সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

লেখক: সুদীপ্ত পাল

সুদীপ্ত পাল
সুদীপ্ত একজন পরিসংখ্যানবিদ, প্রাবন্ধিক ও ঔপন্যাসিক। ইতিহাস ও যৌন সংখ্যালঘু মানুষদের বিষয়ে লেখেন। কর্পোরেটে প্রান্তিক লিঙ্গপরিচয়ের মানুষদের জন্য সাপোর্ট গ্ৰুপ ও কর্মসংস্থান তৈরির কাজে দীর্ঘদিন নেতৃত্ব দিয়েছেন।

সুদীপ্ত কলকাতার ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিকাল ইন্স্টিটিউটের ছাত্র ছিলেন। শিল্পক্ষেত্রে ডাটা সাইন্স এবং বিহেভিওরাল ইকোনমিকস নিয়ে কাজ করেন।
'পেশিটা' হল সিরিয়াক বাইবেল। মূলগতভাবে আরামাইক ভাষায় লেখা। পৃথিবীর অধিকাংশ খ্রিষ্টানই গ্ৰীক বাইবেলের অনুবাদ পাঠ করে, কিন্তু খ্রিষ্টধর্মের যে শাখাগুলো সিরিয়া বা আসিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত তারা পেশিটা বা সিরিয়াক বাইবেলের অনুবাদ পাঠ করে। এই শাখাগুলির বেশিরভাগই কেরলে আর মধ্যপ্রাচ্যে। এই শাখাগুলি হল কেরলের সিরো-মালাবার ক্যাথলিক, জেকোবাইট সিরিয়ান অর্থোডক্স, মলঙ্কর অর্থোডক্স, মার থোমা ইত্যাদি, আর মধ্যপ্রাচ্যের সিরিয়ান অর্থোডক্স আর আসিরিয়ান চার্চ অফ ইস্ট। পেশিটা গ্ৰীক বাইবেলের থেকে কিছুটা আলাদা। এটি যীশুর মাতৃভাষা আরামাইকে লেখা। কারো কারো মতে এটি গ্ৰীক বাইবেলের থেকে কিছুটা পুরোনো- যদিও সেটা নিয়ে সংশয় আছে- গ্ৰীক বাইবেলকেই সবচেয়ে পুরোনো বাইবেল বলে ধরা হয়।
সুলতানি যুগের সূচনার ফলে ভারতের বাস্তুশিল্পে অনেক প্রযুক্তিগত পরিবর্তন হয়। ভারতে বড় আকারের সেতু নির্মাণ শুরু হয়। তার আগে ম্যাসনরি ব্রিজের উদাহরণ ভারতে খুব বেশি টিকে নেই। ম্যাসনরি ব্রিজ মানে ইট, পাথর দিয়ে গাঁথুনি দিয়ে তৈরি সেতু। একেবারে টিকে নেই তা নয়, একটা রয়েছে - আর সেখান থেকে অনুমান করা যায় এরকম সেতু একাধিক ছিল, কিন্তু হিন্দু শিল্পে সেতু নির্মাণ যেহেতু প্রকৃত খিলান বা ট্রু আর্চ (true arch) ব্যবহার করে হত না তাই তাদের স্থায়িত্ব প্রকৃত খিলানের সেতুর তুলনায় কম হত - তাই খুব বেশি টিকে নেই। ভারতবর্ষে সুলতানি যুগের আগে ট্রু আর্চের প্রযুক্তি ছিল না। প্রাচীন ও আদিমধ্য যুগের হিন্দু মন্দিরে যে আর্চ জাতীয় তোরণ বা প্রবেশদ্বার আমরা দেখি সেগুলো প্রকৃত খিলান বা ট্রু আর্চ নয়। সেগুলো কর্বেল আর্চ (corbel arch)। কর্বেল আর্চের ইটগুলো আনুভূমিক হয়, ট্রু আর্চের ইটগুলো অর্ধচন্দ্রাকারে সাজানো - এমনভাবে যাতে ইটগুলি থেকে সরলরেখা টানলে তারা একটি বিন্দুতে এসে মিলিত হয়।
প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যে গ্রীক সাহিত্যের মত সমপ্রেম বা সমকামের প্রচুর উদাহরণ পাওয়া যায় না। রামায়ণ এবং মহাভারত থেকে অল্প কিছু উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে হয়তো। সুলতানি যুগে ভারতীয় সাহিত্যে কিছু বিবর্তন দেখা যায় এবং বেশ কিছু সাহিত্যে সমপ্রেম বা সমকামের উদাহরণও দেখতে পাওয়া যায়। সুলতানি যুগের শুরু হয় ১১৯২ সালে মহম্মদ ঘোরির দিল্লীজয়ের পর থেকে। মহম্মদ ঘোরির মৃত্যুর পর পাঁচটি রাজবংশ দিল্লীতে রাজত্ব করে- মামলুক বা ‘দাস’বংশ (১২০৬-১২৯০), খলজি (১২৯০-১৩২০), তুঘলক (১৩২০-১৪১৪), সৈয়দ (১৪১৪-১৪৫১) ও লোদি (১৪৫১-১৫২৬)। আমাদের আলোচনার শুরু রাজরাজড়াদের দিয়ে নয়, ভারতবর্ষের অন্যতম সেরা কবিদের একজন- আমীর খুসরোকে নিয়ে।