সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

পুরনো লেখা

১৬১৩ সাল..., শান্ত শরৎ বাতাস বইছে আরব সাগরময়। এমনই এক দিনে সুরাটের পর্তুগিজ বণিকরা, পশ্চিম উপকূল আর লোহিত সাগরের মধ্যে নিত্য যাতায়াত করা, 'রহিমি' নামের সুবিশাল জাহাজটিকে আটক করলেন। জাহাজে ভরা 'নীল' রঞ্জকের ভাণ্ডারের লোভে বহুদিন ধরে তক্কে তক্কে থাকলেও, হিন্দুস্তানের জাহাঁপনার মায়ের জাহাজের পথ আটকানো ছিল এক প্রবল স্পর্ধার বিষয়। হ্যাঁ, 'রহিমি' নামের ১৫৩ ফুট লম্বা-৪২ ফুট চওড়া আর হাজার টন ওজনের মহাজাহাজটি ছিল বাদশাহ আকবরের অন্যতমা স্ত্রী তথা সম্রাট জাহাঙ্গীরের মা, মরিয়ম-উস-জামানির নিজস্ব জাহাজ। এই জাহাজটি সহ আরও অনেকগুলি জাহাজের মাধ্যমে মরিয়ম পশ্চিমে নীলের ব্যবসা আর মক্কাগামী হজযাত্রীদের আনা-নেওয়ার ব্যাপক লাভজনক ব্যবসা চালাতেন দীর্ঘদিন ধরে।
১০৫৪ সাধারণ অব্দে তিব্বতের লাসার কাছে প্রায় ৭৩ বছর বয়সে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান বা অতীশ মারা যান। তিনি ছিলেন ভারত তথা বিশ্বের সেকালের অন্যতম প্রধান পণ্ডিত। পূর্ব এশিয়ায়, বিশেষ করে ভারত ও তিব্বতে বৌদ্ধমতের চর্চায় তাঁর প্রভাব অতুলনীয়। দেশে নানাজনের কাছে ও নানা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা সমাপ্ত করার পর তিনি গিয়েছিলেন সুমাত্রায়, সেখানকার বিখ্যাত পণ্ডিত ধর্মকীর্তির কাছে বৌদ্ধ দর্শন অধ্যয়নের জন্য। ভারতে ফিরে এসে অতীশ তখনকার কয়েকটি প্রধান প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। এগুলির মধ্যে ছিল বিক্রমশীল, ওদন্তপুরী, সোমপুরী, নালন্দা প্রভৃতি। এরপর তিব্বতের রাজা ও জনগণের আমন্ত্রণে সে দেশে বৌদ্ধধর্ম ও বৌদ্ধশিক্ষার সংস্কার ও বিস্তারের লক্ষ্যে তিনি কঠিন পথ পরিক্রমা করে তিব্বতে যান। একদিকে শিক্ষক, অন্যদিকে লেখক ও সংগঠক হিসেবে অতীশ অসামান্য অবদান রাখেন। নিজের এবং অন্যান্যদের লেখা নানা বৌদ্ধ গ্রন্থের তিব্বতী অনুবাদেও তাঁর বিরাট ভূমিকা ছিল।
পতঞ্জলির মহাভাষ্য থেকে শুরু করে চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙের পরিব্রাজনবৃত্তান্ত, মহাভারত থেকে শুরু করে বাংলার অন্নদামঙ্গলের বিদ্যাসুন্দর উপাখ্যান অবধি বহু সাহিত্যে তামিলনাড়ুর একটি সমৃদ্ধ জনপদের কথা জানতে পারা যায়। তার নাম কাঞ্চীপুরম। ১০০০-১৩০০ বছর পুরোনো এতগুলি ফ্রি-স্ট্যান্ডিং স্থাপত্য এরকম অক্ষত অবস্থায় এত বছর ধরে টিকে থাকার উদাহরণ পৃথিবীতে কমই আছে। সেই বিচারে কাঞ্চীপুরম রোম আর খাজুরাহের সঙ্গে তুলনীয়। ভারতের সবচেয়ে পুরোনো ফ্রি-স্ট্যান্ডিং স্থাপত্যগুলির মধ্যে পড়ে গুপ্ত ও চালুক্যদের বিভিন্ন মন্দির, আর তারপরেই পল্লব স্থাপত্য। পল্লব স্থাপত্য দেখার দুটো সেরা জায়গা হল মহাবলীপুরম (সপ্তম শতক) আর কাঞ্চীপুরম (অষ্টম শতক)। কাঞ্চীপুরমে আছে চোল আর বিজয়নগর যুগের মন্দিরও।