্তিতে Castillo et al., 2015; Fuller, 2011a, 2011b; Fuller et al., 2010 গবেষণাগুলো একটি হাইপোথিসিজ দাঁড় করালো, এগুলোতে বলা হল, ইন্ডিকা ধানের আদিম পূর্বপুরুষ বা প্রোটো-অ্যান্সেস্টর, মানে ঠিক যেখান থেকে ইন্ডিকা সাবস্পিসিজটি এসেছে আরকি, সেটি এসেছিল Oryza nivara-নামক বুনো ধান থেকে। আর সেই প্রোটো-অ্যান্সেস্টর বা আদিম পূর্বপুরুষ ধান ভারতবর্ষেই তৈরি হত। এটা ছিল ডোমেস্টিকেশন বা চাষেরও পূর্বের অবস্থা। এদিকে চীন থেকে যারা ভারতবর্ষে অভিপ্রায়িত বা মাইগ্রেটেড হয়েছিল তারা নিজেদের সাথে জ্যাপোনিক ধান নিয়ে আসে।এরপর এর সাথে সেই প্রোটো-ইন্ডিকা পূর্বপুরুষ ধানের সাথে জ্যাপনিক ধানের ব্যাক ক্রসিং ঘটে।

ব্যাক ক্রসিং কাকে বলে তা একটু বোঝা দরকার। ধরুন, ক আর খ এর মধ্যে ক্রসিং করার ফলে একটা হাইব্রিড কখ তৈরি হল। এখন এই হাইব্রিড কখ এর সাথে ক অথবা খ এর সাথে বা ক জাতি বা খ জাতির কারও সাথে নতুন করে হাইব্রিডাইজেশন করা হলে তাকে ব্যাক-ক্রসিং বলা হয়। যেটার সাথে ব্যাক ক্রসিং করা হবে তার বৈশিষ্ট্য বেশি আসবে সেই হাইব্রিডের মধ্যে। এক্ষেত্রে জ্যাপোনিকার সাথে প্রোটো-ইন্ডিকার ক্রসিং এর ফলে যা তৈরি হয় তার সাথে আবার সেই প্রোটো-ইন্ডিকারই হাইব্রিডাইজেশন হয়। এই হাইব্রিডাইজেশনের ফলে প্রোটো-ইন্ডিকায় বাইরে থেকে যে বেশ কিছু জেনেটিক বৈশিষ্ট্য চলে এল, তার ফলে পূর্ণাঙ্গ চাষযোগ্য বা ফুলি ডোমেস্টিকেটেড ইন্ডিকা ধানের উদ্ভব হল। cf. Fuller, 2011b গবেষণা বলছে, এক্ষেত্রে জ্যাপোনিকা ধান থেকে আসা যে জিনটি বিশেষভাবে ভূমিকা রেখেছিল তা হচ্ছে নন-শ্যাটারিং জিন sh4.

এই নন-শ্যাটারিং এর ব্যাপারটাও বুঝতে হবে। শ্যাটারিং মানে হল চূর্ণ-বিচূর্ণ হওয়া। ধান পাকার পর এটা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে, এটাই শ্যাটারিং। কিন্তু ধান যদি পাকার সাথে সাথে তার উপরিত্বক ভেঙ্গে চাল বাইরে চলে যায় তাহলে সেই ধান সংগ্রহ করা, তারপর খাওয়া মুশকিল। তাই ধান পূর্ণচাষযোগ্য বা ডোমেস্টিকেটেড করার অন্যতম শর্তই ছিল এর শ্যাটারিং অবস্থা কমে যাওয়া, আর তুলনামূলকভাবে নন শ্যাটারিং অবস্থা লাভ করা। এই মিউটেশন কেবল ধান না, অন্যান্য শস্যের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। জ্যাপোনিকা ধানের sh4 জিনটি ছিল এই নন-শ্যাটারিং জিন। ইন্ডিকাতে সেই জিন চলে আসায়, এই ধান পাকার পরও থেকে যেত, এর ফলে ধান গাছ কেটে এনে মাড়াই করে সেখান থেকে চাল বের করা সম্ভব হয়। এই জিনটা ইন্ডিকাতে আসার ফলেই মানুষ সেই ধান মাড়াই করে চাল বের করে খেতে শুরু করে, ডোমেস্টিকেট বা চাষ করাও ব্যাপকভাবে শুরু করে। ভাত হয়ে ওঠে উপমহাদেশের লোকেদের অন্যতম প্রধান খাদ্য।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে কখন, কোথায় এবং কীভাবে এই ট্রান্সফর্মেশন বা হাইব্রিডাইজেশনটা ঘটেছে। Fuller, 2011a, 2011b গবেষণা বলছে, এই উত্তরটা পাওয়া যাবে কোন অঞ্চলে নন-শ্যাটারিং টাইপের ধানগুলোর অস্তিত্ব ছিল, প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে তার সনাক্তকরণ এবং তার মাধ্যমে চীনের জ্যাপোনিকা চাল পশ্চিমের কোন পথ দিয়ে ভারতবর্ষে প্রবেশ করেছে তা নির্ণয় করা হলে। Fuller et al., 2010; Silva et al., 2015 গবেষণা প্রস্তাব করল, প্রাথমিকভাবে প্রোটো-ইন্ডিকা ধানের প্রাথমিক চাষ গঙ্গা থেকে উচ্চ সিন্ধু অঞ্চলে পৌঁছায় খ্রিস্টপূর্ব ৩য় সহস্রাব্দে। Fuller, 2011a, 2011b গবেষণা অনুসারে, মহাগরে (Mahagara) বিভিন্ন স্পাইকলেট ফর্ক জাতীয় শস্যের ডোমেস্টিকেটেড ধরণটি পাওয়া যায় তা নির্দেশ করে খ্রিস্টপূর্ব ২য় সহস্রাব্দের সময় একটি সংকরায়ন ঘটনা বা হাইব্রিডাইজেশন ইভেন্ট সংঘটিত হয়, যা চাইনিজ হরাইজন বা চৈনিক দিগন্তের আবির্ভাবের সমসাময়িক।

এই চাইনিজ হরাইজন সম্পর্কে বিস্তারিত লেখার অবকাশ এই লেখাটিতে নেই। তবুও কিছু কথা বলা প্রয়োজন। খ্রিস্টপূর্ব ২য় সহস্রাব্দের প্রথম দিকে উত্তর ভারত ও পাকিস্তানে বেশ কিছু প্রত্নস্থল বা আর্কিওলজিকাল সাইটের আবির্ভাব হয়, এগুলোতে এমন কিছু সাধারণ উপাদান দেখা যায়, যার কারণে Fuller and Boivin, 2009 গবেষণায় এগুলোকে চাইনিজ হরাইজন নামে সংজ্ঞায়িত করা হয়। এইসব উপাদানের মধ্যে ছিল বিভিন্ন আর্টিফ্যাক্ট বা হস্তনির্মিত বস্তু, ছিল চাষাবাদের ফলে তৈরি উদ্ভিব যাদের কাল্টিজেন বলা হয়, কাল্টিজেনগুলোর মধ্যে ছিল পিচ (Amygdalus persica), এপ্রিকট (Armeniaca vulgaris), হেম্প (Cannabis sativa), ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম প্রাপ্ত চৈনিক জনার (millets), সম্ভাব্য চাইনিজ ধান (Oryza sativa subsp. japonica) (যা নিয়ে এতক্ষণ ধরে আলোচনা চলছে)। এই ফলাফলগুলো দেখে Boivin et al., 2012; Fuller, 2006, 2011b; Fuller and Boivin, 2009; Fuller and Madella, 2001; Frachetti, 2012; Hunt and Jones, 2008; Hunt et al., ২০০৮এর মত গবেষণায় অনুকল্প দাঁড় করানো হয় যে, এই সময়টাতে একই সাথে চীনে উদ্ভূত শস্যগুলো উত্তর-পশ্চিম ভারত ও পাকিস্তানের প্রত্নস্থলগুলোতে পাওয়ার যাবার কারণ হল মধ্য এশিয়া বরাবর আদিম বাণিজ্য জালক (ট্রেড নেটওয়ার্ক) এবং সামাজিক আদানপ্রদানের কারণেই এই শস্যগুলো (ও এদের ব্যবহার) উত্তর-পশ্চিম ভারত ও পাকিস্তানে পৌঁছে যায়। বলে রাখা ভাল, অনেক গবেষক এই পথকে সাধারণ পদে “ইউরেশীয় স্তেপ” বলেছেন, যেখানে Spengler, 2015 গবেষণা নির্দিষ্ট করে বলে দিয়েছেন যে, এই পথ চীন ও মধ্য এশিয়াকে সংযোগ করে ও পথটি যায় দক্ষিণাঞ্চলীয় উপত্যকা ও পার্বত্য অঞ্চলের পাদদেশ দিয়ে।

যাই হোক, Spengler, 2015 গবেষণা বলছে, এই উত্তরাঞ্চলীয় পথ ধরে বছরের কিছু সময়ের জন্য সেখানকার কৃষি-চারণজীবীদের (Agro-Pastoralist) হাত দিয়ে চাষ হওয়া এই ডোমেস্টিকেটেড স্পাইকলেট ফর্ক ধরণের শস্যগুলোর মধ্যে জনার (millets), গম (wheat), বার্লি (barley) ও মটর (pea) থাকলেও, তারা ধান চাষ করত না। তবে উল্লেখ করা যেতে পারে, Nesbitt et al., 2010 গবেষণা অনুসারে, এই উত্তরের পথের দাউয়ান অঞ্চলে (আফগানিস্তানের ফারগানা উপত্যকা) খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতকে চীনের হান কোর্টের চাইনিজ কর্মকর্তা ঝ্যাং কিয়ান রিপোর্ট করেছিলেন যে সেখানে ধান চাষ হচ্ছে (তবে সময়টা খেয়াল করুন, ততদিনে অনেক দিন পার হয়ে গেছে)। ধান এমনই একটি শস্য যার জন্য সেচ-প্রণালী দরকার, আফগানিস্তানে সেই সময় এর চাষ হচ্ছিল তা ধারণা করা শক্ত, অবশ্য সেই ধান জ্যাপোনিকা ছিল নাকি ইন্ডিকা ছিল তা জানা যায়না। Gupta, 2010 গবেষণাটি বলছে, ধানের বীজের ভায়াবিলিটি বা টেকশইতা পিচ ও এপ্রিকটের চেয়ে বেশি, কিন্তু জার্মিনেশন বা অঙ্কুরোদগম কম হলে ৮ বছর পর এর টেকশইতা দ্রুত কমে যায়। তাহলে আবারও Fuller, 2011a, 2011b; Fuller et al., 2011b গবেষণাগুলোর প্রশ্ন ফিরে আসছে। কোন রকম চাষ না হয়েও কি খ্রিস্টপূর্ব ৩য় সহস্রাব্দের শেষাংশ ও ২য় সহস্রাব্দের সময়মধ্য এশিয়ার কিছু অংশে পরিবাহিত হতে পারে, আর তারপর দক্ষিণ এশিয়ায়?

Deng et al., 2015; Fuller et al., 2014 গবেষণা অনুসারে, চীনে ডোমেস্টিকেটেড ধানের উদ্ভব হয় ইয়াংশি নদীর মধ্য ও উচ্চ অঞ্চলে, এর চাষ শুরু হয় খ্রিস্টপূর্ব ৭ম সহস্রাব্দে, আর পূর্ণাঙ্গভাবে এটি চাষযোগ্য, মানে ডোমেস্টিকেটেড হয় আনুমানিক চার হাজার খ্রিস্টপূর্বাব্দে। Fuller et al., 2010; Zhao, 2011 অনুসারে, এর কিছু সময় পরেই নর্দার্ন ইয়াংশাও সংস্কৃতিসমূহ (Northern Yangshao Cultures, কিছু আর্কিওলজিকাল কালচার বা প্রত্নতাত্ত্বিক সংস্কৃতি, আর্কিওলজিকাল কালচার হল সভ্যতার পূর্বপুরুষ) ধান চাষ শুরু করে। ভারতীয় উপমহাদেশে ধান চাষের প্রথম দিককার সাক্ষ্যগুলো বিতর্কিত। Tewari et al., 2008 গবেষণায় লাহুরাদেওয়াতে খ্রিস্টপূর্ব ৬০০০ অব্দেরও পূর্বে ধান চাষের যে সাক্ষ্য প্রস্তাব করা হয়েছে তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, Fuller, 2011a, 2011b; Fuller et al., 2010 গবেষণাগুলো অনুসারে, সেই ধানগুলো পূর্ণচাষযোগ্য বা ডোমেস্টিকেড ছিল না, বরং বুনো ছিল। Costantini, 1987; Saraswat and Pokharia, 2003 গবেষণা অনুসারে, ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম ধান দেখা যায় (কোন অবস্থায় ছিল তা জানা যায়না) ধানচাষ এর প্রথম গ্রামটি দেখা যায় গাঙ্গেয় সমভূমিতে, যা ছিল আনু. খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ অব্দের, সেই সাথে গবেষণাগুলোতে পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও সোয়াটেও সমসাময়িক ধানচাষের সাক্ষ্য দেয়া হয়। Fuller, 2006; Fuller et al., 2011b; Harvey et al., 2005 গবেষণা অনুসারে, একস্থানিক বসতিময় জীবন বা সেডেন্টিজম সহ পূর্ণচাষযোগ্য বা ডোমেস্টিকেটেড ধান সমগ্র গাঙ্গেয় সমভূমিতে বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে গিয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ১৭০০ থেকে ১৫০০ অব্দে। Fuller et al., 2011b; Silva et al., 2015 গবেষণা অনুসারে, এই ধান উত্তর ভারতে পৌঁছে খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ অব্দের পর, আর দক্ষিণ ভারত ও শ্রীলঙ্কায় পৌঁছে খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দে।

দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়ায় ধানের স্পাইকলেট বেস এর রেকর্ড খুবই কম, যা দিয়ে জ্যাপোনিকা ধানের নন-শ্যাটারিং জিন কখন দক্ষিণ এশিয়ার ধানে প্রবেশ করে তা নির্ণয় করা যাবে। কেবল মাত্র গত কয়েক বছরে পদ্ধতিগতভাবে এই স্পাইকলেট বেসগুলোকে উদ্ধার করা হয়েছে, কারণ ঐতিহ্যগতভাবে ভারতে এই উপাদানগুলোকে উদ্ধার করার জন্য ফ্লোটেশন পদ্ধতির জন্য বড় সিভ সাইজের (০.৫ থেকে ০.৭ মি.মি.) যন্ত্র ব্যবহার করা হত, এগুলোতে এই গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় ধানের স্পাইকলেট বেসগুলো ধরা পড়ে না, ফলে ০.৫ মি.মি. এর চেয়ে ছোট ছোট উপাদানগুলো আলাদা করাহত না। যাই হোক, এখন স্পষ্ট করে ধানের স্পাইকলেট বেসগুলোকে পৃথক পৃথকভাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে আশার আলো দেখার সম্ভাবনা রয়েছে। যাই হোক, Fuller, 2011a গবেষণা অনুসারে, গাঙ্গেয় সমভূমিতে এ পর্যন্ত পাওয়া সর্বপ্রথম ধানের নন-শ্যাটারিং স্পাইকলেট (যার সাথে ডোমেস্টিকেটেড বা পূর্ণচাষযোগ্য ধানের সম্পর্ক) এর সময়কাল নির্ধারণ করা হয়েছে খ্রিস্টপূর্ব ১৮৫০ থেকে ১৫০০ অব্দের মধ্যবর্তী, এটি পাওয়া গেছে উত্তর ভারতের উত্তর প্রদেশের মহাগড় প্রত্নস্থলে। Fuller, 2011b গবেষণা অনুসারে, এখানকার শস্যদানাগুলো জ্যাপোনিকা ধান নয়, এবং অধিক পরিমাণে পূর্বের Oryza nivaraবা প্রোটো-ইন্ডিকা ধানের মতই। এর অর্থ এই যে, সেই ধানগুলো আসলে জ্যাপোনিকা আর প্রোটো-ইন্ডিকা ধানের ক্রস, অর্থাৎ ইন্ডিকা-টাইপ হাইব্রিড, আর বোঝা যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ায় খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ অব্দের পূর্বেই এই টাইপটার উদ্ভব ঘটে গিয়েছিল।

কোন পথ দিয়ে এই ধান দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবেশ করে এই প্রশ্নের উত্তরে Fuller et al., 2011b গবেষণায় তো সাধারণভাবে সেই উত্তরের পথের কথাই অনুকল্প হিসেবে দাঁড় করায়, যেটার কথা চাইনিজ হরাইজনের আলোচনায় বলছিলাম আরকি (যদিও সেক্ষেত্রে ধানের এভিডেন্স পাওয়া যায়না)। তবে Huang et al., 2012; Vaughan et al., 2008 প্রভৃতি গবেষণাগুলো একটি বিকল্প অনুকল্প প্রদান করে। সেটা হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ায় ধানের পুর্ণচাষযোগ্য সাবস্পিসিজ জ্যাপোনিকা প্রবেশ করে দক্ষিণ চীন থেকে উত্তরপূর্ব ভারত হয়ে, এবং এই পথের বন্য মানবগোষ্ঠীরাই এই ধানকে ভারতবর্ষে নিয়ে আসে, এবং ধানের ভারতায়ন (ইন্ডিয়ানাইজেশন) ঘটায়। এই অনুকল্পটি আবার ভারতবর্ষে মানব অভিপ্রায়ণের আরেকটি অনুকল্পের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। Bellwood, 1996; Higham, 2003, 2004 প্রভৃতি গবেষণায় উদ্ধৃত সেই অনুকল্পটির নাম হল “অস্ট্রিক ফার্মিং ডিসপারসালস হাইপোথিসিজ”। অনুকল্পটি অনুসারে অস্ট্রিকভাষী কৃষিজীবী জনগোষ্ঠী দক্ষিণ-পশ্চিম চীন বা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে মিয়ানমারের মধ্যে দিয়ে, আসাম হয়ে, হিমালয়ের দক্ষিণাঞ্চলীয় পর্বতের পাদদেশ ধরে ডেমিক-ডিফিউশনের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবেশ করে। ডেমিক ডিফিউশন হল মাইগ্রেশন বা মানব অভিপ্রায়ণের একটি মডেল। ট্রান্স-কালচারাল ডিফিউশন অনুসারে যেমন একটি সংস্কৃতির মানুষ, আরেকটি সংস্কৃতির অঞ্চলে প্রবেশ করে সেই অঞ্চলের মানুষগুলোকে হয় সরিয়ে দেয়, নাহয় তাদের সাথে মিশ্রিত হয়, ডেমিক ডিফিউশন ঠিক সেরকম নয়। ডেমিক ডিফিউশনের ক্ষেত্রে মানুষ অভিপ্রায়ণের মাধ্যমে সেই স্থানে প্রবেশ করে যেখানে আগে থেকে কেউই বাস করত না। তারাই প্রথম প্রবেশ করে। যাই হোক, এই দুটো অনুকল্প একসাথে মেলালে যেটা পাওয়া যায় তা হল, দক্ষিণ পশ্চিম-চীন বা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে অস্ট্রিকভাষী জনগোষ্ঠী মিয়ানমার, আসাম ও হিমালয়ের পাদদেশ হয়ে ভারতবর্ষে ডেমিক ডিফিউশনের মাধ্যমে প্রবেশ করে ও আসার সময় জ্যাপোনিকা ধান নিয়ে আসে, যা তদকালীন ভারতবর্ষের প্রোটো-ইন্ডিকা ধানের সাথে হাইব্রাইজেশনের মাধ্যমে খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ অব্দের পূর্বেই গাঙ্গেয় সমভূমিতে দক্ষিণ এশিয়ার পুর্ণচাষযোগ্য ধান ইন্ডিকার উদ্ভব ঘটায়।

আসামের কিছু প্রত্নস্থলে উত্তর-পূর্ব ভারত ও চীনের মধ্যকার নব্য-প্রস্তরযুগীয় যোগাযোগের সাক্ষ্য পাওয়া গেছে। এই অনুকল্পটি সেই সব সাক্ষ্য দ্বারা সমর্থিত হয়। Dikshit and Hazarika, 2012 গবেষণা অনুসারে, আসামের এই প্রত্নস্থলগুলোতে কর্ডেড অয়ার মৃৎপাত্র, গ্রাইন্ডস্টোন, পাথরের কুঠার, শোল্ডার্ড স্টোনের নিড়ানি পাওয়া গেছে (যেগুলো নব্যপ্রস্তরযুগীয় স্টোন টুলস)। আর তাই এই প্রত্নস্থলগুলোতে ভারতও চীন উভয়েরই সাংস্কৃতিক উপাদান বিদ্যমান। সেখানে সম্ভাব্য স্পষ্ট বৈশিষ্ট্যপূর্ণ চৈনিক শৈলীর ট্রাইপড লেগ পটারি পাওয়া গেছে। তবে আসামের এই প্রত্নস্থলগুলোর কালনির্ণয় C14 dating এর মাধ্যমে শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত নয়, যে কাল নির্ণয় করা হয়েছে তা অনুসারে এই প্রত্নস্থলের সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব ৩য় সহস্রাব্দের শেষাংশ থেকে ২য় সহস্রাব্দের শেষাংশ পর্যন্ত। সেই সাথে, এই প্রত্নস্থলগুলোতে ভারতবর্ষের আরও পশ্চিমের, অর্থাৎ গাঙ্গেয় উপত্যকার কেন্দ্রস্থল, নব্যপ্রস্তরযুগীয় ধান-ভিত্তিক গ্রাম্যসমাজের সাংস্কৃতিক সাদৃশ্যের নির্দেশনা নেই।

এই প্রস্তাবিত দক্ষিণাঞ্চলীয় পথের (আসাম হয়ে আসা পথটিকে দক্ষিণাঞ্চলীয়, আর চাইনিজ হরাইজনের পথটিকে উত্তরাঞ্চলীয় ধরা হয়) একটি সমস্যা হচ্ছে, যদি জ্যাপোনিকা ধান মিয়ানমার, আসাম ও বাংলার প্রধান ধান-চাষের অঞ্চল হয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবেশ করে থাকে, তাহলে জ্যাপোনিক ধানের সাথে দক্ষিণ এশিয়ার বুনো ধানের মধ্যে বর্ধিষ্ণু জিনগত মিশ্রণ, প্রবাহ দেখা যাওয়ার কথা ছিল। এখন যেমন ইন্ডিকা ও জ্যাপোনিকা ধানের মধ্যে একরকম গভীর বিচ্যুতি পাওয়া যায়, তেমনটা না হয়ে একরকম ক্লাইন দেখা যেত, যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বাঞ্চলের ধানের মধ্যে অধিকতর জ্যাপোনিকা জিন, পশ্চিমাঞ্চলে অধিকতর ইন্ডিকা জিন, এমনটা পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটা হয়নি।Civáň et al., 2015; Schwatz et al., 2014; Travis et al., 2015 গবেষণা অনুসারে, দক্ষিণ এশিয়ার এই পূর্বাঞ্চলগুলোতে, অর্থাৎ বাংলা ও আসামে, যা আউশ ধানচাষের কেন্দ্র বলে পরিচিত, সেখানকার প্রধান ধান, আউশ ইন্ডিকা ও জ্যাপোনিকা উভয়ের থেকেই আলাদা, ইন্ডিকা ও জ্যাপোনিকায় যে ডোমেস্টিকেশন সম্পর্কিতঅ্যালিলগুলো দেখা যায় সেগুলো আউশ ধানের সাথে পুরোপুরি মেলে না। তাই আউশ ধান হচ্ছে ডোমেস্টিকেটেড বা পূর্ণচাষযোগ্য ৩য় ধরণের ধান। তাছাড়া Travis et al., 2015 গবেষণা অনুসারে, আসাম ও বাংলায় খুব কমই জ্যাপোনিকা ভ্যারাইটির ধান পাওয়া যায়। তুলনায়, Zeng et al., 2007 গবেষণা অনুসারে, চীনের ইউনানে আউশ বা বোরো ভ্যারাইটির ধান ৩% এরও কম, যেখানে জ্যাপোনিকা ভ্যারাইটি ৭৫% এরও বেশি। তাই, Stevens et al., 2016 গবেষণা অনুসারে, দক্ষিণ এশিয়ায় ডোমেস্টিকেটেড বা পূর্ণচাষযোগ্য ধানের আগমন যদি দক্ষিণাঞ্চলীয় পথ দিয়ে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে ঘটতে হয় তবে এটিকে আসার সময় উচ্চভূমি বা হাইয়ার এলিভেশনের স্থানে সীমাবদ্ধ থেকেই প্রবেশ করতে হবে, আর দক্ষিণ এশিয়ার নিম্নভূমির বিভিন্নরকম বুনো ধান ও আউশের মত ধানের জাতের সাথে সংস্পর্শ এড়িয়েই আসতে হবে, যেটি ঘটার সম্ভাবনা কম।

আউশ ধানের এই সমস্যাটির সমাধান দিয়েছে Choi et al. 2017 গবেষণা। এটি দেখিয়েছে, জ্যাপোনিকা কেবল প্রোটো-ইন্ডিকার সাথে ক্রস করে ইন্ডিকা ধানই তৈরি করেনি, একই সাথে এটি প্রোটো-আউশের সাথে ক্রস করে আউশ ধানেরও উদ্ভব ঘটায়। গবেষণাটিতে দেখা যায়, ইন্ডিকাতে জ্যাপোনিকার জিন প্রবাহ ঘটেছে প্রায় ১৭%, আর আউশে ঘটেছে প্রায় ১৫%। তার মানে Stevens et al., 2016 গবেষণা যেমন বলছিল, জ্যাপোনিকা ধানকে দক্ষিণ-পশ্চিম চীন বা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে আসাম হয়ে দক্ষিণ এশিয়ায়প্রবেশ করতে হলে নিম্নভূমির আউশ ধানের সাথে সংস্পর্শ এড়িয়ে আসতে হবে (যার সম্ভাবনা খুব কম), তা আসলে সত্য নয়, আউশে জ্যাপোনিকার জিনফ্লো ঘটেছে। Rahman et al. 2020 গবেষণায়, বাংলাদেশের দুটি প্রত্নস্থল – খ্রিস্টপূর্ব ৪০০ থেকে ১০০ অব্দের উয়ারি বটেশ্বর ও খ্রিস্টীয় ৭ম শতকের রঘুরামপুর বিক্রমপুর থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন শস্য নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে। উয়ারি বটেশ্বরে যে ধানের স্পাইকলেট বেসগুলো পাওয়া গেছে তা নিয়ে গবেষণা করে দেখা গেছে এখানকার বেশিরভাগ ধান ছিল খুব সম্ভবত জ্যাপোনিকা, আর ইন্ডিকা ধান বলতে গেলে পাওয়াই যায়নি। এই গবেষণাটিও পূর্ব দিক থেকে ধানের আগমনকে নির্দেশ করছে। এই দুটি গবেষণার ফলে দক্ষিণ-পশ্চিম চীন বা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় ডোমেস্টিকেটেড বা পূর্ণচাষযোগ্য ধান আগমনের অনুকল্পটিও আরও শক্তিশালী হয়েছে।

তথ্যসূত্র:

1. Civáň P, Graig H, Cox CJ, et al. (2015) Three geographically separate domestications of Asian rice. Nature Plants 1: 15164.
2. Londo JP, Chiang Y, Hung K, et al. (2006) Phylogeography of Asian wild rice, Oryza rufipogon, reveals multiple independent domestications of cultivated rice, Oryza sativa. Proceedings of the National Academy of Sciences of the United States of America 103: 9578–9583.
3. Castillo C, Tanaka K, Sato YI, et al. (2015) Archaeogenetic study of prehistoric rice remains from Thailand and India: Evidence of early japonica in South and Southeast Asia. Archaeological and Anthropological Sciences. Epub ahead of print 10 May DOI: 10.1007/s12520-015-0236-5.
4. Yang C-C, Kawahara Y, Mizuno H, et al. (2012) Independent domestication of Asian rice followed by gene flow from japonica to indica. Molecular Biology and Evolution 29(5): 1471–1479.
5. Kawakami S, Ebana K, Nishikawa T, et al. (2007) Genetic variation in the chloroplast genomes suggest multiple domestication of cultivated Asian rice (Oryza sativa L.). Genome 50: 180–187.
6. Kovach MJ, Sweeney MT, McCouch SR. (2007) New insights into the history of rice domestication. Trends in Genetics 23: 578–587.
7. Sang T, Ge S. (2007) The puzzle of rice domestication. Journal of Integrative Plant Biology 49(6): 760–768.
8. Fuller DQ. (2011a) Finding plant domestication in the Indian Subcontinent. Current Anthropology 52(S4): S347–S362.
9. Fuller DQ. (2011b) Pathways to Asian civilizations: Tracing the origins and spread of rice and rice cultures. Rice 4(3–4): 78–92.
10. Fuller DQ, Sato Y-I, Castillo C, et al. (2010) Consilience of genetics and archaeobotany in the entangled history of rice Archaeological and Anthropological Sciences 2(2): 115–131.
11. Silva F, Stevens C, Weisskopf A, et al. (2015) Modelling the origin of rice farming in Asia using the Rice Archaeological Database. PloS ONE. Epub ahead of print 1 September. DOI: 0.1371/journal.pone.0137024.
12. Spengler RN. (2015) Agriculture in the Central Asian Bronze Age. Journal of World Prehistory 28: 215–253.
13. Nesbitt M, Simpson SJ, Svanberg I. (2010) History of rice in Western and Central Asia. In: Sharma SD. (ed.) Rice: Origin, Antiquity and History. Enfield, CT: NH Science Publishers, pp. 312–344.
14. Gupta A. (2010) Storage technologies to enhance longevity in paddy (Oryza sativa L.) seed of parental lines IR58025A and IR58025B of Hybrid PRH-10. East African Journal of Sciences 4(2): 106–113.
15. Fuller DQ, van Etten J, Manning K, et al. (2011b) The contribution of rice agriculture and livestock pastoralism to prehistoric methane levels: An archaeological assessment. The Holocene 21(5): 743–759.
16. Fuller DQ, Denham T, Arroyo-Kalin M, et al. (2014) Convergent evolution and parallelism in plant domestication revealed by an expanding archaeological record. Proceedings of the National Academy of Sciences of the Unite States of America 111(17): 6147–6152.
17. Fuller DQ. (2011b) Pathways to Asian civilizations: Tracing the origins and spread of rice and rice cultures. Rice 4(3–4): 78–92.
18. Stevens CJ, Fuller DQ. (in press) The spread of agriculture in Eastern Asia: Archaeological bases for hypothetical farmer/language dispersals. Language Dynamics and Change.
19. Zhao Z. (2011) New archaeobotanical data for the study of the origins of agriculture in China. Current Anthropology 52(S4): S295–S306.
20. Deng Z, Qin L, Gao Y, et al. (2015) From early domesticated rice of the Middle Yangtze Basin to Millet, rice and wheat agriculture: Archaeobotanical macro-remains from Baligang, Nanyang Basin, Central China (6700–500 BC). PLoS ONE. Epub ahead of print 13 October. DOI: 0.1371/journal.pone.0139885.
21. Costantini L. (1987) Appendix B. Vegetal remains. In: Stacul G. (ed.) Prehistoric and Protohistoric Swat, Pakistan. Rome: Instituto Italiano per il Medio ed Estremo Orientale, pp. 155–165.
22. Saraswat KS, Pokharia AK. (2003) Palaeoethnobotanical investigations at Early Harappan Kunal. Pragdhara 12: 105–140.
23. Fuller DQ. (2006) Agricultural origins and frontiers in South Asia: A working synthesis. Journal of World Prehistory 20: 1–86.
24. Harvey EL, Fuller DQ, Pal JN, et al. (2005) Early agriculture of Neolithic Vindhyas (North-Central India). In: Franke-Vogt U, Weisshaar J. (eds) South Asian Archaeology 2003 (Proceedings of the European Association for South Asian Archaeology Conference, Bonn: 7th–11th July 2003) Aachen: Linden Soft, pp. 329–334.
25. Tewari R, Srivastava RK, Saraswat KS, et al. (2008) Early farming at Lahuradewa. Pragdhara 18: 347–373.
26. Huang X, Kurata N, Wei X, et al. (2012) A map of rice genome variation reveals the origin of cultivated rice. Nature 490: 497–501.
27. Vaughan DA, Lu B, Tomooka N. (2008) Was Asian rice (Oryza sativa) domesticated more than once? Rice 1: 16–24.
28. Bellwood P. (1996) The origins and spread of agriculture in the Indo-Pacific region. In: Harris D. (ed.) The Origins and Spread of Agriculture and Pastoralism in Eurasia. London: University College Press, pp. 465–498.
29. Higham CFW. (2003) Languages and farming dispersals: Austroasiatic languages and rice cultivation. In: Renfrew C, Bellwood P. (eds) Examining the Farming/Language Dispersal Hypothesis. Cambridge: McDonald Institute for Archaeological Research, pp. 223–232.
30. Dikshit KN, Hazarika M. (2012) The Neolithic cultures of Northeast India and adjoining regions: A comparative study. Journal of Indian Ocean Archaeology 7/8: 98–148.
31. Higham CFW. (2004) Mainland Southeast Asia from the Neolithic to the Iron age. In: Glover I, Bellwood P. (eds) Southeast Asia: From Prehistory to History. Abingdon: Routledge Curzon, pp. 41–67.
32. Schwatz MC, Maron LG, Stein JC, et al. (2014) Whole genome de novo assemblies of three divergent strains of rice, Oryza sativa, document novel gene space of aus and indica. Genome Biology 15: 506.
33. Travis AJ, Norton GJ, Datta S, et al. (2015) Assessing the genetic diversity of rice originating from Bangladesh, Assam and West Bengal. Rice 8: 35.
34. Zeng Y, Zhang H, Li Z, et al. (2007) Evaluation of genetic diversity of rice landraces (Oryza sativa L.) in Yunnan, China. Breeding Science 57(2): 91–99.
35. Stevens CJ, Murphy C, Roberts R, Lucas L, Silva F, Fuller DQ. Between China and South Asia: a Middle Asian corridor of crop dispersal and agricultural innovation in the Bronze Age. The Holocene. 2016;26(10):1541–1555. doi: 10.1177/0959683616650268.
36. Choi JY, Platts AE, Fuller DQ, Wing RA, Purugganan MD. The rice paradox: multiple origins but single domestication in Asian rice. Mol BiolEvol. 2017;34(4):969–979.
37. Rahman M, Castillo C, Murphy C, Rahman SM, and Fuller DQ. Agricultural systems in Bangladesh: the first archaeobotanical results from Early Historic Wari-Bateshwar and Early Medieval Vikrampura. ArchaeolAnthropol Sci. 2020; 12(1): 37. doi: 10.1007/s12520-019-00991-5

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগ থেকে স্নাতক। বর্তমানে ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে গবেষণায় কর্মরত। নিবাস ঢাকা, বাংলাদেশ। ইতিহাস, নৃতত্ত্ব, পুরাতত্ত্ব, জিনতত্ত্ব, ভাষাতত্ত্বে আগ্রহী।

মন্তব্য তালিকা - “দক্ষিণ এশিয়ায় ধানের আবির্ভাব”

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।